1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কসরত দেখিয়ে জনপ্রিয় ফরাসি স্কেটার

৩০ জুলাই ২০২১

স্কেটিং করতে অনেকেই ভালোবাসেন৷ কিন্তু ফ্রান্সের এক স্কেটার তার দক্ষতাকে অন্য এক স্তরে নিয়ে গেছেন৷ তার ভিডিওগুলি ইন্টারনেটে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ কসরতের সঙ্গে  হাস্যরসের ছোঁয়া মানুষের মনে ধরছে৷

https://p.dw.com/p/3yJBL
ছবি: DW

চাকচিক্য তুলে ধরার বদলে ফ্রান্সের আদ্রিয়ঁ আভারলঁ মৌলিক বৈশিষ্ট্যের উপর জোর দেন৷ দর্শকরাও সেটা পছন্দ করেন৷ স্কেটার হলেও নিজের কৃতিত্বকে তিনি তেমন গুরুত্ব দেন না৷পাঁচ বছর ধরে তিনি ইন্টারনেটে নিজের ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করছেন৷

সেখানে তিনি নিজের নাম রেখেছেন ‘ট্রুম্যান বারব্যাংক’৷ আদ্রিয়ঁ হলিউড অভিনেতা জিম কেরির ‘দ্য ট্রুম্যান শো' চলচ্চিত্রের বড় অনুরাগী৷ তিনিও চারপাশের পরিবেশকে ফিল্মের সেট করে তোলেন৷ আদ্রিয়ঁ বলেন, ‘‘আমি আগেও নিজের ক্লাসে বাকিদের আমোদ দিতাম৷ আসলে আমি কোনো পরিকল্পনা করি না, ঘটনাস্থলেই অনেক কিছু স্থির হয়৷ কোনো সরঞ্জাম পেলে সেটা দিয়ে কিছু করার ইচ্ছা মনে জাগে৷’’

তাঁর ভিডিওগুলি সত্যি অনবদ্য৷ এমনকি স্কেটার না হলেও সেগুলি মানুষের পছন্দ হয়৷ আদ্রিয়ঁ বলেন, ‘‘আমি আমার নিজস্ব এক ছোট জগত সৃষ্টি করেছি৷ পুরোপুরি প্রথা মেনে না হলেও নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুযায়ী কিছু কসরৎ ঠিকমতো করার চেষ্টা করি৷ মনোরঞ্জনই আমার উদ্দেশ্য, সেরা হওয়া নয়৷ ভালো কথা, আমার স্কেচের মধ্যে কোনো সংলাপ নেই৷ ফলে ইরান, অ্যামেরিকা, পর্তুগালের মতো সব দেশের মানুষ তা বুঝতে পারেন৷’’

মাত্র চার বছর বয়সে প্যারিসের এই শিল্পী প্রথমবার স্কেটবোর্ডে পা রেখেছিলেন৷ ১৬ বছর বয়সে দিনে আট ঘণ্টা অনুশীলন করতেন৷ নিজের আশেপাশের পরিবেশ থেকেই প্রেরণা পান তিনি৷ যেমনটা তিনি প্যারিসের উপকণ্ঠে নোয়ি এলাকার এক নির্মাণের জায়গায় করেছেন৷ আদ্রিয়ঁ আভারলঁ বলেন, ‘‘এখানে আমি সাধারণত খাঁচার মাঝে নয়, বড়জোর ধারে গিয়ে স্কেটিং করতে চাইবো৷ তারপর কিছুটা উদ্ভাবনী হয়ে একটি বোর্ড ও একটি স্কেটবোর্ড নিয়ে অন্য কিছু করবো৷’’

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও স্কেটবোর্ডিং

তার সঙ্গে সবসময় কিছু সরঞ্জাম থাকে৷ মোম গড়াতে আরো সাহায্য করে৷ সঠিক স্কেটবোর্ড না থাকলে চলে না৷ এমনই কিছু সরঞ্জাম দেখিয়ে আদ্রিয়ঁ বলেন, ‘‘এর বিশেষত্ব হবে সামনের ‘নোজ' ও পেছনের ‘টেল’ গোল করে কাটা রয়েছে, যাতে ভালো করে লাফ মারা যায়৷ তাছাড়া চাকাগুলি খুব ছোট হলেও বেশ শক্ত৷ যত শক্ত হবে, তত ভালো গড়াবে৷’’

দেখতে সহজ মনে হলেও কাজটা বেশ কঠিন৷ ৩৫ বছর বয়সি আদ্রিয়ঁ স্কেটারদের মধ্যে মোটেই আর তরুণ নন৷ এমন কসরতের নেপথ্যে পরিশ্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘অনেকে ভাবে, একজন স্কেটার চুলে ঢেউ তুলে বেশ আরাম করে নিজের বোর্ড নিয়ে এগিয়ে চলেছে৷ কিন্তু এমন সব কসরৎ শরীরের জন্য চ্যালেঞ্জ৷ বিশেষ করে একই সঙ্গে দুই-তিনটি কসরৎ করলে তো বটেই৷ তাছাড়া মনের উপরেও চাপ পড়ে৷ সব সময়ে আঘাতের ঝুঁকি থাকে৷’’

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মূল কসরতগুলি স্কেচে পরিণত হয়েছে৷ ভিডিওর কারণে গোটা বিশ্ব থেকে তিনি সাড়া পাচ্ছেন৷ আদ্রিয়ঁ বলেন, ‘‘আমি অনেক বার্তা পাই৷ কেউ কেউ আমার কেরামতি দেখে আমোদ পান৷ অনেকে আবার আমাকে দেখে স্কেটিং শুরু করেছেন৷ অন্যরা বিয়ারের ক্রেটের মতো কিছু কৌশল নকল করার চেষ্টা করেন৷ অবশ্যই সে সব জেনে আনন্দ পাই৷’’

একটি ভিডিওতে স্কেটার হিসেবে তিনি নিজেকে নিয়ে মস্করা করেছেন৷ সেখানে তিনি কৌতূক হিসেবে জনপ্রিয় মার্কিন টিভি সিরিজ ‘বেওয়াচ’-এর লাইফগার্ডদের অঙ্গভঙ্গি নকল করেছেন৷ আদ্রিয়ঁ বলেন, ‘‘আর্মব্যান্ড পরে ছোট এক পুলের মধ্যে লম্ফঝম্প করতে আমার খুব মজা লেগেছে৷ সিরিজের চরিত্ররা তো বড় ঢেউয়ের উপর লাফায়৷ ফলে তফাত সত্যি চোখে পড়ার মতো৷ আমি নিজেকে কম গুরুত্ব দেবার চেষ্টা করি৷ নিজেকে বলি, আমরা শুধু স্কেটিং করি, প্রাণ বাঁচাই না৷ পায়ের নীচে বোর্ড থাকলে অহঙ্কার করা বা নিজেকে বিশাল কিছু ভাবার কারণ নেই৷ স্রেফ মজা পেলেই হলো৷’’

এই মুহূর্তে তিনি শুধু ভ্রমণের অভাব বোধ করছেন৷ তবে আইফেল টাওয়ারের সামনে কসরৎ দেখানোর সময় অন্য স্কেটাররা তাঁকে ঈর্ষা করতে পারেন বৈকি!

কাটিয়া লিয়ার্শ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য