গ্রান কানারিয়ায় এত পর্যটক যায় কেন?
আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত স্পেনের গ্রান কানারিয়া দ্বীপ৷ স্পেনের অংশ হলেও এটি আসলে আফ্রিকার মরক্কোর কাছে অবস্থিত৷ আবহাওয়ার কারণে সারাবছরই সেখানে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে৷
সারাবছর সৈকতের আনন্দ!
সাদা, হলুদ কিংবা কালো – গ্রান কানারিয়ার সৈকতের বালু অনেক রংয়ের হয়ে থাকে৷ অন্যতম আকর্ষণীয় বিচ ‘প্লায়া দে আমাদোরেস’ দ্বীপটির দক্ষিণে অবস্থিত৷ সেখানেই রিসোর্টের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷ ২০১৭ সালে প্রায় ৪৬ লক্ষ পর্যটক গ্রান কানারিয়ায় গেছেন৷ আগের বছরের তুলনায় সংখ্যাটি প্রায় সাড়ে আট শতাংশ বেশি৷
সাগরের পাশে যেন মরুভূমি!
হ্যাঁ, কানারিয়া দ্বীপে গেলে আপনি ছোটখাটো মরুভূমির দেখা পাবেন৷ দ্বীপের একেবারে দক্ষিণে প্রায় ছয় কিলেোমিটার দীর্ঘ এই মরুভূমির দেখা পাওয়া যায়, যা ‘মিনি-সাহারা’ নামে পরিচিতি পেয়ে গেছে৷ পর্যটকরা সন্ধ্যার সময় সেখানে হাঁটতে পছন্দ করেন৷ সঙ্গে সূর্যোদয় দেখার আনন্দতো আছেই৷
নৌকা ভাড়া করে দ্বীপ দর্শন
এই আনন্দ পেতে চাইলে যেতে পারেন পোয়ের্তো দে মোগান-এ৷ গ্রান কানারিয়ার কয়েকটি পোতাশ্রয়ের মধ্যে এটি অন্যতম৷ সাগরের তীর ধরে হাঁটার সুন্দর রাস্তাও আছে সেখানে৷ আর বাজেট অনুযায়ী নৌকা কিংবা ইয়ট ভাড়া করে দ্বীপের বিভিন্ন অংশও ঘুরে দেখা সম্ভব৷
তাজা মাছ
দ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার অন্যতম আকর্ষণ তাজা মাছ খাওয়া৷ কানারিয়ার রিসোর্টগুলোতে অনেকভাবে মাছ রান্না করা হয়৷ এখানে যেমন আভোকাডো আর জলপাইয়ের তেল দেয়া সার্ডিনের মেনু দেখতে পাচ্ছেন৷
পাহাড় আর গিরিসঙ্কট
শুধু সৈকত আর মরুভূমিই নয়, গ্রান কানারিয়ায় গেলে পাহাড় আর গিরিসঙ্কটের দেখাও পাওয়া যাবে৷ দ্বীপের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের উচ্চতা ‘পিকো দে লাস নিয়েভেস’ (১,৯৪৯ মিটার)৷ পাহাড়ি রাস্তাগুলো এতই সরু আর সাপের মতো আঁকাবাঁকা যে, চালকের ঘাম ঝড়ে যায়৷
পাহাড়ি গ্রাম
স্পেনের অন্যতম সুন্দর গ্রাম তেসেদা৷ এটি গ্রান কানারিয়ায় অবস্থিত৷ বিভিন্ন ফল আর কাঠবাদামের গাছে ঘেরা এই বাড়িগুলো দেখতে সুন্দর লাগছে নিশ্চয়!
গুহার স্বাদ
গ্রান কানারিয়ার সবচেয়ে উঁচু গ্রাম আর্তেনারা৷ সেখানে এখনো কিছু মানুষ বিভিন্ন গুহায় বাস করেন৷ এর মধ্যে একটি গুহাকে আবার জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে৷ ফলে, অতীতে মানুষ যখন গুহায় বসবাস করতো তখন জীবনযাপন কেমন ছিল, তা ঐ জাদুঘরে গেলে জানা যায়৷
হাইকিং
গ্রান কানারিয়ায় যাওয়া বেশিরভাগ পর্যটক সৈকতে যান৷ তবে ইদানীং অনেকে হাইকিং করতেও সেখানে যাচ্ছেন৷ তাঁদের জন্য প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পথের ব্যবস্থা আছে৷ এর মধ্যে ‘রকি নুবলো’ নামের পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পথটি অনেকের পছন্দ৷ এই পথ ধরে এগোলে ছবির এই জায়গাটিতে যাওয়া যায়, যা একসময় আদিবাসীদের প্রার্থনার জায়গা ছিল৷
রাজধানীর মজা
গ্রান কানারিয়ার রাজধানী লাস পালমাসের মূল আকর্ষণ ‘সান্তা আনা ক্যাথেড্রাল’৷ বছরে দুই সপ্তাহের জন্য শহরে কার্নেভালের আয়োজন করা হয়৷ এছাড়া লাস পালমাসে আছে কয়েকটি মিউজিয়াম, আছে থিয়েটারও৷ বছরব্যাপী নিয়মিত কনসার্টেরও আয়োজন থাকে৷ আর বোনাস হিসেবে রাজধানী শহরে আছে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ বালুকাময় সৈকত৷