কেমন হলো মুগাবে-উত্তর জিম্বাবোয়ের প্রথম নির্বাচন?
রবার্ট মুগাবের পতনের পর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে জিম্বাবোয়েতে৷ প্রায় চার দশকের শাসনের পর গত বছর পদত্যাগে বাধ্য হন মুগাবে৷ বিশ্লেষকদের ধারণা, আগামীর জিম্বাবোয়ে কোন পথে যাবে তা নির্ধারণ হতে চলেছে এই নির্বাচনেই৷
মুগাবে-পরবর্তী জিম্বাবোয়ে
১৯৮০ সালে জিম্বাবোয়ে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত মুগাবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ ১৯৮৭ সাল থেকে টানা ৩০ বছর ছিলেন প্রেসিডেন্ট৷ ২০১৭ সালের নভেম্বরে ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন এমনানগাগওয়াকে বরখাস্ত করেন মুগাবে৷ গুজব ছড়িয়ে পড়ে স্ত্রী গ্রেস মুগাবেকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোযণা করতে যাচ্ছেন তিনি৷ এরপর দেশটির সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে এবং নিজ দলের নেতাদের বিরোধীতায় পদত্যাগে বাধ্য হন মুগাবে৷
অর্থনৈতিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা
মুগাবের অধীনে তীব্র মূল্যস্ফীতিতে ভুগছিল জিম্বাবোয়ে৷ যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউসহ নানা দেশের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবার চাঙ্গা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে দেশটি৷
তরুণদের উৎসাহ
কয়েক দশকে প্রথম কোনো সুষ্ঠু নিরবাচন হয়েছে বলে মনে করেন জিম্বাবোয়ের নাগরিকরা৷ ফলে তাঁদের মধ্যে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের মধ্যে চিল ব্যাপক উৎসাহ৷ জিম্বাবোয়ের ৫৬ লাখ নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই তরুণ৷ সকালে ভোট শুরুর আগে থেকেই তাঁরা ভীড় জমান ভোটকেন্দ্রে৷ প্রায় ৭৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
শান্তিপূর্ণ ভোট
জিম্বাবোয়ের অতীত সব নির্বাচনেই ব্যাপক হারে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল৷ তবে এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে দাবি দেশটির নির্বাচন কমিশনের৷
এমারসন নানগাওয়া
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাওয়া ক্ষমতাসীন জানু-পিএফ দল থেকে নির্বাচন করেছেন৷ রাজনৈতিক কূটচালের জন্যই তিনি দেশটিতে ‘ক্রোকোডাইল’ নামেও পরিচিত৷ নির্বাচনে জয় পেলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছেন৷
নেলসন চেমিসা
এমডিসি অ্যালায়েন্স থেকে নানগাগওয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়েছেন চেমিসা৷ মাত্র ২৫ বছর বয়সে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া এই নেতাও অর্থনীতি শক্তিশালী করা, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভোটারদের৷ বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের মধ্যে তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা৷
মুগাবের সংবাদ সম্মেলন
ঠিক ভোটের আগের দিনই সংবাদ সম্মেলন করে নিজের সাবেক দল জানু-পিএফকে ভোট দেবেন না বলে ঘোষণা দেন মুগাবে৷ বাকি ২২ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেয়ার কথাও জানান তিনি৷ নানগাগওয়ার অভিযোগ, চেমিসাকেই সমর্থন দিতে সমর্থকদের উসকে দিয়েছেন মুগাবে৷
প্রতিক্রিয়া
এখনও নির্বাচন কেমন হয়েছে, তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া আসেনি আন্তর্জাতিক মহল থেকে৷ এখনও এ নিয়ে মন্তব্যের সময় আসেনি বলে জানিয়েছে ইইউ৷ তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জানু-পিএফকে ক্ষমতা থেকে নামাতে না পারলেও শক্তিশালী বিরোধী দল থাকবে পার্লামেন্টে, এটা অন্তত নিশ্চিত৷