1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গন্ধের অনুভূতি ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা

২০ এপ্রিল ২০২১

গন্ধ ছাড়া খাবারের স্বাদ যে পাওয়া যায় না, সর্দি-কাশি-জ্বরের সময় অনেকেই সেটা হাড়ে হাড়ে টের পায়৷ করোনা সংক্রমণের কারণেও গন্ধের অনুভূতি সাময়িক অথবা দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে লোপ পেতে পারে৷

https://p.dw.com/p/3sFnp
Symbolbild Frau hält sich Nase zu
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/McPhoto

কারেন ও হাইনার রেসে পেঁয়াজসহ রুটির মধ্যে মাছভাজা খেতে ভালবাসেন৷ তবে খাবারের স্বাদ যতই ভালো হোক না কেন, কোভিড ১৯ সংক্রমণের পর থেকে তাঁদের জিবে আর কোনো স্বাদ নেই৷

এখনো পর্যন্ত গবেষণা চালিয়ে জানা গেছে যে স্বাদের অনুভূতির সঙ্গে এমন অভিজ্ঞতার কোনো সম্পর্ক নেই৷ করোনায় আক্রান্ত হলে গন্ধের অনুভূতি প্রায়ই বিঘ্নিত হয়৷ সে কারণে স্বাদও পাওয়া যায় না৷ সংক্রমণ ঘটলে ভাইরাস নাকের মিউকাস মেমব্রেনে গন্ধের কোষ ধ্বংস করে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই কোষ আবার গজিয়ে ওঠে৷ কিন্তু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সেটা ঘটতে অনেক সময় লাগে অথবা গন্ধের অনুভূতি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ কিল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ড. মার্টিন লাউডিন বলেন, ‘‘কমবেশি দশ শতাংশ ক্ষেত্রে গন্ধের অনুভূতিতে বিঘ্ন থেকে যায় বলে মনে হচ্ছে৷ সব ক্ষেত্রে সেই অনুভূতি পুরোপুরি লোপ পায় না বটে, কিন্তু কোভিড রোগের পর গন্ধের অনুভূতি বদলে যায়৷''

গন্ধের অনুভূতির ব্যাধির উৎস খোঁজা মোটেই সহজ কাজ নয়৷ প্রত্যেকটি গন্ধ বিভিন্ন গন্ধের অণু দিয়ে তৈরি৷ গন্ধের অনুভূতি সৃষ্টি করতে প্রত্যেকটি অণুকে নিজস্ব রিসেপ্টর বা গ্রাহক খুঁজতে হয়৷ করোনা ভাইরাস গন্ধের কোষ নষ্ট করে দিলে গন্ধের কিছু অণু রিসেপ্টর খুঁজে পায় না৷ ফলে মস্তিষ্কে গন্ধের বোধ অসম্পূর্ণ থেকে যায়৷ তখন বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে৷ করোনার রোগী হিসেবে হাইনো রেসে নিজের এক অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে বসার ঘর থেকে বেরিয়ে মনে হয়েছিল গ্যাস লিক করছে৷ অথচ সেটা ছিল কফি বিনস গুঁড়া করে তৈরি তাজা কফির সুগন্ধ৷''

শুধু ভাইরাসের কারণে আক্রান্ত নাকের মেমব্রেনের গন্ধ কোষের কারণেই সম্ভবত গন্ধের অনুভূতিতে বিঘ্ন ঘটে না৷ প্রাণীর উপর পরীক্ষা চালিয়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে, যে ভাইরাস গন্ধের কোষ এবং সেখান থেকে স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় এবং সেখানে গন্ধের অনুভূতি বোধের স্নায়বিক প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়৷

গন্ধের অনুভূতি বোধের উন্নতি করতে সহজ এক ট্রেনিং রয়েছে৷ একাধিক গবেষণায় তার সুফলের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ তার আওতায় রোগীদের নিয়মিত চারটি কড়া গন্ধওলা কাঠি শুঁকতে হয়৷ ড. মার্টিন লাউডিন বলেন, ‘‘সেই কাঠি নিজের নাকের নীচে ধরে সেই গন্ধ অনুভব করার চেষ্টা করতে হয়৷ সকাল-সন্ধ্যায়, অর্থাৎ দিনে দুই বার দশ থেকে পনেরো সেকেন্ড ধরে গন্ধ শুঁকতে হয়৷''

কাঠিগুলোতে গোলাপ, ইউক্যালিপটাস, লেবু ও লবঙ্গের গন্ধ রয়েছে৷ ইচ্ছে করলে যে কেউ পছন্দমতো অন্য গন্ধও বেছে নিতে পারে৷ যেমন সুগন্ধী তেল বা কড়া মসলা৷ এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গন্ধের কোনো গুরুত্ব নেই৷ গন্ধ, পেলেও কখনো তা চেনা যায় না৷ তবে তাতে কোনো ক্ষতি নেই৷ এ ক্ষেত্রে গন্ধ চেনা মূল লক্ষ্য নয়, বরং আদৌ গন্ধ পাওয়াই হলো সাফল্য৷ ড. লাউডিন বলেন, ‘‘এখানে কোনো পদার্থের গন্ধ না চিনলেও আপনার অনুশীলন চালিয়ে যাওয়া উচিত৷ অপেক্ষা করা উচিত৷ সেটা করতে গিয়ে মস্তিষ্কে গন্ধ পৌঁছানোর পথ এবং খোদ মস্তিষ্কের অনুশীলন হয়, নতুন আন্তঃসংযোগ সৃষ্টি হয়৷ দৈনন্দিন জীবনে আবার গন্ধের অনুভূতি ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়৷''

এর ফলে অবশ্যই কিছু উন্নতি হয়েছে৷ কারেন ও হাইনো রেসে আশা করছেন, যে এই ট্রেনিং-এর মাধ্যমে তাঁরা আবার স্বাদ ও গন্ধের বোধ ফিরে পাবেন৷

টিনা রোট/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান