1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে ধরা পড়লেন পুলিশ অফিসার

১৩ জানুয়ারি ২০২০

জম্মু কাশ্মীরের এক পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, জঙ্গিদের সঙ্গে তার সরাসরি সম্পর্ক আছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন উচ্চপদস্থ অফিসাররা।

https://p.dw.com/p/3W78s
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Khan

জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গিদমন শাখার নাম করা পুলিশ আধিকারিক ছিলেন তিনি। পদমর্যাদায় ডেপুটি পুলিশ সুপার। সেই দাবিন্দর সিং হাতে নাতে ধরা পড়লেন কাশ্মীরে। গাড়িতে তিন জঙ্গিকে নিয়ে তিনি যাচ্ছিলেন জম্মুতে। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, কাশ্মীর থেকে ৩ জন জঙ্গি জম্মু যাচ্ছে, এই খবর তাদের ছিল। কিন্তু সেখানে যে একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারও আছেন, তা দেখে বিস্মিত পুরো পুলিশ মহল।

শনিবার সকালে দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলিশের কাছে খবর আসে দু'জন দাগি জঙ্গি একটি আই টেন গাড়ি নিয়ে দ্রুত গতিতে কাশ্মীর থেকে জওহর টানেলের দিকে যাচ্ছে। জওহর টানেল পার করলেই জম্মু শুরু হয়ে যায়। পুলিশ আরও খবর পায় যে, জম্মুতে কোনও নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে যাচ্ছে ওই দুই জঙ্গি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দক্ষিণ কাশ্মীরের সোফিয়ান অঞ্চলে রাস্তার উপর ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশ। গাড়িটি আসার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মীরা গাড়ির ভিতরে থাকা ৪ জনকে আটক করে তল্লাশি শুরু করেন। তখনই দেখা যায়, ৪ জনের মধ্যে একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক দাবিন্দর সিংহ।

দাবিন্দরের খবর পেয়ে উচ্চপদস্থ আরও অফিসাররা সেখানে পৌঁছন। এক প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ অফিসারের কথায়, উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা এসে দাবিন্দরকে বেশ কয়েকটা চড় মারেন। ততক্ষণে তাঁরা বুঝে গিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে জঙ্গিদের মদত দিতেন এই পুলিশ অফিসার। পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কাশ্মীরের পুলিশ জানায়, বাকি জঙ্গিদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হবে, দাবিন্দরের সঙ্গেও তা-ই করা হবে। তাঁকে অতিরিক্ত কোনও সুযোগ দেওয়া হবে না। ওই দিন রাত থেকেই পুলিশ, গোয়েন্দা এবং সেনার বিভিন্ন সংস্থা দাবিন্দর সহ বাকি জঙ্গিদের জেরা করতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার কাশ্মীরে যে বিদেশি দূতরা গিয়েছিলেন, তাদের দায়িত্বেও ছিলেন এই দাবিন্দর। বেশ কিছু ছবিতে বিদেশি দূতদের সঙ্গে তাঁকে দেখা গিয়েছে। এর আগে জম্মু কাশ্মীর পুলিশের জঙ্গি দমন শাখাতেও দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে টাকা তোলার একাধিক অভিযোগ আছে। শুধু তাই নয়, সংসদ আক্রমণের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আফজল গুরুর চিঠিতেও দাবিন্দরের নাম আছে। আফজল লিখেছিলেন, কাশ্মীরে থাকাকালীন তাঁকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে বিবস্ত্র করে ইলেকট্রিক শক দিয়েছিলেন দাবিন্দর। কয়েক লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন। স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে এবং স্কুটার বিক্রি করে সেই টাকা দাবিন্দরকে দিতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়। এর পর আফজলকে দাবিন্দর বলেছিলেন দিল্লিতে এক অপরিচিত ব্যক্তিকে নিয়ে যেতে। দাবিন্দর বলায় ভয় পেয়ে আফজল সেই ব্যক্তিকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছিলেন। এর পরেই সংসদ আক্রমণ হয়। আফজলের নিয়ে যাওয়া ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সংসদে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে যার মৃত্যু হয়।

কিন্তু এত দিন এ সব কোনও কথাই বিশেষ পাত্তা দেয়নি প্রশাসন। দাবিন্দরের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ থাকার বিষয় সব সময় অস্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু এ বার পুলিশের জালেই ধরা পড়লেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আর যে তিন জন ধরা পড়েছে, তাদের মধ্যে দু'জন সম্প্রতি বাঙালি ঠিকা কর্মীদের হত্যার দায়ে অভিযুক্ত। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই একাধিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার মামলা আছে।

জঙ্গিদের ধরার পরে কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে, দাবিন্দরের মতো আরও কোনও পুলিশ জঙ্গিদের সঙ্গে যুক্ত কি না।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, স্ক্রোল)