1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গায়ের রং বিচার করেন ট্রাম্প, অভিযোগ বাইডেনের

২৩ জুলাই ২০২০

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। প্রেসিডেন্টকে সরাসরি বর্ণবাদী বলে অভিহিত করলেন।

https://p.dw.com/p/3fihl
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/M. Rourke

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। বললেন, ''গায়ের রং দেখে সরকার চালান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। অ্যামেরিকার ইতিহাসে তিনিই প্রথম বর্ণবাদী প্রেসিডেন্ট।'' বাইডেনের অভিযোগের জবাব দিয়েছে ট্রাম্প শিবিরও। তাদের বক্তব্য, ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। বরং তিনিই অতীতে বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন বলে ট্রাম্প শিবিরের অভিযোগ।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং জর্জ ফ্রয়েড হত্যার ঘটনার পর থেকে অ্যামেরিকায় বর্ণবাদ নিয়ে নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা বার বার অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্পের প্রশাসন বর্ণবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। বস্তুত, করোনার সংক্রমণ অ্যামেরিকায় ছড়িয়ে পড়ার পর একাধিকবার ট্রাম্প স্বয়ং করোনা ভাইরাসকে 'চীনা ভাইরাস' বলে সম্বোধন করেছেন। তাঁর অনুগামীরা কখনও ভাইরাসটিকে 'চীনা ভাইরাস', কখনও 'উহান ভাইরাস', কখনও আবার 'কুং ফ্লু' বলে অভিহিত করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যামেরিকায় বসবাসকারী এশিয়ার মানুষ, বিশেষত মঙ্গোলয়েড চেহারার মানুষদের উপর একাধিক আক্রমণ হয়েছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি জেনোফোবিয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

জো বাইডেনকে চমকে দিলেন ওবামা

কিন্তু ট্রাম্প তার জন্য একবারের জন্যও দুঃখপ্রকাশ করেননি। বরং তাঁর বক্তব্যে অটল থেকেছেন। তারই মধ্যে ঘটে যায় জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনা। গোটা অ্যামেরিকা জুড়ে 'ব্ল্যাক লাইফ ম্যাটার্স' আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। গোড়ায় সেই আন্দোলনকেও যে ভাবে দমন করার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প, তা নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছিল। বলা হয়েছিল, বর্ণবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন ট্রাম্প। তারই মধ্যে সম্প্রতি অ্যামেরিকার দক্ষিণ ভাগের একটি সেনা পতাকাকে সমর্থন জানিয়েছেন ট্রাম্প। যে পতাকার সঙ্গে বর্ণবাদের ইতিহাস জড়িত বলে অভিযোগ। তারপরেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ উঠেছে।

কিন্তু বুধবার জো বাইডেন যে ভাবে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন, তা নজিরবিহীন। বাইডেন বলেছেন, এই প্রথম অ্যামেরিকা কোনও বর্ণবাদী প্রেসিডেন্ট দেখল। ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান দলের বহু প্রেসিডেন্ট দেখেছে মার্কিন মুলুক। কিন্তু সরাসরি এমন বর্ণবাদী প্রেসিডেন্ট কখনও দেখেনি। ট্রাম্পের হাত ধরেই অ্যামেরিকায় বর্ণবাদ ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে বলে অভিযোগ করেছেন বাইডেন। তাঁর বক্তব্য, ঐক্যবদ্ধ অ্যামেরিকা নয়, বিভেদের দেশ গড়ে তুলেছেন ট্রাম্প।

স্বাভাবিক ভাবেই বাইডেনের এই নজিরবিহীন অভিযোগের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ট্রাম্প শিবির। প্রেসিডেন্টের নির্বাচন উপদেষ্টা ক্যাট্রিনা পিয়েরসন জানিয়েছেন, ''বাইডেনের বক্তব্য শুধু ভুল নয়, মন গড়া। ডনাল্ড ট্রাম্প কোনও দিনই বিভেদের রাজনীতি করেননি। তাঁর দাবি, কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের কাছে ট্রাম্প অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাঁর ভোটের একটা বড় অংশই কৃষ্ণাঙ্গ।'' একই সঙ্গে ক্যাটরিনার অভিযোগ, ''ট্রাম্প নন, বাইডেনই বরং বর্ণবাদী।'' এক সময় বারাক ওবামা সম্পর্কে বাইডেনের মন্তব্য সামনে নিয়ে এসেছেন ক্যাটরিনা। সেখানে বাইডেন বলেছিলেন, বারাক ওবামা তাঁর দেখা প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ যিনি ঝকঝকে, সুপুরুষ, বুদ্ধিদীপ্ত। ক্যাটরিনার এই বক্তব্যকে অবশ্য নাকচ করে দিয়েছে বাইডেন শিবির। তাদের বক্তব্য, বাইডেনের বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ট্রাম্পের আমলে অ্যামেরিকায় বিভেদের রাজনীতি হয়েছে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। যে ভাবে মুসলিমদের নাম করে তিনি মন্তব্য করেছেন, তা নজিরবিহীন। অভিবাসী এবং উদ্বাস্তুদের নিয়ে অন্যায় মন্তব্য করেছেন তিনি। করোনা-কালে চীনকে টার্গেট করেছেন তিনি। যার জের এসে পড়েছে অ্যামেরিকায় বসবাসকারী চীনাদের উপর। আর জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার পরে যে ভাবে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা তিনি করছেন, তাও অপ্রত্যাশিত বলেই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। ফেডারেল পুলিশকে ডেমোক্র্যাট রাজ্যগুলিতে পাঠানো নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প যত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন, ততই তাঁর আসল স্বরূপ বেরিয়ে পড়ছে। তবে একই সঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, ডনাল্ড ট্রাম্পই প্রথম বর্ণবাদী প্রেসিডেন্ট, বাইডেনের এই মন্তব্য ঠিক নয়। এর আগে বর্ণবাদী এবং দাসপ্রথার পক্ষে কথা বলা প্রেসিডেন্টও দেখেছে অ্যামেরিকা।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)