খুলনার ঐতিহাসিক ‘শহীদ হাদিস পার্ক’
১৯৬৯- এর আইয়ুব-বিরোধী গণআন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শেখ হাদিসুর রহমান বাবুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পার্কটির নাম দেয়া হয় ‘শহীদ হাদিস পার্ক’৷
নামকরণের আদ্যোপান্ত
১৮৮৪ সালে খুলনা পৌরসভা হবার পর এটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘খুলনা মিউনিসিপ্যাল পার্ক’ নামে৷ ১৯২৫ সালে মহাত্মা গান্ধী এই পার্কে বক্তব্য রাখায় পার্কটির নাম দেয়া হয়েছিল ‘গান্ধী পার্ক’৷ ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরে নাম বদলে হয়ে যায় ‘জিন্নাহ পার্ক’৷ ১৯৬৯ সালে আইয়ুব-বিরোধী গণআন্দোলন চলার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন শেখ হাদিসুর রহমান বাবু৷ পার্কটি ‘শহীদ হাদিস পার্ক’ হয়ে এখনো ধরে রেখেছে তার স্মৃতি৷
ইতিহাসের সাক্ষী
শহিদ শেখ হাদিসুর রহমান বাবু ১৯৪৪ সালের ২১ এপ্রিল বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন৷ সংসারের টানাপোড়েনে খুলনার শান্তিধাম মোড়ের এক লন্ড্রিতে কাজ করতেন তিনি৷ ১৯৬৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খান-বিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে শহিদ হন তিনি৷ ২২শে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ছাত্রনেতারা মিউনিসিপ্যাল পার্কে জমায়েত হয়ে পার্কটির নাম বদলে ‘শহীদ হাদিস পার্ক’ রাখার সিদ্ধান্ত নেন৷
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার
খুলনা শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এই পার্কে অবস্থিত৷ এটি ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের আদলে তৈরি করা হয়েছে৷ প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শহিদদের সম্মান জানান সর্বস্তরের মানুষ৷
নির্মল পরিবেশ
আধুনিকায়নের যুগে শহরে বসে প্রাকৃতিক পরিবেশ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ এই কারণে বর্তমান সময়ে পার্কটি বিনোদনপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ মনোরম পরিবেশের কারণে প্রতিদিন অনেক মানুষ পার্কটিতে সময় কাটান৷ হাঁটাহাঁটি এবং শরীরচর্চার জন্য পার্কটিতে পর্যাপ্ত খোলা জায়গা রয়েছে৷
মনোরম লেক
শহিদ মিনারকে ঘিরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন লেক৷ বিশাল লেকটি পার্কের সৌন্দর্যে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা।
বিভিন্ন দিবস উদযাপন
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ছাড়াও বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে পার্কে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে৷ খুলনা নগরী এবং তার ইতিহাসের সাথে ‘শহীদ হাদিস পার্ক’ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে৷
পি সি রায় রোডে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পশ্চিম পাশে পার্কটির অবস্থান৷ শিল্প নগরী খুলনার অন্যতম আকর্ষণ, বাংলাদেশের অনেক রাজনৈতিক আন্দোলন এবং সংগ্রামের সাক্ষী এই পার্ক দেখে নিন এই ছবিঘরে...