চট্টগ্রামের ‘মিনি বাংলাদেশ’
ঢাকার জাতীয় স্মৃতিসৌধ, চাঁপাই নবাবগঞ্জের ছোট সোনা মসজিদ, দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির, পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার আর সঙ্গে ঘূর্ণি রেস্তোরাঁ- এই সবকিছুর দেখা মেলে চট্টগ্রামের ‘মিনি বাংলাদেশ’-এ৷ আর কী আছে?
সংসদে অধিবেশন বসে না
চট্টগ্রামের ‘মিনি বাংলাদেশ’-এর ঠিক মাঝখানে আছে এই জাতীয় সংসদ ভবন, যেখানে অধিবেশন বসে না৷ ২০০৬ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে ‘শহীদ জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স’ নামে শুরু হওয়া এই বিনোদন কেন্দ্রের বর্তমান নাম ‘স্বাধীনতা কমপ্লেক্স’৷ তবে মিনি বাংলাদেশ নামেই এটি বেশি পরিচিত৷
সপরিবারে
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে ১২ সদস্যের এক পরিবার এসেছেন মিনি বাংলাদেশে৷ বিনোদন কেন্দ্রটি সপ্তাহের সাতদিন খোলা থাকে৷ প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য জনপ্রতি ১০০ টাকা এবং ৪-১২ বছরের বাচ্চাদের জন্য ৮০ টাকা৷
পরিচর্যার অভাব
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে জন্মানো আগাছা এবং শেওলা দেখিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার একজন কর্মচারী বলেন, বিগত এক দশক ধরে বিনোদনকেন্দ্রটি অবহেলায় ধুঁকছে৷ রাইডগুলোর বেহাল দশা৷ ফোয়ারাগুলো অধিকাংশই নষ্ট৷
আদালত আছে, নেই আসামি কিংবা বিচারক
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট ভবনের আদলে তৈরি করা হয়েছে ক্ষুদ্রাকৃতির এ ভবনটি৷ কিন্তু ভেতরে পাওয়া গেল না কোনো কাঠগড়া, আইনজীবী, বিচারক কিংবা আসামি৷
স্বাধীনতা টাওয়ার
স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ স্বাধীনতা টাওয়ার৷ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতে এ টাওয়ারের উচ্চতাও ৭১ মিটার করা হয়েছে৷ এতে প্রবেশের মূল্য ৭০ টাকা৷
প্যাডেল বোট
মিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করতেই সংসদ ভবনের পিছনে চোখে পড়বে একটি ছোট লেক৷ দর্শনার্থীদের জন্য এই লেকে রয়েছে একাধিক নৌকা, যা পা দিয়ে চালাতে হয়৷ এতে চড়তে জনপ্রতি খরচ পড়বে ৫০ টাকা৷
মসজিদে নামাজ হয়
পঞ্চদশ শতকে নির্মিত ১৫ গম্বুজ বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছোট সোনা মসজিদের আদলে গড়া স্থাপনাটিতে নিয়মিত আজান এবং নামাজ আদায় হয়৷ দর্শনার্থীদের অনেকেই এই মসজিদে নামাজে শরিক হন৷
দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানো
চট্টগ্রামের বাসিন্দা মিফতাহ আহমেদ জানান, দেশের উত্তরাঞ্চলের শেষের দিকের জেলা দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দিরের নাম অনেক শুনেছেন কিন্তু চোখে দেখা হয়নি৷ পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দা হয়ে এত দূরে কখনো যাওয়া হয় কিনা, তাই আপাতত এখানেই তিনি কান্তজীর মন্দির দেখতে এসেছেন৷
মোট ১৪টি স্থাপনা
মিনি বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার জানান, এখানে স্মৃতিসৌধ, লালবাগ কেল্লা, কার্জন হল, আহসান মঞ্জিল, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, সেইন্ট নিকোলাস চার্চসহ মোট ১৪টি ক্ষুদ্রাকৃতির স্থাপনা রয়েছে৷ এগুলো প্রত্যেকটি বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বহন করে৷
ছোটদের বিনোদন
বিনোদন কেন্দ্রটিতে ঘুরতে আসা শিশুদের জন্য রয়েছে কিডস কর্নার ও বিভিন্ন রাইডের ব্যবস্থা৷ এসব রাইডের টিকিটের মূল্য ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে৷
ঘূর্ণি রেস্তোরাঁ
২৩০ ফুট উচ্চতার স্বাধীনতা টাওয়ারে রয়েছে একটি রিভল্ভিং রেস্টুরেন্ট বা ঘূর্ণি রেস্তোরাঁ৷ এটি দর্শনার্থীদের অন্যতম আগ্রহের জায়গা৷ তবে অনেকেই অভিযোগ করেন যে, এখানে খাবারের মানের তুলনায় দাম অত্যন্ত বেশি৷
একনজরে পুরো শহর
মিনি বাংলাদেশ ঘোরা শেষ, এবার চট্টগ্রাম শহরটাকে দেখার পালা৷ ২৩ তলা ভবনের সমান উচ্চতায় উঠলে শহরের অনেক অংশই চোখে পড়ে৷ তাই এখানে ঘুরতে আসা অনেকেই সুযোগটা হাত ছাড়া করতে চান না৷