গুয়ানতানামো জেলচিত্র
স্বাধীনতা শব্দটির কার্যত কোনো অস্তিত্ব নেই গুয়ানতানামো বে জেলে৷ তবু স্বাধীনতার ছবি ফুটে ওঠে তাদের তুলিতে৷ জলছবিতে৷ গুয়ানতানামোর কয়েদিদের আঁকা তেমনই কিছু ছবির প্রদর্শনী চলছে নিউ ইয়র্কে৷
গারদের হাতে ফুল (২০১৬)
ইয়েমেনের বাসিন্দা মহম্মদ আল-আনসি৷ ১৫ বছর আটক ছিলেন গুয়ানতানামো বে’তে৷ অভিযোগ, জেলে থাকার পর্বে তাঁর উপর যথেচ্ছ অত্যাচার হয়েছে৷ ভয়াবহ সেই পরিস্থিতির সঙ্গে জুঝে নেওয়ার জন্যই হাতে রং-তুলি তুলে নিয়েছিলেন তিনি৷ দিনন্দিন জীবন থেকে মুক্তি খুঁজতে তিনি আঁকতেন ল্যান্ডস্কেপ আর ফুলের ছবি৷
গুয়ানতানামোয় ভার্টিগো
পাকিস্তানের কয়েদি আম্মর আল-বালুচির আঁকা ছবি ‘ভার্টিগো অ্যাট গুয়ানতানামো’৷ ১০ বছর গুয়ানতানামোয় বন্দি ছিলেন তিনি৷ তার আগে আরো তিন বছর আটক ছিলেন সিআইএ-র বিভিন্ন জেলে৷ কারাগারের যন্ত্রণা সরাসরি উঠে এসেছে তাঁর ছবিতে৷
স্থিরচিত্র
পাকিস্তানের আরেক কয়েদি আহমেদ রব্বানি৷ সিআইএ-র বেশ কয়েকটি জেলে কিছুদিন কাটানোর পর গুয়ানতানামোয় পাঠানো হয় তাঁকে৷ ৯/১১ হামলাতেও তিনি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ৷ অভিযোগ, তিনি আল-কায়েদার জঙ্গি৷ যদিও তাঁর ছবির সঙ্গে সন্ত্রাসের কোনো সম্পর্ক নেই৷
টাইটানিক
রং ফুরিয়ে গেলে গুয়ানতানামোর বন্দিরা দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনসকেও ছবি আঁকার সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করেন৷ কফি পাউডার আর বালি দিয়ে ‘টাইটানিক’ এঁকেছেন খালিদ কাসিম৷ এখনও গুয়ানতানামো বে’তে বন্দি তিনি৷ অভিযোগ জেহাদি ক্যাম্পের সঙ্গে সরাসরি যোগ আছে তাঁর৷
শহরচিত্র
গুয়ানতানামোর বন্দিদের অনেকের ছবিতেই সমুদ্র একটি মুখ্য বিষয়৷ অনেকের ছবিতেই ধরা পড়েছে ঢেউ ভাঙার শব্দ৷ আবদেল মালিক আল রাহাবি গুয়ানতানামো থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২০১৬ সালে৷ ১৫ বছরের জেল জীবনে সমুদ্রের ধারে শহরের ছবি এঁকেছেন তিনি৷
সিরিয়ার শিশু
জলে ভেসে আসা সিরিয়ার শিশুর মৃতদেহ ২০১৫ সালে ভাইরাল হয়েছিল৷ গুয়ানতানামোর জেলেও সেই বি পৌঁছেছিল৷ কারণ ২০০৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বন্দিদের টেলিভিশন দেখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন৷ ইয়েমেনের বন্দি মহম্মদ আল-আনসি সেই ছবিটিই এঁকেছিলেন জেলে বসে৷ পরবর্তীকালে তাঁকে অবশ্য পাঠানো হয় ওমানের জেলে৷
প্রেসিডেন্ট গ্যালারি, নিউ ইয়র্ক
’ওডে টু দ্য সি: আর্ট অফ গুয়ানতানামো’ দেখানো হচ্ছে নিউ ইয়র্কের ‘প্রেসিডেন্ট গ্যালারি’-তে৷ ম্যানাহাটানের জন জে কলেজ অফ ক্রিমিনাল জাস্টিস একটি নাম করা প্রতিষ্ঠান৷ সেই কলেজেরই একটি গ্যালারি এটি৷ প্রদর্শনীটি নিয়ে অবশ্য অ্যামেরিকায় প্রুর বিতর্কও হয়েছে৷ ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য খোলা থাকবে প্রদর্শনীটি৷
Life behind barbed wire
কাঁটাতারের পিছনে বারাক ওবামা গুয়ানতানামো বে’র ডিটেনশন ক্যাম্প বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন৷ কিন্তু এখনো সেটি চলছে৷ ওবামার আমলে সেখানে ২৪২ জন বন্দি ছিলেন৷ ২০১৭ সালে সংখ্যাটি কমে হয়েছে ৪১৷ যদিও তাঁদের কবে ছাড়া হবে, জানা নেই কারও৷