1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিটল গাড়ির কদর

২২ জুন ২০১৮

ফল্কসভাগেন গাড়ি কোম্পানির বিটল গাড়ির উৎপাদন বন্ধ হয় ২০০৩ সালে, কিন্তু আজও দুনিয়ায় বিটল-প্রেমীর কোনো অভাব নেই৷ তাদের জন্য বার্লিনে বিটল সংক্রান্ত একটি ভার্চুয়াল মিউজিয়াম পর্যন্ত খোলা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/303aR
ছবি: picture-alliance/dpa

বাড়ির ‘লোক’, কাজের ‘লোক’, সেই সঙ্গে গাড়ি: এই হল ফল্কসভাগেন বিটল বা জার্মানে ‘কেফার’ গাড়িটির চরিত্র ও প্রকৃতি৷ বহু মানুষের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত একটি মোটরগাড়ি – সেই ধরনের স্মৃতিগুলি সংগ্রহ করে একটি বই বার করেছেন বার্লিনের আলোকচিত্রী ইয়র্গ লেমান৷ ফল্কসভাগেন কোম্পানির এই পুরনো মডেলের গাড়িটির সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক৷ ইয়র্গ বলেন, ফল্কসভাগেন বিটল ‘‘অন্য সব গাড়ির চেয়ে আলাদা: বিলাসব্যসনের প্রতীক নয় – বরং সরলতার প্রতীক৷’’

সত্যিই একটা সাদামাটা মোটরগাড়ি; তৈরি হয়েছিল, যাতে যুদ্ধপরবর্তী জার্মানিতে মানুষজন যাতায়াত করতে পারেন, মুক্তির স্বাদ পান৷ ইয়র্গ লেমান তাঁর জীবনে প্রথম যে গাড়িটি চালান, সেটিও ছিল একটি বিটল৷ ইয়র্গ বললেন, ‘‘বইতে যেমন দেখেছেন, আমার ‘বিটল’ গাড়ির  প্রথম স্মৃতি ছিল, মা নার্সিং হোম থেকে বেরিয়ে আমাকে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসেছেন... আমার তখন সবে জন্ম হয়েছে৷ বাবা ছবিটা তুলেছিলেন – তাই দিয়েই আমার সংগ্রহের শুরু৷’’

বিটল গাড়ি চিরকালই তাঁর দৈনন্দিন জীবনের অংশ ছিল৷ তাঁর মা গাড়ির বিভিন্ন ট্রিপ নিয়ে খাতা রাখতেন – তা দেখলেই সেটা বোঝা যায়৷ ইয়র্গ জানালেন, ‘‘মা বাবার সঙ্গে এই গাড়িতে কোথায় কোথায় গেছেন, কী অভিজ্ঞতা হয়েছে, সব কিছু লিখে রেখেছেন৷’’

ইয়র্গ লেমান পুরনো জিনিসপত্রের বাজার ও নিলাম থেকে ফক্সভাগেন বিটল-এর দু'হাজারের বেশি ছবি সংগ্রহ করেছেন৷ তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ছবিগুলি একটি বইতে প্রকাশিত হয়েছে – সঙ্গের ভাষ্য ও টিকা-টিপ্পনী লিখেছেন সাংবাদিক কাটিয়া ফল্কমার৷

পরিবারের সদস্য

যেমন রোজকার জীবন, তেমনই ছুটি কাটাতে যাওয়ার ছবি – বিটল সহ৷ অনেক মানুষের কাছে বিটল গাড়ি বস্তুত পরিবারের আরেক সদস্য – তাই বিয়ে-শাদি বা জন্মদিনের ফটোতে বিটল-কে বাদ দেওয়া চলে না৷ ইয়র্গ জানালেন, ‘‘বহু মানুষ তাদের ফল্কসভাগেন বিটল গাড়ির সঙ্গে ছবি তুলেছেন – বিয়ের সময়; ছুটি কাটাতে গিয়ে৷ দেখলে বোঝা যায়, তারা তাদের গাড়িকে সত্যিই ভালোবাসতেন৷’’

ফ্যার্ডিনান্ড পর্শের প্রতি নাৎসি প্রশাসনের নির্দেশ ছিল, আপামর জনতার জন্য একটি সস্তার, নির্ভরযোগ্য গাড়ি বানানোর৷ ১৯৩৮ সালে ফল্কসভাগেন বিটল-এর প্রথম মডেলটি প্রদর্শিত হয়৷ তবে ভল্ফসবুর্গে কোম্পানির মূল কারখানায় বিটল গাড়ির সিরিজ প্রোডাকশন শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে৷ ২০০৩ সালে প্রথমে জার্মানিতে ও পরে মেক্সিকোতে বিটল গাড়ির উৎপাদন বন্ধ হওয়া পর্যন্ত মোট দু'কোটি দশ লাখ বিটল তৈরি হয়েছিল৷ এই হল বিটল গাড়ির বিশ্বজয়ের কাহিনি৷

ইয়র্গের ভাষায়: ‘‘যুদ্ধে সব কিছু ধ্বংস হবার পর এ ধরনের একটি গাড়ি বাজারে আনতে পারা, একটি জার্মান পণ্যের এরকম সাফল্য পাওয়া ছিল গর্বের কথা৷ যে দেশ কয়েক বছর আগে পর্যন্ত অন্যান্য  দেশে ধ্বংস ডেকে এনেছে, সেই দেশ থেকে হঠাৎ এমন একটা জিনিস বাজারে এলো যে, সারা দুনিয়া মুগ্ধ৷’’

ভার্চুয়াল বিটল মিউজিয়াম

সারা দুনিয়ার বিটল-প্রেমীদের নেটওয়ার্ক হিসেবে ইয়র্গ লেমান বার্লিনে একটি ভার্চুয়াল বিটল মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিটল-প্রেমীরা তাদের বিটল সংক্রান্ত স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা আদানপ্রদান করতে পারবেন৷

৮০ বছরের সুদীর্ঘ ইতিহাস সত্ত্বেও আজও কিছু ফল্কসভাগেন বিটলকে রাস্তায় চলতে দেখা যায়৷ ইয়র্গ লেমান আগামীতে তাঁর বিটলকে বাহন করে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত ঘুরে আসার পরিকল্পনা করছেন৷ ইয়র্গ বললেন, ‘‘এরকম একটা গাড়িতে একা লাগে না৷ এরকম একটা গাড়ি নিয়ে নিউজিল্যান্ড যাবার পথে আমি রোজ কারো না কারো বাড়িতে রাত কাটানোর নিমন্ত্রণ পাবো বলে আমি ধরে নিতে পারি৷... এ ধরনের একটি গাড়িকে যোগাযোগের শ্রেষ্ঠ উপায় বলা যেতে পারে৷’’

মানুষজন যে তাদের বিটল গাড়িকে আদর করে ‘খোকা পর্শে’ বলে ডাকত, তার পিছনে অনেক ‘অযান্ত্রিক’ ভালোবাসা লুকিয়ে ছিল৷

গেয়ারহার্ড সনলাইটনার/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য