ঘরে ফেরার আনন্দ ও বেদনা
ইরাকের মোসুল শহর আইএসমুক্ত হবার পর অনেক মানুষ আবার ভিটেমাটিতে ফিরে যাচ্ছেন৷ সেই অনুভূতি মিশ্র আবেগে ভরা৷ এমনই এক পরিবারের সঙ্গে সেখানে যান আলোকচিত্রী খালিদ আল মুসলি৷
দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি
প্রবল সংঘর্ষের পর ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে মোসুল শহরকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট-এর কবল থেকে মুক্ত করা হয়৷ শহরের অনেক অংশই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও ধীরে ধীরে অনেক বিতাড়িত মানুষ ফিরতে শুরু করেছে৷ যেমন, মহম্মদ সালেহ ও তাঁর পরিবার৷
বিদায়ের বেদনা, ঘরে ফেরার আনন্দ
৩১ বছর বয়সি সালেহ আহমদ (বামে) মোসুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবার সময় অতীত জীবন ফিরে পাবার আনন্দে বিভোর ছিলেন৷ অন্যদিকে শরণার্থী শিবিরে অনেক নতুন বন্ধুদের ফেলে আসার বেদনাও তাঁকে পীড়া দিচ্ছিল৷ কঠিন সময় সত্ত্বেও এই সব সম্পর্কই এতকাল তাঁকে সচল রেখেছিল৷
শরণার্থী শিবিরে একটি বছর
মার্কিন নেতৃত্বে কোয়ালিশন বাহিনী মোসুলের পশ্চিম দিকে প্রবেশ করার সময় মোহাম্মদ দক্ষিণে হাম্মাম আল-আলিল শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন৷ ২০১৪ সালে শহর দখল করার পর আইএস ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে৷
নতুন জীবনের আশা
এক বছর আগেও আহমদ পরিবার ভাবতে পারেনি যে, এত দ্রুত নিজেদের ভিটেমাটিতে ফেরা সম্ভব হবে৷ কিন্তু সুযোগ পেয়ে তাঁরা আর দেরি করেননি৷ প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরা তাঁদের নতুন জীবন শুরু করতে সাহায্য করেছিল৷
বিদায়ের পালা
মোহাম্মদের বাবা-মা-ও মোসুলে ফিরে যাচ্ছেন৷ বাবা সালেহ আহমদ পুরানো বেদনাদায়ক ইরাকি লোকসংগীত শুনতে ভালোবাসেন৷ মর্মস্পর্শী বিদায় ও দ্রুত পুনর্মিলনের আশায় বাঁধা সেই সব গান৷ এভাবেই তিনি পরিবারের মধ্যে বিচ্ছেদের বেদনা প্রকাশ করতে চান৷
ধ্বংসাবশেষের মধ্যেই শৈশবের স্মৃতি
আইএস-বিদায়ের পর মোসুল শহরের পশ্চিমাংশ প্রায় পুরোটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল৷ মোহাম্মদ (বামে) নিজের শৈশবের শহরের এই হাল দেখে বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন৷ ধ্বংসস্তূপের মাঝে ভাই আহমদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে তিনি স্বীকার করেন যে, কিছুই প্রায় আর চেনা যাচ্ছে না৷
দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যাবর্তন
নতুন বাড়িতে প্রবেশ করেই মোহাম্মদের স্ত্রী ইমন রান্না শুরু করে দিয়েছেন৷ আহমদের বাবা-মা এসে পড়ার পর সবাই মিলে চা খেতে বসেছেন৷ অত্যন্ত সাদামাটা বাড়ি হওয়া সত্ত্বেও শরণার্থী শিবিরের তুলনায় সেটি অবশ্যই বেশি আরামদায়ক৷ আলাদা রান্নাঘর ও কাজ চালানোর মতো বাথরুম রয়েছে৷
নাগরদোলা আবার ঘুরছে
মোহাম্মদ তাঁর চাচার নির্মাণ কোম্পানিতে কাজ জুটিয়েই নাপিতের কাছে ছুটেছেন৷ তারপর নিজের সন্তানদের নিয়ে সদ্য চালু হওয়া অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ঘুরিয়েছেন৷ সুদিনের মুখ দেখেই স্ত্রী ইমনকে নিয়ে জামাকাপড় কিনতে গেছেন৷
নতুন বাসা, নতুন রূপ
বাবা সালেদ আহমদও নতুন জীবনের স্বাদ পাচ্ছেন৷ তাঁর পুত্রবধু সযত্নে তাঁর দাড়িগোঁফ কামিয়ে দিয়েছেন৷