কার্নিভালের ভাষা ‘ক্যোলশ’
বিশ্বে এটাই একটিমাত্র ভাষা, যা চাইলে আপনি পান করতে পারেন৷ হ্যাঁ, ভাষার নাম ‘ক্যোলশ’, যা কিনা একইসঙ্গে কোলন শহরের বিখ্যাত বিয়ারের নামও৷ কার্নিভালের সময় এ ভাষাতেই কথা বলে এখানকার মানুষ৷ চলুন আপনাদের কয়েকটা শব্দ শিখিয়ে দেই৷
‘ফাস্টেলওফেন্ড’
ভাষার দিক থেকে জার্মানিতে তেমন বৈচিত্র্য নেই৷ গোটা দেশে একই ভাষা প্রচলিত৷ হাতে গোনা কিছু মানুষ সার্বিয়ান ও ডেনিশ ভাষায় কথা বললেও, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, প্রশাসন – সর্বস্তরে জার্মান ভাষাই প্রচলিত৷ এরপরেও অবশ্য বেশ কিছু আঞ্চলিক ভাষা বা ‘ডায়ালেক্ট’ রয়েছে জার্মানিতে৷ তারই একটা হল ‘ক্যোলশ’৷ এই ভাষায় কার্নিভালকে বলা হয় ‘ফাস্টেলওফেন্ড’৷
‘ক্যোলশ’
১১ই নভেম্বর থেকে শুরু হলেও ফেব্রুয়ারি মাসেই কার্নিভালের আসল মজা৷ এই মরশুম শুরুই হয় ‘ভাইবারফাস্টনাখট’ দিয়ে৷ এটা মেয়েদের দিন৷ এ দিন অফিসে, দোকানে, রাস্তায় টাই বাঁধা পুরুষের টাইখানা কাঁচি দিয়ে কুচ করে কেটে দেন মেয়েরা৷ প্রতিবাদ করার উপায় নেই, তবে দুঃখ করারও নেই কিছু৷ কারণ উপহার হিসাবে রয়েছে চুম্বন! সঙ্গে এক গ্লাস ‘ক্যোলশ’ হলে তো কথাই নেই!
‘ইয়েক’
রাইনল্যান্ডের কার্নিভাল মানেই বিচিত্র সাজ পোশাকের নারী-পুরষ-শিশুদের ভিড়৷ সাজ যে কত বিচিত্র হতে পারে, সেটা এই কার্নেভালে না এলে বুঝতে পারবেন না৷ পাকা মিষ্টি কুমড়ো, রকমারি ফল, পাখি, মাছ, মোরগ, গরিলা, রাজকন্যা, ক্লাউন বা ভাঁড় – কী না সেজে এ দিন ঘুরে বেড়ায় মানুষ৷ আর যারা এমন রঙচঙে পোশাক পরে সেজেগুজে রাস্তায় বের হন, তারা সকলেই হলেন ‘ইয়েক’!
‘ডে’র সোখ ক্যুট’
যার মানে হলো, ‘এই যে, কার্নিভালের প্যারেড এসে গেছে’৷ কার্নিভালে সবচেয়ে বড় প্যারেডটা বের হয় ‘রোজেনমোনটাগ’ বা গোলাপী সোমবারের দিন৷ সে’দিন শহরের সবচেয়ে বড় রাস্তাটা ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়৷ সেখানে কোনো গাড়িঘোড়া চলে না, কারণ হাজারো মানুষ প্যারেডে যোগ দেন৷ দলে দলে গান করেন, নাচেন, করেন ঠাট্টা, মশকরা৷
‘কামেলে’
প্যারেড থেকে দর্শককের উদ্দেশ্যে ছুড়ে দেয়া হয় চকোলেট, টফি আর হরেকরকম ফুল৷ আর সকলে তখন সেই চকোলেট কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে, চিৎকার করতে থাকে ‘কামেলে, কামেলে...’৷ এ যেন আমাদের পহেলা বৈশাখের চারুকলার শোভাযাত্রা, যদিও চকোলেট ছোঁড়ার কোনো নিয়ম নেই সেখানে৷ ধীরে ধীরে পানশালাগুলোয় উপচে পড়ে ভিড়৷ বাদক দলের সাথে সকলে নেচে ওঠে, বলে ওঠে ‘আলাফ’৷