1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা ক্রমশই বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ ওদিকে, এ সব ঘটনার তদন্তে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা৷

https://p.dw.com/p/1D5oA
Logo Amnesty International

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে গুমের মতো এমন আতঙ্কজনক ঘটনা বৃদ্ধির মোকাবেলা করতে হবে৷ বন্ধ করতে হবে নির্যাতন৷ আর তার সঙ্গে সঙ্গে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার ক্রমবর্ধমান তত্‍পরতার ইতি ঘটাতে হবে৷

বলা বাহুল্য, সম্পাদক ও সাংবাদিকদের ফোনে হুমকি দিচ্ছে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা৷ তাই সরকারবিরোধী সমালোচকদের গণমাধ্যমে যেন স্থান দেয়া না হয়, তার জন্যই এ চাপ৷

‘বাংলাদেশ: ডিস্টার্বিং ইনক্রিজ ইন ডিসাপিয়ারেন্সেস, ক্ল্যাম্পডাউন অন প্রেস ফ্রিডম' শীর্ষক এক বিবৃতিতে গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ মানবাধিকারের যেসব ঘটনা মোকাবেলা করছে, তাও তুলে ধরা হয়েছে বিবৃতিতে৷ এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে কী কী করণীয় – তা নির্ধারণ সম্পর্কে সরকারের কাছে করা হয়েছে কিছু সুপারিশ৷

অ্যামনেস্টি-তে বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষক আব্বাস ফয়েজ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘দারিদ্র্য কমিয়ে আনা ও অন্যান্য উন্নয়ন সূচকের ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ৷ কিন্তু যখন মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর, যেমন নির্যাতন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে দেয়ার মতো বিষয় আসে – তখন তার সঙ্গে ঐ উন্নয়ন খাপ খায় না৷ আমরা একটি প্রবণতা প্রমাণ্য আকারে ধরতে পেরেছি৷ তা হলো, অব্যাহত গুমের জন্য দায়ী প্রধানত নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী, যদিও তারা তা অস্বীকার করে৷ তাই সরকারের উচিত তার নিজস্ব বাহিনীর ব্যাপরে এ বিষয়ে দীর্ঘ ও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া এবং এ সব ঘটনায় জবাবদিহির যে ঘাটতি আছে, তা পূরণ করা৷''

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ২০১২ সাল থেকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ২০টি গুমের ঘটনা অনুসন্ধান করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ তবে বাস্তবে এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে৷২০ জন মানুষের মধ্যে ন'জনকে পাওয়া গেছে মৃত৷ আটক রাখার দু'মাস পরে বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন ছ'জন৷ পাঁচজনের খোঁজ মেলেনি৷ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপহরণের ঘটনা ঘটেছে অনেক৷ এতে ‘টার্গেট' করা হয়েছে বিরোধী দলগুলোর সদস্যদের৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশ বা তাদের বিশেষ বাহিনী ব়্যাবের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন৷ কিন্তু এ সব অভিযোগ নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ভূমিকার কোনো জবাবদিহিতা নেই৷ এর মধ্যে এ বছরের এপ্রিল মাসে নারায়ণগঞ্জে সাতটি অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় ব়্যাবের কর্মকর্তাদের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ মানুষের ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে পুলিশ সেই খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তিন ব়্যাব কর্মকর্তাকে আটক করেছে৷ কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ দাখিল করা হয়নি৷

আব্বাস ফয়েজ বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাটি ছিল বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়ার জন্য ‘লিটমাস টেস্ট'৷ যেহেতু ব়্যাবের সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাই তা ইতিবাচক৷

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে গুমের ঘটনা বেড়ে গেছে৷ ঐ ব্যক্তিদের তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরয়ে দেয়া এবং তাঁদের বর্তমান অবস্থান জানানো সরকারের দায়িত্ব৷ কারণ এই সব ঘটনার সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় গত সপ্তাহে তাঁদের পরিবারের করুন কাহিনি তুলে ধরেছেন৷ এক ব্যক্তি গুম হলে শুধু তিনিই গুম হন না, একটি পরিবারেও বিপর্যয় নেমে আসে৷''

নূর খান বলেন, ‘‘সরকারের উচিত হবে এই সব গুমের ব্যাপরে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা৷ তাছাড়া সেই তদন্ত কমিশনের প্রাপ্ত ফলাফলকে আমলে নিয়ে গুমের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া৷ একই সঙ্গে তাদের সুপারিশও বাস্তবায়ন করা৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য