1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্রসফায়ার ও গণপিটুনি

২২ জুলাই ২০১৯

দুইদিন ধরে বিষয়টি ভাবছি৷ কোনো কূল কিনার পাচ্ছি না অবশ্য৷

https://p.dw.com/p/3MVdF
Rapid Action Battalion RAB Spezialeinheit Militär Dhaka Bangladesh
ছবি: Getty Images/AFP

টেলিভিশনে দেখে, খবরের কাগজ পড়ে আর ফেসবুকে ইতিউতি দেখে যা জানলাম, একজন নারী স্কুলে গেলেন তাঁর বাচ্চার ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে৷ এসময় তাঁর সঙ্গে কার যেন কথা কাটাকাটি হলো৷ খুন হওয়া নারী ওই স্কুলের শিক্ষকদের কক্ষে বসে থাকা অবস্থায় কলাপসিবল গেট ভেঙে একদল লোক তাঁকে বার করে নিয়ে যায়৷ ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলে৷ বেশ কিছু দর্শক ছবি তুলে রাখে পুরো ঘটনার৷ 

আমার মনে হয় ওই হত্যাকারীদের কেউ হয়তো এই মুহূর্তে আমার এই লেখাও পড়ছেন৷ ওইখানে দাঁড়িয়ে থেকে যারা হাড়গোড় ভাঙার শব্দ শুনছিলেন, ভালো একটি এঙ্গেল খুঁজছিলেন ছবি তোলার - তাদের কেউ কেউও নিশ্চয়ই এ সংক্রান্ত লেখা পড়ছেন, ছবি দেখছেন! তারা কি লোকমা মেখে ভাত খাচ্ছেন আর আফসোস করছেন আহারে চার বছরের বাচ্চাটা ভাত না খেয়ে বসেছিল মায়ের জন্য? নাকি তারা ভাবছেন, শুধু শুধু তো ঘটনা ঘটে না, ওই নারী নিশ্চয়ই কিছু করেছেন৷ 

গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে একাত্তর টেলিভিশনে একজন অতিথি প্রশ্ন করেছিলেন, দেশে ক্রসফায়ার উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে বা বাড়ছে কিনা? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চোখের পলক না ফেলে বললেন, বিচার বহির্ভূত হত্যা তো এই দেশে হচ্ছে না, উৎসাহ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না!

সিরিয়াসলি, মিস্টার হোম মিনিস্টার? মাননীয় মন্ত্রী কথাটি বলে ফেলে আপনি কি আপনার দৈনন্দিন কাজকর্ম করছেন? পরিবারের কোনো শিশুর সঙ্গে খেলা করছেন, কাউকে না কাউকে শিখাচ্ছেন সত্যের শক্তি?

Khaled Muhiuddin
খালেদ মুহিউদ্দীন, প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগছবি: DW/P. Böll

ফিরে আসি আমাদের কথায়৷ আমরা যারা ওই নারীকে পিটিয়েছি, যারা দাঁড়িয়ে দেখেছি বা ছবি তুলেছি তাদের মনের ভেতর আসলে কী চলছিল? আমরা কেন মনে করছি আমাদের বিচার করার যোগ্যতা রয়েছে? কেন বিচার এতো সোজা মনে হয় আপনাদের কাছে?

টেলিভিশনগুলোর কেউ কেউ দেখছি নিহতের বাচ্চাগুলো দেখাচ্ছেন, তাদের কষ্ট আর অনুভূতি জানাচ্ছেন আমাদের৷ এই কাজটা আর না করার অনুরোধ করছি৷ আর একটি বিশেষ অনুরোধ, উপসংহারে পৌঁছানোর আগে আরেকটু ভাবুন, জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই!

রাষ্ট্রব্যবস্থা তার অক্ষমতা ঢাকতে আষাঢ়ে গল্প সাজায় তা আমরা বরাবরই দেখছি৷ কিন্তু আমরা যেন সেই ঢাকের কাঠি না হই আর৷

Khaled Muhiuddin
খালেদ মুহিউদ্দীন ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের প্রধান। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত।
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য