চকবাজার ট্র্যাজেডি
বুধবার রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা মসজিদের পাশের কয়েকটি ভবনে আগুন লেগে অন্তত ৮১ জন প্রাণ হারিয়েছেন৷ উদ্ধার অভিযান আপাতত শেষ হয়েছে৷ ছবিতে তারই কিছু দৃশ্য...
মৃতের সংখ্যা অন্তত ৮১
চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের পর উদ্ধারকাজ আপাতত শেষ ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস৷ এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা অন্তত ৮১ বলে জানিয়েছে উদ্ধারকর্মীরা৷ এরমধ্যে ৪ শিশু, ৫ নারী রয়েছে৷
রাসায়নিক দ্রব্যের গোডাউন!
চুড়িহাট্টা মসজিদের আশেপাশের এইসব বাড়িতে রাসায়নিক দ্রব্যের গোডাউন ছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা৷ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ নিশ্চিত করেছেন, এই রাসায়নিক পদার্থের কারণেই আগুনের এত ভয়াবহতা৷ তিনি বলেন, ভবনগুলো যেন ‘সেলফ মেইড এক্সপ্লোসিভ’৷
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭ ইউনিট
আগুন নেভাতে সারারাত ধরে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট৷ জেলখানার পুকুর থেকে পানি নিয়ে বড় বড় হোস পাইপের মাধ্যমে আগুন নেভানোর কাজ করে এই ইউনিটগুলো৷ তবে সরু গলি ও অপরিকল্পিত বাড়িঘরের কারণে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টার বেশি৷
দুটি হেলিকপ্টার
প্রথমবারের মতো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যবহার করা হয়েছে বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার৷ বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এয়ার কমোডর মো. জাহিদ হোসেন জানান, বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়৷ তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে রাত ৩টা ৪৮ মিনিটে পানি নিয়ে হেলিকপ্টার দুটি ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেয়৷ এরপর আকাশ থেকে পানি ছিটায়৷
পুড়ে ছাই ঘরবাড়ি
রাস্তায় বিস্ফোরিত গাড়ি থেকে রাজমহল হোটেলে আগুন ছড়ায়৷ হোটেল থেকে পাশের ভবন ওয়াহিদ মঞ্জিলে আগুন লাগে৷ এই ভবনের নীচে মার্কেট ও ওপরে রাসায়নিক দ্রব্যের গোডাউন ছিল৷ পরে ওয়াহিদ মঞ্জিল সংলগ্ন জামাল কমিউনিটি সেন্টার ও রাস্তার উলটো পাশে থাকা দুটি ভবনের চার ও পাঁচ তলায় আগুন ধরে যায়৷
ধসে পড়ে আরিফ ম্যানশন
আগুন লাগার কয়েকঘণ্টা পড়েই ধসে পড়েছে আরিফ ম্যানশন নামে একটি ভবন৷ ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে-কোনো সময় ধসে পড়তে পারে ওয়াহিদ মঞ্জিল নামের সাততলা সেই ভবনটি, যেটিতে সবার প্রথমে আগুন লাগে৷ এটিতেই রাসায়নিক দ্রব্যের মজুদ ছিল৷
দন্ত চিকিৎসাকেন্দ্রে আগুন
আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে গেছে ওয়াহিদ মঞ্জিলের উলটো পাশের আল মদিনা মেডিকেল হল ও ডেন্টাল নামে একটি চিকিৎসাকেন্দ্র৷ এতে মালিক কাওসার, দুই দাঁতের চিকিৎসক ইমতিয়াজ ইমরোজ, আশরাফুল ও চিকিৎসা নিতে আসা তিন জন সহ ছয় জন মারা গেছেন৷ নিহতদের দুজনের পরিচয় জানা যায়নি৷
শাটার বন্ধে মৃত্যু!
আগুন লাগা ভবনটির নীচতলার মার্কেটের করিডরের শেষ মাথা থেকে একসঙ্গে ২৪টি লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা৷ ধারণা করা হচ্ছে সবাই একসঙ্গে এখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ওয়াহিদ মঞ্জিলের নীচতলায় রানা টেলিকম, বিপরীতে হাবিব টেইলার্স, হায়দার ফার্মেসিসহ আশেপাশের সব দোকান সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শাটার বন্ধ করে দেয়৷ এতে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে৷
এফএ/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, বাংলা ট্রিবিউন)