1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খাশগজি হত্যা নিয়ে সাবধানে কথা বলার আহ্বান

১৭ অক্টোবর ২০১৮

সৌদি যুবরাজ সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে একটু সতর্কভাবে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন৷ বলেছেন, দোষ প্রমাণের আগে কাউকে অপরাধী বলা ঠিক নয়৷

https://p.dw.com/p/36gc4
Türkei Konsulat Saudi Arabien Istanbul
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Gurel

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশগজির অন্তর্ধানের বিষয়টি নিয়ে সৌদি মিত্রদের পক্ষে সুর নরম করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ মার্কিন নিউজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘আগে দেখতে হবে ঠিক কী ঘটেছে৷''

ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা সাধারণত কী করি, নির্দোষ প্রমাণ হবার আগ পর্যন্ত একজনকে অপরাধী বানিয়ে রাখি৷ এটা আমার ভালো লাগে না৷'' অথচ এর আগে ট্রাম্প অপরাধীদের ‘কঠিন সাজা' দাবি করেন৷

দু'সপ্তাহ আগে বিয়ের কাগজপত্র আনতে ইস্তানবুলে সৌদি দূতাবাসে গিয়ে নিখোঁজ হন স্বেচ্ছায়নির্বাসনে যাওয়া সাংবাদিক খাশগজি৷তুরস্ক দাবি করেছে, তাদের কাছে প্রমাণ আছে যে, খাশগজিকে সেখানে খুন করা হয়েছে৷ কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করছে৷ তারা বলছে যে, খাশগজি বেরিয়ে গেছেন৷ তবে বেরিয়ে যাবার কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেনি৷

এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মার্কিন স্টেট সেক্রেটারি মাইক পম্পেও রিয়াদ সফর করেছেন৷ সফর চলাকালেই ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি সিংহাসনের উত্তরাধিকার যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন৷ এরপর তিনি টুইটারে লেখেন, ‘‘এইমাত্র সৌদি যুবরাজের সঙ্গে কথা বলেছি৷ তিনি তুরস্কের দূতাবাসে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন৷''

ট্রাম্প আরো জানান যে, সৌদি যুবরাজ বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করবেন বলে কথা দিয়েছেন৷

বিভিন্ন গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, খাশগজি বর্তমান সৌদি শাসনের সমালোচক ছিলেন৷ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতেন৷

এর আগে পম্পেও যুবরাজ সালমানের সঙ্গে দেখা করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি জামাল খাশগজির অন্তর্ধানের বিষয়টি নিয়ে একটি পরিপূর্ণ তদন্ত করার  ওপর জোর দিয়েছি৷ তাঁরা কথা দিয়েছেন৷''

পম্পেও এরপর আঙ্কারা যান৷ বুধবার দেখা করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলুর সঙ্গে৷ ৪০ মিনিট বৈঠক করেন তাঁরা৷

অডিও টেপ ফাঁস

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট ও সিএনএনের পর এই প্রথম আঙ্কারা থেকে প্রকাশিত কোনো পত্রিকা খাশগজির মৃত্যুর প্রমাণ আছে বলে দাবি করেছে৷ দৈনিক ইয়েনি শাফাক নামের ঐ পত্রিকার খবরে একাধিক অডিও রেকর্ডিংয়ের কথা উল্লেখ করা হয়৷ সেখানে বলা হয়, খাশগজিকে ‘শিরচ্ছেদ' করা হয় এবং তার আগে নির্যাতন করা হয়৷

পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়, একটি টেপের রেকর্ড অনুযায়ী, ইস্তানবুলে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মেদ আল-ওতাইবি নির্যাতনের সময় বলছেন, ‘‘এসব বাইরে করুন৷ আমাকেও বিপদে ফেলবেন আপনারা৷''

অন্য একটি রেকর্ডিংয়ে একজন রাষ্ট্রদূতকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, ‘‘সৌদি আরবে ফেরত আসার পর যদি বেঁচে থাকতে চান, তাহলে চুপ থাকুন৷'' 

আঙ্কারা পুলিশ বরাবরই দাবি করে আসছে যে, খাশগজিকে হত্যা করা হয়েছে৷কিন্তু রিয়াদ এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলছে৷

বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া

জি-৭ এর অন্যান্য দেশগুলো যেমন, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান, জার্মানি, ক্যানাডা ও ইটালি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে৷ তারা বলেছে, খাশগজির অন্তর্ধানের ‘সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে'৷

অন্যদিকে, সৌদি সাংবাদিক অন্তর্ধানের প্রতিবাদে সে দেশে অনুষ্ঠেয় বিনিয়োগ সম্মেলন বাতিল করেছেন অনেকেই৷ প্রথমে বিএনপি পারিবাস চেয়ারম্যান জ্যঁ লামিয়ের ও পরে ফ্রান্সের সকজেন ব্যাংকের সিইও ফ্রেডেরিক উদেয়া সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দেন৷

জেডএ/এসিবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)