কেন জার্মানি পর্যটকদের পছন্দ?
ভ্রমণের জন্য স্পেনের পর ইউরোপীয়ানদের সবচেয়ে পছন্দের গন্তব্য জার্মানি৷ ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে এক ভিন্ন পরিবেশে সময় কাটানোর জন্যই ছুটে যাওয়া জার্মানিতে৷
বার্লিন এখনো ‘সেক্সি’
চোখ ধাঁধানোতে এখনো পারদর্শী বার্লিন৷ ২০১৮ সালে এক কোটি ৩৫ লাখ লোক ভ্রমণ করেছেন এ শহর৷ যদিও এখন শহর কর্তৃপক্ষ পার্টির চেয়ে সাংস্কৃতিক পর্যটনকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, বার্লিনে গেলে মিলবে দু’টোই৷ দিনে শহরঘুরে ইতিহাস চষে বেড়ান আর রাতে ঐতিহ্যবাহী সব ক্লাব ও ডিস্কোতে মজা করুন৷
চটকদার ড্রেসডেন
স্যাক্সনি রাজ্যে সবসময়ই ইউরোপ ও তার বাইরের পর্যটকদের আনাগোনা৷ ২০১৮ সালে ব্র্যুলের টেরেস থেকে শুরু করে সুইঙ্গার প্যালেস ও পুনর্নির্মিত ফ্রাউয়েন কির্শে পর্যন্ত বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে৷ লাইপসিশের সংগীতময় ইতিহাস কিংবা এয়ার্সগেবির্গে পর্বত, স্যাক্সনি রাজ্য আগের চেয়ে ১০ ভাগ বেশি পর্যটক টেনেছে৷
মিউনিখের অক্টোবরফেস্ট
বিয়ার মানেই তো বাভেরিয়া রাজ্য৷ মিউনিখের অক্টোবরফেস্টে ২০১৮ সালে ৬৩ লাখ পর্যটক এসেছেন৷ বিদেশি পর্যটকদের পছন্দের জায়গা বাভেরিয়া৷ সমৃদ্ধ থিয়েটার, মিউজিয়াম ও অপেরা হাউসের জন্য জার্মানির শিল্প ও সংস্কৃতির শহর হিসেবে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস মিউনিখকে সবচেয়ে এগিয়ে রেখেছে৷
মেকলেনবুর্গ-পশ্চিম পোমেরানিয়া
বাল্টিক সাগরের বিচগুলোর পাশে মনোরম এমন রিসোর্ট, কিংবা নৈসর্গিক হানসিটিক শহরগুলো দিন দিন পর্যটকদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে৷ ২০১৮ সালে এসব অঞ্চলে পর্যটকদের রাত্রিযাপন বেড়ে গেছে৷
বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ
দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানিতে পর্যটকরা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি বার রাত্রিযাপন করেছেন৷ এরমধ্যে ব্ল্যাক ফরেস্ট সবচেয়ে এগিয়ে৷
রাজকীয় দুর্গ ও প্রাসাদ
জার্মানি দুর্গ ও প্রাসাদের দেশ৷ হাজার হাজার এমন অবকাঠামো এখানে৷ সঠিক সংখ্যা জার্মানরাও জানেন না৷ বাভেরিয়ার নয়শোয়ানস্টাইন এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত৷ ভেতরে সংস্কার কাজ চলছে৷ তারপরও ২০১৮ সালে ১৫ লাখ দর্শনার্থী এসেছেন এখানে৷
ওয়াইন পর্যটন
ওয়াইনের ভূগর্ভস্থ ভাণ্ডার প্রদর্শন, কিংবা ভিন্টার বা ওয়াইন প্রস্তুতকারীদের সঙ্গে হেঁটে হেঁটে ওয়াইন তৈরির পুরো প্রক্রিয়া দেখা অথবা ওয়াইন চেখে দেখা – এ সবই ওয়াইন পর্যটনের মধ্যে পড়ে৷ এমন অভিজ্ঞতা নিশ্চিত হবে রাইনহেসেন, ফ্রাংকোনিয়া কিংবা মোজেল অঞ্চলে গেলে৷ নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওয়াইন চেখে দেখতে অনেক পর্যটক আসেন জার্মানিতে৷ প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন ইউরো তারা বছরে খরচ করেন এর পেছনে৷
নৌ-ভ্রমণ
অনেক পরিবেশবাদীর আপত্তি সত্ত্বেও জার্মানিতে নৌ-ভ্রমণ বাড়ছে৷ শুধু ডানিয়ুব বা রাইন নদীতেই নয়, ড্রেসডেন ও হামবুর্গ শহরের মাঝে এলবে নদীতেও পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে৷
রোম্যান্টিক রোটেনবুর্গ
এখন তো সারাবিশ্বেই ক্রিস্টমাস মার্কেট দেখা যায়৷ কিন্তু জার্মানিতে একটাই মার্কেট আছে, যেটা খোলা থাকে বছরের ৩৬৫ দিন৷ সেটি হলো রোটেনবুর্গ শহরের !‘ক্যাথে ভোলফার্ট ক্রিস্টমাস ভিলেজ’৷ শহরটির মধ্যযুগীয় ধাঁচ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, বিশেষ করে মার্কিন ও এশিয়ান পর্যটকদের৷ বছরে ২০ লাখ পর্যটক আসেন এখানে৷
২০১৯-এ কী হবে?
২০১৯ সালে জার্মানির বিখ্যাত স্থাপত্যকলা ও নকশা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাউহাউসের শতবর্ষ পূর্তি৷ এ উপলক্ষ্যে শুধু বার্লিনে নয়, ভাইমার ও ডেসাউতে (ছবিতে দেখা যাচ্ছে) প্রদর্শনী আয়োজিত হতে যাচ্ছে৷ প্রদর্শনী শুরু হলে ২০১৯ সালে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক জার্মানিতে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷