কিরঘিজস্তানে জনতার বিদ্রোহ
কিরঘিজস্তানে এখন বিক্ষুব্ধ জনতার শাসন চলছে। তাঁরাই জেল থেকে বের করে আনছেন বিরোধী নেতাদের। ঠিক করছেন শাসক।
ভোটের ফলের পর বিক্ষোভ শুরু
কিরঘিজস্তানে সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে বিরোধীরা জিততে পারেনি। কিন্তু তারপরই শুরু হয় গণবিক্ষোভ। অভিযোগ, কারচুপি করে, ভোটদাতাদের ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে জিতেছে শাসকরা। বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় নেমে আসে। শুরু হয় বিক্ষোভ।
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
প্রতিবাদী জনতা প্রথমে এসেছিল বিশকেকের সেন্ট্রাল স্কোয়ারে। সেখানে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষও হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়েছে। কিছু বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ছিল প্রচুর। তাই পুলিশের প্রতিরোধ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
পার্লামেন্ট দখল
কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রতিবাদী জনতার দখলে চলে যায় দেশের পার্লামেন্ট। বন্ধ গেট ভেঙে তাঁরা ঢুকে পড়েন সেখানে। প্রতিটি ঘরে ঢুকে পড়েন প্রতিবাদী জনতা। তাঁরা ছবি তোলেন। অফিসারদের চেয়ারে বসেন। নিরাপত্তা রক্ষীরা ততক্ষণে উধাও।
প্রেসিডেন্টের অফিসও জনতার দখলে
পার্লামেন্ট ভবনেই প্রেসিডেন্টের অফিস। সেটাও জনতার দখলে চলে গেছে। অফিসে ছড়িয়ে আছে কাগজপত্র। বিক্ষোভকারীরা সেই ছবি তুলে যাচ্ছেন।
জেল থেকে বের করা হচ্ছে নেতাদের
বিক্ষোভকারীরা ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির বাড়িতে একটি কারাগার থেকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট অ্যালমাজবেক অ্যাটামবেয়িভকেও মুক্ত করে দিয়েছেন। জেল থেকে মুক্ত করা হয়েছে বিরোধী নেতা জাপারভকে। তিনিই এখন কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী। নির্বাসনে থাকা সাবেক মেয়র ফিরে এসেছেন।
পোড়া গাড়ি
জনতার বিক্ষোভের আগুনে পুড়েছে রাজধানী বিশকেকে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে রাখা বেশ কিছু গাড়ি। কিছু রাস্তায় ছড়িয়ে আছে তাণ্ডবের ছবি।
প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা
বিক্ষুব্ধ জনতার চেহারা দেখে ইস্তফা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরোনভ। তারপর কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে জাপারভকে। কয়েকদিন আগে তিনি জেলে বন্দি ছিলেন, আজ তিনিই প্রধানমন্ত্রী।
জনতার শাসন
বিভিন্ন শহরে জনতা গিয়ে ক্ষমতাসীন মেয়রদের সরিয়ে দিচ্ছে। হঠিয়ে দেয়া হয়েছে অন্য সরকারি পদে থাকা কর্মকর্তাদের। বিভিন্ন শহরে কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে ক্ষমতা হস্তান্তরের তদারকি করার জন্য।
জোর যাঁর, পদ তাঁর
যে বিরোধী দলের সমর্থক বেশি, তাদের জোরও বেশি। হয়ত একশজন মানুষের কোনও দল শহরের একটি পদে তাঁদের নেতাকে একটি পদে বসিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পরে অন্যদলের আরো বেশি সমর্থক এসে তাঁকে সরিয়ে নিজেদের নেতাকে বসিয়ে দিলেন। এমন ঘটনাও ঘটছে।
কোন দিকে কিরঘিজস্তান
জনতার বিদ্রোহের পর চারদিকে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে কিরঘিজস্তানে। একটি হোটেলের ঘরে বসে ৩৫ জন এমপি জাপারভকে কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী বলে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তারপর আরেকটি গোষ্ঠী দাবি করেছে, তাদের নেতাকে কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। অনেকের দাবি, পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকা হোক। এমপিরা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করুক।
জনতার তৃতীয় বিদ্রোহ
এর আগে ২০০৫ ও ২০১০ সালেও জনতার বিদ্রোহ হয়েছে কিরঘিজস্তানে। তখনও শাসকদের হঠিয়ে দিয়েছে জনগণ। সে সময় লুঠতরাজ, দাঙ্গা সবই হয়েছে। এ বারও সেরকম অরাজক অবস্থার দিকে কি যাচ্ছে কিরঘিজস্তান?