কুড়ি বছর পর দুই জার্মানির টিন এজাররা
২ অক্টোবর ২০১০ফ্রাঙ্কফুর্ট আন ডেয়ার ওডার শহরটি একেবারে পোল্যান্ডের সীমান্তে অবস্থিত৷ এই শহরে বেকারত্বের হার অত্যন্ত বেশি৷ সাবেক পূর্ব জার্মানি নিয়ে যখনই কোন লেখালিখি করা হয়, সবার আগে আসে এই ‘বেকারত্ব'র কথা৷ কথাগুলো জানায় ১৭ বছর বয়সী স্কুল ছাত্র ফ্লোরিয়ান৷ সে আরো বলল, ‘পূর্ব জার্মানির মানুষরা দরিদ্র, কট্টরপন্থী, বেকার – এছাড়া আর কিছুই শোনা যায় না৷'
ফ্লোরিয়ানের দুই বন্ধু কাটি আর ইয়র্ন৷ সবাই এক স্কুলেই পড়ছে৷ সবাই নিজের শহরটিকে পছন্দ করে, ভালবাসে৷ তাই এই শহর নিয়ে নেতিবাচক কোন বক্তব্য বা মন্তব্য তাদের মেনে নিতে কষ্ট হয়৷
তবে একটি কথা সত্যি৷ গত ২০ বছরে শহরের জনসংখ্যা কমে গেছে অনেক৷ ফ্রাঙ্কফুর্ট আন ডেয়ার ওডার শহরের তরুণ প্রজন্মকে যদি দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে সবাই, সাবেক পশ্চিম জার্মানির সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বলবে৷ অনেক আগে থেকেই কাজের জন্য, ক্যারিয়ার গড়ার জন্য জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলই তাদের জন্য আদর্শ জায়গা৷
বর্তমানে সাবেক পূর্ব জার্মানিতে বেকারত্বের হার প্রায় ১১.৫ শতাংশ – যা পশ্চিম জার্মানির প্রায় দ্বিগুণ৷ ১৯৯০ সালে ফ্রাঙ্কফুর্ট আন ডেয়ার ওডার শহরে বসবাস করতো প্রায় আটাশি হাজার মানুষ৷ দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের পর প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পাড়ি দিয়েছে পশ্চিমাঞ্চলে৷ ফ্লোরিয়ান ‘অটোমোটিভ' বা যানবাহন তৈরির বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়৷ কিন্তু সাবেক পূর্ব জার্মানিতে এ ধরণের বিষয় নিয়ে পড়ার কোন সুযোগ নেই৷ ফ্লোরিয়ানকে আসতে হবে পশ্চিমে৷ কিন্তু সে নিজের শহর ছেড়ে খুব বেশি দূরে যেতে আগ্রহী নয়৷
কুড়ি বছর পর দুই জার্মানির তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পার্থক্য এখনো যথেষ্ট বেশি৷ কারণ পূর্বের সবার মধ্যেই ‘এক ধরণের দেয়াল রয়েছে' – কোন না কোনভাবে এই মনোভাব পশ্চিমের তরুণ প্রজন্মের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে৷
গণতন্ত্রের বিভিন্ন প্রশ্নেও সাবেক পূর্ব জার্মানির ছেলে-মেয়েদের কাছ থেকে তেমন কোন উত্তর পাওয়া যায় না৷ কারণ, গণতন্ত্রের প্রশ্নে সাবেক পূর্ব জার্মানি পশ্চিম থেকে অনেক পিছিয়ে৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন