1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খাদ্যের অপচয় কমাতে সহজ সমাধানসূত্র দিচ্ছেন জার্মান শেফ

৩১ মার্চ ২০২১

খাদ্যের অপচয় গোটা বিশ্বেই বড় সমস্যা৷ সারা বছর ধরে খাদ্যসম্ভাবের বিশাল বৈচিত্র্য এই অবস্থার জন্য অনেকটাই দায়ী৷ থাইল্যান্ডের এক বিশাল হোটেলে সহজ কৌশলে অপচয় কমানো সম্ভব হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3rPOp
ছবি: DW

বেশিরভাগ মানুষের কাছে যা আবর্জনা, ডানিয়েল বুখারের কাছে তা আসলে এক কলঙ্ক৷ কারণ থাইল্যান্ডের আবর্জনার স্তূপগুলির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অরগ্যানিক বর্জ্যে ভরা থাকে৷ অর্থাৎ খাদ্যের অপচয়ের সাক্ষাৎ ফল সেখানে দেখা যায়৷ এমনই এক জঞ্জালের স্তূপ ঘুরে ডানিয়েল বলেন, ‘‘এখানে যেমনটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে প্রথমে সবকিছু প্লাস্টিক মনে হয়৷ কিন্তু ভেতরে নজর দিলে এবং প্রায় তরল সাদা পদার্থ দেখলে বোঝা যায়, এ সবই খাবারের অংশ৷ সবই অরগ্যানিক৷ অনেকটার অবস্থাই ভালো মনে হচ্ছে, এখনো মোড়া রয়েছে৷ সম্ভবত ধুইয়ে নিলে এখনই সেগুলি দিয়ে কিছু তৈরি করা যায়৷’’

সহজ কৌশলে খাদ্য অপচয় কমাচ্ছে এক হোটেল

জার্মানির এই রাঁধুনি ব্যাংককের এক হোটেলের প্রধান পাচক৷ খাদ্যসামগ্রীর সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে৷ নিজের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ডানিয়েল বলেন, ‘‘খাবার ফেলে দিতে আমার নিজের অত্যন্ত খারাপ লাগে৷ অনেক ধৈর্য্য ধরে, ভালবাসা দিয়ে নিজে রান্না করি বলেই শুধু এমনটা মনে হয় না৷ যে জিনিস ভালোভাবে খাওয়া সম্ভব, সেটা ফেলে দেওয়া চূড়ান্ত বোকামি বলে আমার মনে হয়৷ আমি চিরকাল এ বিষয়ে ভেবেছি এবং ভাবলেই প্রচণ্ড রাগ হয়৷’’

প্রায় এক হাজার ঘরসহ হোটেলটি থাইল্যান্ডের অন্যতম বড় হোটেলগুলির মধ্যে একটি৷ রান্নাঘরের প্রায় ২০০ কর্মীর জন্য বুখার হোটেলের ছাদে শাকসবজির ছোট খেত গড়ে তুলেছেন৷ সেখানে যা উৎপাদন হয়, তা হোটেলের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট না হলেও এই বাগান রাঁধুনিদের মনে খাদ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ নতুন সচেতনতা সৃষ্টি করেছে৷ ডানিয়েল বুখার বলেন, ‘‘একটা নির্দিষ্ট ভাবনা থেকে আমরা ভাবনাচিন্তা না কলেই অনেক কিছু ফেলে দেই৷ কারণ আমরা সেগুলিকে স্রেফ পণ্য হিসেবে দেখি৷ কত কষ্ট করে চাষ করা হয়, মাটিতে বীজ বপন করার কতদিন পর প্রথম ফল হাতে পাওয়া যায়, সে বিষয়ে মোটেই ভাবি না৷’’

অপচয় ঠেকাতে লড়ছে যে রেস্তোঁরা

খাদ্যের মর্যাদা দিতে হলে সেগুলি ঠিকমতো রাখার ব্যবস্থা করতে হবে৷ শুনতে সহজ মনে হলেও বুখার বিলক্ষণ জানেন, যে বাস্তবে এমনকি সবচেয়ে সহজ নিয়মও মানা হয় না৷ যেমন পানি দিয়ে ধোয়া শাকসবজি দীর্ঘ সময় ধরে টাটকা রাখতে হলে সেগুলি ভালো করে শুকানো প্রয়োজন৷ তাছাড়া হাইজিন টিম প্রতিদিন বিভিন্ন কাঁচামালের অবস্থা পরীক্ষা করে৷

বেশিরভাগ রাঁধুনি শুধু পরের পদ রান্নার বিষয়ে মনোযোগ দেন বলে সাধারণত অনেক তাজা উপকরণও ফেলে দেওয়া হয়৷ বুখারের হোটেলে তার বদলে এক কেন্দ্রীয় রান্নাঘরে অন্যান্য জায়গায় উদ্বৃত্ত উপকরণ ব্যবহার করে রান্না হয়৷ এই সমাধানসূত্র ব্যাখ্যা করে ডানিয়েল বলেন, ‘‘শাকসবজি ও মাংসের মতো বিভিন্ন বিভাগের উদ্বৃত্ত উপকরণ আমরা সংগ্রহ করি৷ হোটেলের বিশাল কার্ভিং বা সবজি অলঙ্করণের জায়গা থেকেও উচ্ছিষ্ট পাওয়া যায়৷ সে সব সংগ্রহ করে আমরা একটা সস তৈরি করি৷ সাধারণ পরিস্থিতিতে পিঁয়াজ কাটলে বাকি অংশ ফেলে দেওয়া হতো৷ কয়েক'শো পেঁয়াজ কাটলে অবশিষ্ট অংশ দিয়ে সস তৈরি করা যায় বৈকি৷’’

রেস্টুরেন্টে খাবার অপচয় করলে জরিমানা

বুখারের হোটেলে বিভিন্ন ধারার মোট ছয়টি রেস্তোরাঁ আছে৷ তাছাড়া বাফেটের জায়গায় অনেক ছোট ইউনিটে বিভিন্ন পদ রান্না করা হয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সার্বিক ধারণা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে খাদ্যের অপচয় অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব৷ এমনই এক উদাহরণ তুলে ধরে ডানিয়েল বুখার বলেন, ‘‘প্রাতরাশের উদ্বৃত্ত ডিমসেদ্ধও আমরা এতে দিয়ে দেই৷ দুপুরের খাবার হিসেবে এটি খুবই জনপ্রিয়৷ আলাদা করে তাতে ডিম সেদ্ধ করার প্রয়োজন নেই৷ সমস্যা হলো ব্রেকফাস্ট এগ পশ্চিমা খাবারের রান্নাঘরে সেদ্ধ হয়৷ অন্যদিকে দুপুরের এই পদ চাইনিজ রান্নাঘরে তৈরি হয়৷ যোগাযোগের ব্যবস্থা করলেই প্রাতরাশের ডিম তাদের দেওয়া চলে৷’’

এমন সব কৌশল প্রয়োগ করে বুখার ও তার টিম হোটেলে খাদ্য অপচয়ের মাত্রা দুই বছরে অর্ধেকে কমিয়ে আনতে পেরেছেন৷

ফেলিক্স নুয়র/এসবি

গতবছর ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য