1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কয়লাখনি বণ্টন অবৈধ!

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৬ আগস্ট ২০১৪

১৯৯৩ সাল থেকে যেসব কয়লাখনি বণ্টন করা হয়, তা অবৈধ৷ বণ্টন প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছিল – এই মর্মে রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট৷ বলা হয়েছে, সরকার নিলাম না করে শাসকদলের ঘনিষ্ট কিছু বেসরকারি কোম্পানিকে তা বণ্টন করে৷

https://p.dw.com/p/1D0o1
১৯৯৩ সাল থেকে ভারতে যেসব কয়লাখনি বণ্টন করা হয়, তা অবৈধ বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টছবি: dapd

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর নেতৃত্বে কংগ্রেস জোট সরকার ২০০৪ সাল থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ১৯৪টি কয়লাখনি বণ্টন করেছিল কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি না মেনে৷ নিয়ম হলো নিলাম করা৷ কিন্তু সাবেক কংগ্রেস-জোট সরকার তা না করে শাসক দলের কিছু চেনা-জানা বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে তা ইচ্ছামতো বণ্টন করে৷ এই পদ্ধতিতে না ছিল কোনো স্বচ্ছতা, না মানা হয়েছিল নির্দিষ্ট নির্দেশিকা৷ তাই এই বণ্টনকে অবৈধ বলে খারিজ করে সোমবার রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এল.এম লোধারের নেতৃত্বে এক বিশেষ বেঞ্চ৷

Oberstes Gericht Delhi Indien
ভারতের সুপ্রিম কোর্টছবি: picture-alliance/dpa

কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই-এর তদন্তে বলা হয়, কয়লা খনি বণ্টনে যে স্ত্রিনিং কমিটি গঠন করা হয় সেই কমিটি কয়লাখনি বণ্টনে অনিয়ম করেছিল৷ কোনো ন্যায়সঙ্গত মাপকাঠি মানা হয়নি৷ দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে কয়লা ব্লক বণ্টনের তদন্ত সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে করা হয়েছিল৷ এরপর বিচারের জন্যও এক বিশেষ আদালত গঠন করা হয়৷

২০১২ সালে আইনজীবী, ‘কমন কজ' নামে একটি এনজিও এবং কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি ভারতের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটার জেনারেল বা সিএজি-এর অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে কয়লা ব্লক বণ্টনে দুর্নীতি অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন৷ সাবেক সিএজির রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সরকার নিলাম না করে ইচ্ছামতো চেনা-জানা বেসরকারি কেম্পানিগুলিকে কয়লা ব্লক বণ্টন করায় সরকারি কোষাগারের লোকসান হয় ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা৷ এই সব কয়লা ব্লক বণ্টিত হয় ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড়, ওড়িষা, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে৷

Indien Frauen in Kohlenbergbau in Jharkhand
ছবি: AP

উল্লেখ্য, সাবেক সিএজি যিনি এই অডিট রিপোর্ট দিয়েছিলেন, সেই বিনোদ রাই তাঁর লেখা একটি বইয়ে অভিযোগ করেন যে, অডিট রিপোর্টে যাঁদের নাম ছিল তাঁদের মধ্যে থেকে কিছু নাম বাদ দেবার জন্য শাসক দলের কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা তাঁর বাড়িতে এসে তাঁকে চাপ দেন৷ বিজেপি ঐ সব নেতাদের নাম প্রকাশের দাবি জানায়৷ এই নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্কের তুফান৷ বিজেপির মুখপাত্রদের মতে, কংগ্রেস সরকারের আমলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে হেয় করার চেষ্টা করা হয়, এখন তা প্রকাশ্যে এসে পড়েছে৷ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিনোদ রাই-এর বই প্রকাশের আগে বইয়ের বিক্রি বাড়াতে ইস্যুটিকে চাঞ্চল্যকর রঙ দেবার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ যদি তাঁকে কিছু নাম বাদ দেবার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে চাপ দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে তখন কেন তিনি বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনেননি?

Indien Kinderarbeit in Kohlelager
ছবি: Getty Images

প্রসঙ্গত, কয়লা ব্লক বণ্টনের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ছিলেন কয়লা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে৷ তাই কয়লা দপ্তরের তৎকালীন সচিব পি.সি পারেখকে যখন কয়লা কেলেঙ্কারিতে আসামির কাঠগোড়ায় দাঁড় করানো হয়, তখন তিনি স্পষ্ট ভাবে জানান, যা হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনেই হয়েছে৷ বলেন, ‘‘আমি যদি দোষী হই, তাহলে কোন যুক্তিতে প্রধানমন্ত্রী রেহাই পেতে পারেন ?''

সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য রায়ে বণ্টন সরাসরি বাতিল করার কথা বলেনি, বলেছে বাতিল তখনই হবে যখন প্রমাণ হবে যে, কয়লা খনির কয়লা মেগা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও অন্য বাণিজ্যিক কাজে লাগানো হয়েছে৷ আর এমনটা হয়ে থাকলে তখন তা অবশ্যই বাতিল করা হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য