গ্রীষ্ম মানেই উল্কাপাত, জানেন তো?
জুলাই মাসের শেষ থেকে মধ্য আগস্ট পর্যন্ত শত শত উল্কা আছড়ে পড়ে পৃথিবীর বুকে৷ অ্যাকুয়ারাইডস এবং পারসাইডস ফিরে আসে প্রতি বছর৷ চোখ খোলা রাখলে এবার হয়ত আপনার আশাও পূরণ হয়ে যেতে পারে!
ঘড়ি ধরে আসা যাওয়া
প্রতি গ্রীষ্মেই পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে বিপুল সংখ্যক উল্কা৷ এর বেশিরভাগই বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায়৷ উল্কাগুলোর নাম এসেছে নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে৷ ২৮ জুলাই তারিখে অ্যাকুয়ারাইডস উল্কাপাতের সময়৷ এর নাম এসেছে নক্ষত্রপুঞ্জ অ্যাকুয়ারিয়াস থেকে৷ ১২ আগস্ট দেখা যাবে পারসাইডস উল্কা, যার নামকরণ হয়েছে পারসিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জের নাম অনুসারে৷
তারা কেন খসে?
এক সময় ধারণা করা হতো নানা কারণে আকাশ থেকে তারা খসে পড়ে৷ তাই উল্কাকে তারাখসা নামেও ডাকা হতো৷ কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, ধূমকেতুর লেজের দিকে যে পাথর এবং ধুলার আস্তরণ থাকে, প্রতি বছর একই সময়ে সেই স্তরের মধ্য দিয়ে যায় পৃথিবী৷ এ কারণেই প্রতি বছর প্রায় একই সময়েই এই পাথরে উল্কা হয়ে খসে পড়ে পৃথিবীর আকাশে৷
এরপর কী হয়?
ধূমকেতুর লেজের ধূলিকণা আকারে সাধারণ খুবই ছোট হয়ে থাকে – এক মিলিমিটার থেকে এক সেন্টিমিটারের মধ্যে৷ পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণের টানে নীচে পড়ার সময় বাতাসের ঘর্ষণে আগুন লেগে ছাই হয়ে যায় সেই ধূলিকণা৷ আকারে যত বড় হয়, তত সময় নিয়ে পুড়তে থাকে উল্কা, তাই আকাশে দেখতেও ততোই সুন্দর লাগে৷
উল্কা কেবল গ্রীষ্মের নয়
গ্রীষ্মে উল্কাপাত প্রায় নিশ্চিত বলে ধরে নেয়া হলেও, অন্যসময় যে তা একেবারেই হয় না, এমন কিন্তু নয়৷ শীতকালেও, বিশেষ করে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে, ধূমকেতুর লেজের ভেতর দিয়ে যায় পৃথিবী৷ তখনও উল্কাপাত দেখার সম্ভাবনা অনেক৷ নভেম্বর ১৭ লিওনাইডস এবং ডিসেম্বর ১৪ জেমিনাইডস উল্কাপাতের সময়৷
শহর থেকে বহুদূরে
উল্কাপাত দেখতে চাইলে যেতে হবে শহরের আলো থেকে অনেক দূরে৷ কৃত্রিম আলো আকাশকে আলোকিত করে রাখে না, এমন জায়গা বেছে নিতে হবে এই সৌন্দর্য্য দেখতে হলে৷ অবশ্য আকাশে যদি মেঘ থাকে, বা বৃষ্টি হয়, তাহলে আমাদের কিছুই করার নেই৷
চ্যালেঞ্জ যারা ভালোবাসেন
যারা প্রতিকূল আবহাওয়া নিজের করে নিতে পারেন, তাদের অবশ্য আরো একটি উপায় আছে৷ শীতকালে গরম কাপড়ে নিজেকে মুড়িয়ে চলে যান কোনো এক পাহাড়ের চূড়ায়৷ হাইকিংও হলো, আবার অপেক্ষাকৃত পরিষ্কার আবহাওয়ায় উল্কাপাতও দেখা হয়ে গেল৷
হলেও হতে পারে ইচ্ছাপূরণ!
উল্কাপাত দেখলে সাথে সাথে ইচ্ছা পোষণ করলে, সেই ইচ্ছা নাকি পূরণ হয়! পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উল্কাপাত দেখলেও ইচ্ছা প্রকাশ করতে সমস্যা কী? তবে ভুলেও সেই ইচ্ছের কথা কাউকে বলবেন না যেন৷ বলে দিলেই সব শেষ৷