কাশ্মীর নিয়ে কে কী বলছেন
সোমবার ভারতের রাজ্যসভায় বিল পাস হওয়ার মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীর হারাতে চলেছে তার সাংবিধানিক ‘বিশেষ মর্যাদা’৷ এর প্রতিক্রিয়া কোথায় কেমন, জানুন ছবিঘরে...
ওমর আবদুল্লাহ, জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী
ওমর আবদুল্লাহসহ একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বর্তমানে গৃহবন্দি৷ রাজ্যসভায় সদ্য পাস হওয়া বিল প্রসঙ্গে ওমর আব্দুল্লাহ বেশ কয়েকটি টুইট করেন৷ সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সরকারের এই পদক্ষেপ কাশ্মীরের মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ করেছে৷ এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হবে, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত৷’’
মেহবুবা মুফতি, জম্মু ও কাশ্মীরের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী
মেহবুবা মুফতিও এখন গৃহবন্দি৷ এই পদক্ষেপের চরম বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান এভাবে বদলানো মানে কাশ্মীরের জনগণকে ক্ষমতাচ্যূত করা৷ শুধু তাই নয়, অটলবিহারি বাজপেয়ী কাশ্মীরের মানুষের কথা শুনে তারপর সিদ্ধান্তে আসার যে ধারা চালু করেছিলেন, মোদী সরকার সেই ধারাকে অসম্মান করেছে৷’’
গুলাম নবি আজাদ, কংগ্রেস নেতা
রাজ্যসভা, যেখানে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সরিয়ে নেবার প্রস্তাব পেশ করা হয়, সেখানে কংগ্রেসের বরিষ্ঠ সদস্য গুলাম নবি আজাদ এই বিলকে ‘ভারতের সংবিধানকে খুন’ করার সাথে তুলনা করেন৷ একই সুর শোনা যায় সিপিআই, সিপিআই (এম) নেতৃত্বের বক্তব্যেও৷
অরবিন্দ কেজরিওয়াল, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী
আম আদমি পার্টির নেতা ও দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এমনিতে বিজেপি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের চরম সমালোচক৷ কিন্তু কাশ্মীর বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি৷ তিনি আশা করেন যে এই পদক্ষেপের ফলে কাশ্মীরের মানুষ শান্তি ফিরে পাবেন৷
পক্ষে যে যে দল
স্বাভাবিকভাবেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রস্তাবিত এই বিলের পাশে ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ ও তাদের জোটসঙ্গীরা৷ বর্তমানে বিজেপির জোটসঙ্গি দলগুলি হলো টিআরএস, শিবসেনা, বিএসপি, এআইএডিএমকে ও টিডিপি৷ কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে কাশ্মীর বিষয়ে সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে আম আদমি পার্টিও৷
বিপক্ষে যে যে দল
ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিরোধীর আসনে বসেন কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে ও সিপিআই (এম)সহ বামপন্থি দলের সদস্যরা৷ এই দলের সাংসদরা রাজ্যসভা উত্তাল করে তোলেন কাশ্মীরের মর্যাদা বদলের এই বিল পাশ হওয়ার প্রতিবাদে৷
কাশ্মীরের দলগুলি যা বলল
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল পিডিপি অর্থাৎ পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি৷ সেই দলের সদস্যরা রাজ্যসভায় বিল পেশ করার মূহুর্তে ব্যাপক প্রতিবাদ করেন৷ প্রতিবাদস্বরূপ দুই সাংসদ ফৈয়াজ আহমেদ মীর ও নাজির আহমেদ ভারতের সংবিধান ছিঁড়ে ফেলেন রাজ্যসভায়৷ তখন তাদের বেরিয়ে যেতে বলেন রাজ্যসভার স্পিকার ভেঙ্কাইয়া নাইডু৷ পরে তারা সংসদের বাইরে প্রতিবাদ করেন৷
বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি
কাশ্মীরের মর্যাদা বদলের বিল পাশ হওয়া ঘিরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে৷ পাকিস্তান পিপলস পার্টি পিপিপি’র চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি একটি টুইটে বলেন, ‘‘এই পদক্ষেপের ফলে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে বর্তমান ভারতের আগ্রাসী ভূমিকা পরিষ্কার হয়েছে৷’’
পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রণালয় যা বলল
রাজ্যসভায় সোমবার বিল পাস হবার পর থেকেই পাকিস্তানের সরকার নড়েচড়ে বসে৷ বিদেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ‘‘এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তান ও ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের জনতা কখনোই মেনে নেবে না৷ এই সিদ্ধান্ত জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের বেঁধে দেওয়া নিয়মের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে রয়েছে৷ এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যথাযথ ব্যবস্থা নেবে৷’’