ক্যানাডায় কেমন আছেন সৌদি তরুণী রাহাফ?
পারিবারিক নির্যাতন এড়াতে ব্যাংককে পালিয়ে যান সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুন৷ পরিবারের কাছে ফেরত যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় নেন ক্যানাডাতে৷ কিভাবে সামলেছেন এ পরিস্থিতি, ক্যানাডায় কেমন আছেন তিনি?
শুরুতে থাইল্যান্ডে
কুয়েত থেকে পালিয়ে প্রথমে থাইল্যান্ড বিমানবন্দরের একটি হোটেলে আশ্রয় নেন রাহাফ৷ নিজের পরিস্থিতি বর্ণনা করে পরিবারে ফিরে যেতে অস্বীকার করলে আন্তর্জাতিক মহলের চোখে পড়েন তিনি৷ এক পর্যায়ে থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাঁকে স্বাগত জানান৷
টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলেন রাহাফ
হোটেলে অনেকটা বন্দি থাকলেও বাইরের জগত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাননি তিনি৷ তাই নিজের অবস্থান জানাতে টুইটারে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন রাহাফ৷ এ সময় তিনি ‘অ্যাসাইলাম’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে একটি ক্যাম্পেইনও শুরু করেন৷ কখনো ফটো, কখনো ভিডিও প্রকাশ করে প্রতিনিয়তই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান নিজের সর্বশেষ অবস্থান৷
অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা
প্রথমে থাইল্যান্ড সরকার তাঁকে আশ্রয় দেবে না বলে জানায়৷ তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর কথাও ভাবছিল থাইল্যান্ড সরকার৷ পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝতে পেরে রাহাফ তাঁর বন্ধুর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার একটি বিমান টিকেট কেনেন৷
হেটেলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা
হোটেলে রাহাফের অবস্থান জানতে পেরে সেখানে তাঁর সাথে কথা বলতে যান থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা৷
থাইল্যান্ডে প্রবেশের অনুমতি
বিমানবন্দরের হোটেলে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা থাকার পর, আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপে থাইল্যান্ড সরকার তাঁকে সে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়৷
জাতিসংঘের কর্তাব্যক্তিরাও পাশে
পারিবারিক নির্যাতন এড়ানোর জন্য থাইল্যান্ডের হোটেলে আশ্রয় নিয়েছিলেন রাহাফ৷ সার্বিক অবস্থা জানতে পেরে তাঁকে সাহায্য করার জন্য ছুটে যান জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কর্মকর্তারা৷
বিদায় থাইল্যান্ড
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদ্যোগের পর ক্যানাডা সরকার তাঁকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়৷ থাইল্যান্ড ত্যাগের আগে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কার্যালয়ের সামনে একটি ছবি তুলতে ভোলেননি রাহাফ৷
‘আমি পেরেছি’
থাইল্যান্ড থেকে ক্যানাডাগামী বিমানে বসে নিজের পাসপোর্টের একটি ছবি টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন রাফাহ৷ ছবির ক্যাপশনে লিখে দেন ‘আমি পেরেছি’৷
ক্যানাডায় উষ্ণ অভ্যর্থনা
আন্তরিকভাবেই রাহাফকে গ্রহণ করে ক্যানাডা সরকার৷ পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে ক্যানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড তাঁকে স্বাগত জানান৷
সৌদি সরকারের বক্তব্য
সৌদি আরবে নারী অধিকার বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ৷ নির্যাতন এড়াতেই পরিবার ছেড়ে পালিয়েছেন রাহাফ৷ ঘটনার কয়েকদিন পর সৌদি সরকারের জাতীয় মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান এক বিবৃতিতে রাহাফের কর্মকাণ্ডকে ‘পারিবারিক মূল্যবোধবিরোধী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন৷