1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষুদ্রতম গাড়ি চালিয়ে ব্রিটেন ভ্রমণের রোমাঞ্চ

৪ মে ২০২২

বিশ্বের ক্ষুদ্রতম গাড়ি নিয়ে গোটা দেশ ঘোরার অ্যাডভেঞ্চার যে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা, তা বলাই বাহুল্য৷ ব্রিটেনের এক ব্যক্তি এমন যাত্রায় বেরিয়ে ভালোমন্দ ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন৷ ধীর গতি সত্ত্বেও তিনি গন্তব্যে পৌঁছতে পেরেছেন৷

https://p.dw.com/p/4ApB3
London Peel 50 das kleinste Auto der Welt
ছবি: picture-alliance/PA Wire/C. Court

এর থেকে ছোট কোনো গাড়ি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয়নি৷ ‘পিল পি-ফিফটি' মাত্র এক দশমিক ৩৭ মিটার দীর্ঘ, যা এক বিশ্ব রেকর্ড৷ তিন চাকা ও এক সিটের এই গাড়িটি ব্রিটেনের ক্ল্যাসিক ডিজাইনের দৃষ্টান্ত৷ পথে নামার অনুমতিও এর আছে৷

লন্ডনের দক্ষিণে উইভেল্সফিল্ডের বাসিন্দা অ্যালেক্স অর্চিনের অদ্ভুত ভিন্টেজ গাড়ির প্রতি দুর্বলতা আছে৷ ‘পিল পি-ফিফটি' গাড়ির ইঞ্জিন আসলে মোপেডের, এমনকি ব্যাক গিয়ারও নেই৷ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গড় গতিবেগ ৩৭ কিলোমিটার৷ তা সত্ত্বেও তিনি বেশ ঘনঘন এই ক্ষুদ্র গাড়িটি চালান৷ অ্যালেক্স বলেন, ‘‘এই গাড়ি দেখে মানুষের প্রতিক্রিয়া আমার সবচেয়ে ভালো লাগে৷ যেখানেই যাই, আনন্দ ছড়িয়ে দেয় এই গাড়ি৷ আমি এই গাড়ি আরও দূরে নিয়ে যেতে চাই৷ ভাবলাম কেন আমি বিশ্বের ক্ষুদ্রতম গাড়ি নিয়ে ব্রিটেনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবো না৷ অর্থাৎ গোটা দেশ কেন ঘুরবো না!''

যেমন কথা তেমনি কাজ৷ ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে অ্যালেক্স তাঁর ‘পিল পি-ফিফটি' নিয়ে স্কটল্যান্ড উপকূলের জন ও'গ্রোটস থেকে যাত্রা শুরু করেন৷ তারপর প্রায় ১,৪০০ কিলোমিটার জুড়ে ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে কর্নওয়ালের ল্যান্ডস এন্ড-এ এসে পৌঁছান৷

সঙ্গে ছিলেন জোয়েলি ব়্যাফল নামে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু৷ তিনি ক্যাম্পার চালিয়ে অ্যালেক্সকে অনুসরণ করেন৷ অ্যালেক্স মনে করেন, ‘‘এমন কাণ্ড করতে হলে বেশ পাগল ও ছিটগ্রস্ত হতে হয়৷ কারণ এই গাড়ি চালানো বেশ মজার হলেও ঠিক আরামদায়ক নয়৷ এটা সহিষ্ণুতারও পরীক্ষা বটে, কারণ প্রতিদিন ১০০ মাইলেরও বেশি দীর্ঘ পথে একই ভঙ্গিতে বসে থাকতে হয়৷ তিন সপ্তাহ ধরে আমাকে সেটাই করে যেতে হয়েছিল৷''

সবচেয়ে ছোট গাড়িতে ব্রিটেন ভ্রমণ

আসলে গত শতাব্দীর ষাটের দশকে ‘পিল পি-ফিফটি' উৎপাদন করা হতো৷ এটি সেই মডেলেরই হুবহু নকল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও মোটেই বেশি আরামদায়ক নয়৷ কোনো মডেলেই হিটিং সিস্টেম, যথেষ্ট জায়গা এবং আরামদায়ক সিট নেই৷ সেই সমস্যা তুলে ধরে অ্যালেক্স বলেন, ‘‘গাড়ি চালাতে হলে এমনভাবে বসতে হয়৷ একেবারে চেপে বসতে হয়৷ আমার মতো দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হলে কানে ইয়ার ডিফেন্ডার লাগানো জরুরি৷ তাই চালানোর সময় আমিও পরেছিলাম৷ আমার ডান হাঁটুর নীচে খোলসের নীচেই ইঞ্জিন৷ সেটি বিকট শব্দ করে৷''

অ্যালেক্স অর্চিন ও জোয়েলি ব়্যাফল তাঁদের যাত্রার ভিডিও ‘ফরওয়ার্ড টু দ্য পাস্ট' নামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করেন৷ এভাবে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে বিশেষ স্থানে আমন্ত্রণও পেয়েছেন৷ মূল পথ থেকে বার বার বিচ্যুত হয়ে অপ্রত্যাশিত অ্যা়ডভেঞ্চারেরও স্বাদ পেয়েছেন তাঁরা৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অ্যালেক্স অর্চিন বলেন. ‘‘ব্ল্যাকপুল টাওয়ার সফর ছিল আমার কাছে বেশ অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতা৷ আমি সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে গাড়ি কাঁধে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠেছিলাম৷ তারপর লিফটে করে টাওয়ারের উপরে পৌঁছেছিলাম৷''

অ্যালেক্স অর্চিনকে সমস্যার মুখেও পড়তে হয়েছে৷ বেশ কয়েকবার দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছে, টায়ার দ্রুত ক্ষয়ে গেছে এবং ক্লাচেও সমস্যা দেখা গেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘একটা সময়ে আমাকে সত্যি বেশ বেগ পেতে হয়েছে৷ ভীষণ ঠাণ্ডার মধ্যে বরফের উপর আমাকে গাড়ি মেরামত করতে হয়েছে৷ সেদিন বাতাসের গতিবেগও ছিল বেশি৷ হাড় হিম করা সেই দিনে আমি সত্যি কষ্ট পেয়েছিলাম৷''

তবে অ্যালেক্স কখনোই হাল ছাড়তে প্রস্তুত ছিলেন না৷ তিন সপ্তাহ পর ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি অবশেষে চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌছাতে সক্ষম হলেন৷ যাত্রার সময়ে তিনি ব্রিটেনের নানা জনহিতকর সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন৷ সেইসঙ্গে নিজের দেশের নতুন এক দিকও আবিষ্কার করেছেন৷

ডিনা অসিনস্কি/এসবি