1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনায় বাড়ি থেকে কাজ, শিবচর লকডাউন    

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৯ মার্চ ২০২০

বাংলাদেশে করোনার হাত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কাজের ধরণ বিবেচনা করে ওয়ার্ক ফ্রম হোম ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছে৷ তবে এখনো কোনো প্রতিষ্ঠান শাটডাউন-এ যায়নি৷

https://p.dw.com/p/3Zi3E
Bangladesch Dhaka Coronavirus
ছবি: DW/M. Rashed

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বলেন,‘বাংলাদেশের কিছু এলাকা নজরদারীতে আছে৷ পরিস্থিতির অবনতি হলের মাদারিপুর ও ফরিদপুরের শিবচর এলাকা লক ডাউন করে দেয়া হবে৷' বিকেলে মাদারিপুরের শিবচর উপজেলা লক ডাউন করা হয়৷

বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার পদ্ধতি চালু করেছে ১৬ মার্চ থেকে৷ ঢাকায় বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কর্মীরাও এখন বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ করেছেন৷ জানাগেছে তারা পরীক্ষামূলকভাবে এটা শুরু করেছেন৷ পরবর্তীতের আরো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে৷

গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করছেন৷ বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান জানান, তারা অনলাইনে কাজের সমন্বয় করছেন৷ বাড়ি থেকে অফিস সময় অনুযায়ী তারা কাজ করছেন৷ সকাল ৯টায় কাজের প্রস্তুতি এবং দুপুর ২ টায় তারা কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করছেন অনলাইনেই৷ তিনি বলেন,‘আমরা একটি সফটওয়ারের মাধ্যমে কাজ করছি৷ সবাই লগ ইন করে কাজ করি৷ আলোচনা , মিটিং সব কিছুই এর মাধ্যমে হয়৷'

ঢাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো এই পদ্ধতিতে যায়নি৷ তবে দর্শনার্থীদের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে৷ প্রয়োজন ছাড়া কাউকে তারা অফিসে আসতে দিচ্ছে না৷ প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ সাচিবালয়ের গেটে নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে৷


বাংলাদেশে পোশাক কারখানা সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে৷ কারণ কারখানাগুলোতে একসঙ্গে অনেক শ্রমিক কাজ করেন৷ কিন্তু পোশাক কারখানায় কর্মীদের ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ নেই৷ তাই উৎপাদন অব্যাহত ও একই সঙ্গে করোনা ঝুঁকি এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে বিজিএমইএ৷ বিজিএমই জানায়, মার্চেন্ডাইজিংসহ উৎপাদনের সঙ্গে যারা জড়িত নয় তাদের বাড়িতে বসে কাজের সুযোগ দেয়া হচেছ৷ কিন্তু কর্মী এবং উৎপাদনের সাথে যারা জড়িত তাদের জন্য কর্মক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা নেয়া হয়েছে৷

ওমেগা স্টাইল লি.-এর গার্মেন্টস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল ইসলাম জানান,‘আমাদের কারখানাগুলোর কাজের পরিবেশ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শর্ত মেনে করা৷ একটি মেশিন থেকে আরেকটি মেশিনের দূরত্ব দুই মিটার৷ করোনার জন্য এক মিটার দূরত্বই যথেষ্ঠ৷ এর বাইরে আমরা স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার সব কিছুই নিশ্চিত করেছি৷ তাদের সচেতন করার জন্য চিকিৎক ও নার্সরা নিয়মিত কাজ করছেন৷'

তিনি জানান,‘পোশাক কর্মীরা অনেক সচেতন৷ তারা জানেন কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে পুরো কারখানাই বন্ধ করে দিতে হতে পারে৷ তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে তারা অনেক বেশি সচেতন এবং তারা তা মানছেন৷'

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোও এরই মধ্যে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম' নীতি যতটা সম্ভব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে৷ কর্মীদের যতটা সম্ভব বাড়িতে রেখে কাজ করানোর ব্যবস্থা করছে৷ ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান জানান,‘আমরা আমাদের সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মী যারা ঘরে বসেই কাজটি করতে পারেন তাদের ঘরে বসেই কাজ করতে বলেছি৷ খবরের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রেখে যতদূর সম্ভব আমরা কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছি৷সংবাদ সংগ্রহে যাদের বাইরে যেতেই হবে তারা যাতে সার্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন থাকে সে ব্যাপারেও আমরা সতর্ক আছি৷'

‘‘সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় হেলথ টিপস দেয়া হচ্ছে’’

টেলিভিশনের সাংবাদিকদের বাইরে কাজ বেশি করতে হয় বলে ঝুঁকিও বেশি৷ এই ঝুঁকি কতটা কমানো যায় তা নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিনগুলো৷ একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু বলেন,‘আমরা এসাইনমেন্ট কমিয়ে দিয়েছি৷ গুরুত্বপূর্ণ না হলে আমরা সাংবাদিকদের সেখানে যেতে নিরুৎসাহিত করছি৷ তাদের প্রয়োজনীয় হেলথ টিপস দেয়া হচ্ছে৷ কিন্তু  খবর পরিবেশনতো আমরা বন্ধ করতে পারব না৷'

আর গাজী টিভির সম্পাদক( কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স) অঞ্জন রায় বলেন,‘অফিসে আমরা থার্মাল থার্মোমিটার ব্যবহার করছি৷ নিয়মিত সবার শীরের তামাত্রা মাপা হচ্ছে৷ সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেন চলা হচ্ছে৷'

‘‘খবরের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখছি’’

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান খান বলেন,‘প্রতিষ্ঠানগুলোর এই ব্যবস্থাপনা অবশ্যই উপকারী৷ কিন্তু একেকটি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরণ একেক রকম৷ তাই কাজ অব্যাহত রেখে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবস্থাপনা কতটা বজায় রাখতে পারে সেটা দেখার বিষয়৷'

তিনি মনে করেন গণমাধ্যম কর্মীদের কাজ বন্ধ রাখার উপায় নেই৷ তবে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন,‘করোনা আক্রান্ত এবং করোনা সন্দেহে যারা রয়েছেন তাদের ছয় ফুটের মধ্যে যাওয়া যাবেনা৷ আর সাধারণ অবস্থায় ভীড় এড়িয়ে দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে৷ যন্ত্রপাতি ভাইরাসমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে৷ সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে৷'

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য