কলকাতা ও বঙ্গবন্ধু: কলেজ জীবন থেকে ৭১-এর ব্রিগেড
কলকাতার সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। দেশভাগের আগে উত্তাল সময়ে কলকাতায় পড়েছেন তিনি। ছাত্র-রাজনীতি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ১০২ তম জন্মদিবসে ডয়চে ভেলে তুলে ধরলো কলকাতার সঙ্গে তার সেই সম্পর্কের ছবি।
মৌলানা আজাদ কলেজ
কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলার দুই কিলোমিটার দূরে মৌলানা আজাদ কলেজ। আগে নাম ছিল ইসলামিয়া কলেজ। রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের উপর এই কলেজেই আইএ-তে ভর্তি হন শেখ মুজিবুর রহমান।
থাকতেন বেকার হোস্টেলে
কলেজ চত্বরের কাছেই স্মিথ লেনে বেকার গভর্নমেন্ট হোস্টেল। ১৯১০ সালে তৈরি হয় এই ছাত্রাবাস। তরুণ মুজিবুর এই ছাত্রাবাসের আবাসিক ছিলেন। হেঁটে মিনিট চারেকের দূরত্বে কলেজ।
বঙ্গবন্ধু যে ঘরে থাকতেন
বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর ঘরে থাকতেন বঙ্গবন্ধু। ভারত ভাগের ঠিক আগে, ১৯৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষে। সেটাও ভারত তথা কলকাতার ইতিহাসে খুবই ঘটনাবহুল বছর। বঙ্গবন্ধুর কলকাতা-যোগের স্মারক হিসেবে ১৯৯৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ঘরটি সংরক্ষিত করে।
সত্যিই ঐতিহাসিক
এই ঘর এক তরুণের স্বাধীন চিন্তাভাবনা নিয়ে বেড়ে ওঠার সাক্ষী। তাঁর ব্যবহৃত খাট, চেয়ার, টেবিল, আলমারি সেই সাক্ষ্য বহন করে। দেওয়ালে ছাত্র মুজিবুরের ছবি ও প্রতিকৃতি।
বঙ্গবন্ধুকে মনে রেখে
তিনতলার এই নিভৃত কক্ষে বঙ্গবন্ধু যেন সদা উপস্থিত! বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন, কলকাতার উদ্যোগে এখানে বসেছে কিংবদন্তি নেতার আবক্ষ মূর্তি। ২০১১ সালে এটির উন্মোচন হয়। ২০১৯-এ বসে নতুন মূর্তি। ১৭ মার্চ হাই কমিশনের প্রতিনিধিরা ছাত্রাবাসে এসে শ্রদ্ধা জানান।
সেই ঐতিহাসিক ব্রিগেডের ছবি
স্মৃতি কক্ষের দেওয়ালে সময় থমকে আছে কয়েকটি সাদা-কালো ছবিতে। ব্রিগেডে ভাষণরত মুজিব, সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধী। প্রকৃতই ঐতিহাসিক সময়ে এক ঐতিহাসিক জনসভা। এছাড়া আছে পিতার আলিঙ্গনে তরুণ শেখ হাসিনা।
ইতিহাসের আলোছায়ায়
বেকার হোস্টেলের এই করিডর শেখ মুজিবের স্মৃতিধন্য। কাঠের সিঁড়ি, খড়খড়ি দেওয়া দরজার কপাটে ইতিহাসের আলোছায়া। পিতাকে স্পর্শ করতে ১৯৯৯ সালে ছাত্রাবাসে এসেছিলেন শেখ হাসিনা।
যদি দেখতে চান
শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনকথা রয়েছে দেওয়ালে। যদিও এই ইতিহাসের পাতা, সংগ্রহশালার দরজা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। বাংলাদেশ-সহ বিদেশের নাগরিকরা আগ্রহী হলে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের মাধ্যমে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাতে হয়।
ছাত্র রাজনীতিতে
আরেকটি ঐতিহাসিক ফলক। এখানে লেখা আছে ১৯৪৫-৪৬-এ মুজিবুর রহমান ছাত্রসংসদের পদাধিকারী ছিলেন। ফিল্ম আর্কাইভ-এর ডিরেক্টর ও কলকাতার উপ হাই কমিশনের প্রাক্তন কর্তা মো. মোফাকখারুল ইকবাল জানিয়েছেন, শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জন্ম কলকাতায়।
বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত টেবিলে তার বই
স্মৃতিকক্ষে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত কাঠের টেবিল আলো করে আছে শেখ মুজিব রচিত ও তাঁর সম্পর্কে লিখিত বই। অধ্যক্ষ শুভাশিস দত্ত জানিয়েছেন, তারা এবার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন।
বইমেলার প্রবেশদ্বারে
সদ্য শেষ-হওয়া কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা ছিল বঙ্গবন্ধুময়। মুজিবুর রহমান লিখিত গ্রন্থের প্রচ্ছদ শোভা পেয়েছিল বইমেলার একাধিক প্রবেশদ্বারে।