গাড়ির ডিজাইন করে গিনেসে নাম উঠেছে যার
২৯ জানুয়ারি ২০২১ব্রিটিশ নাগরিক অ্যান্ডি সন্ডার্সের শখ পুরনো গাড়ি নিজের মতো ডিজাইন করা৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা আমার মুখে হাসি নিয়ে আসে৷ এটাই আমার বানানো সবচেয়ে সেরা গাড়ি৷ এটা যেন একটা 'আর্ট ডেকো’ ভাস্কর্য আর প্রোটোটাইপের মিশ্রন৷ এটা আপনাকে অনেক আনন্দ দেয়, কারণ এটা এমন এক সময়ের, যেটা চলে গেছে৷ আবার অন্যদিকে, এটা নয়৷ কারণ, এটা একটা কাস্টম কার৷ সুতরাং এটা সবকিছুর একটা মিশেল৷’’
সন্ডার্সের শখ এমন সব ডিজাইনের গাড়ি তৈরি, যা আগে কেউ দেখেনি৷ সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে তিনি সেটা করেন৷
২০০৩ সালে ‘টিটেনাস’ বানানো শুরু করেন তিনি৷ এজন্য মার্কিন লাক্সারি গাড়ি ব্র্যান্ড ‘কর্ড’-এর ১৯৩৭ সালের একটি গাড়ি বেছে নিয়েছিলেন৷
অধিকাংশ সময় ভাঙা ওল্ডটাইমার দিয়ে কাজ করেন তিনি৷
যেমন ১৯৪০ এর দশকের এক ভাঙা পুজো পিকআপ ট্রাক দিয়ে সন্ডার্স ‘মেট্রোপলিস’ বানিয়েছেন৷
যখন কাজ করেন তখন সময়ের কথা ভাবেননা তিনি৷ সন্ডার্স বলেন, ‘‘যখন কাজ করি তখন যে আমার কী হয় তা আপনাকে বোঝাতে পারবো না৷ এটা নেশার মতো৷ এই সময় আপনি কিছু তৈরি করেন না, সৃষ্টি করেন৷ গাড়িটা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা এখানে ভাবার বিষয় নয়৷ পরিকল্পনাটা গুরুত্বপূর্ণ, অন্য কিছুর গুরুত্ব নেই৷’’
টিএনএজ বয়সে বাবার গ্যারেজে গাড়ি ঠিক করার কাজ করেছেন সন্ডার্স৷ ১৯৮৪ সালে তিনি যখন এই গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছিলেন তখন ইউরোপের মিডিয়ায় খবর হয়েছিল৷ সন্ডার্স বলেন, ‘‘১৯৭০-এর দশকে সায়েন্স ফিকশন মুভিতে দেখানো গাড়ি বানাতে চেয়েছি আমি৷ জানি না কেন এমনটা মনে হয়েছিল৷ আমি করেছি, কারণ, আমার করতে হতো৷ আগেও যেমনটা বলছিলাম, যখন আমার মাথায় আইডিয়া আসে তখন সেটা শেষ না করা পর্যন্ত মাথা থেকে যায় না৷ আর যখন শেষ হয়, তখন আগ্রহও চলে যায়৷’’
গাড়ির কাজ শেষ হলে তিনি সেগুলো বিক্রি করেন বা নিলামে তোলেন৷
২০০৬ সালে বিশ্বের সবচেয়ে চেপ্টা গাড়ি তৈরি করে অনেকের দৃষ্টি কেড়েছিলেন সন্ডার্স৷ এ কারণে গিনিজ বুকেও নাম উঠেছিল তার৷
২০১০ সালে পিকাসোর ‘কিউবিজম’ আর্ট মুভমেন্ট থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে এই গাড়িটি বানিয়েছিলেন, যে কারণে মিডিয়া তাকে ‘ব্যাংকসি অফ দ্য অটোমোবাইল’ নাম দিয়েছিল৷ অ্যান্ডি সন্ডার্স বলেন, ‘‘ব্যাংকসি যত দ্রুত গ্রাফিতি আঁকতে পারেন আমি তত তাড়াতাড়ি গাড়ি বানাতে পারলে ভালো হতো৷ আপনি যখন এমন সব কাজ করেন তখন আপনি জানেন যে, আপনি সবকিছু বিরুদ্ধে যাচ্ছেন৷ আমার মনে হয়, এটা ভেবে ব্যাংকসি কাজ শুরু করেছিলেন৷ মিডিয়া তাকে আলোচনায় এনেছে বলে আমি মনে করি৷ হয়ত তিনি শুধু আনন্দের জন্য এসব করেছেন৷ যেমন আমিও শুধু আনন্দের জন্যই এসব করি৷’’
অনেক আর্ট গ্যালারিতে সন্ডার্সের গাড়ি প্রদর্শিত হয়েছে৷ ২০০১ সালে ব্রিটেনের ‘টার্নার প্রাইজ’-এর জন্য তার কয়েকটি গাড়ি মনোনীত হয়েছিল৷ ফলে একটা বিষয় পরিষ্কার, সন্ডার্সের পরবর্তী গাড়িটা সবার সেরা ও সবচেয়ে সুন্দর হবে৷
গেরহার্ড সনলাইটনার/জেডএইচ