করোনায় আক্রান্ত দশ কোটি ছাড়িয়ে গেল
২৭ জানুয়ারি ২০২১গত বছর থেকে কোভিড ১৯ প্রায় গোটা বিশ্বের স্বাভাবিক জনজীবন কমবেশি থামিয়ে দিয়েছে৷ বুধবার মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে গেল৷ অর্থাৎ সরকারি হিসেব অনুযায়ী বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক দশমিক তিন শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন৷ মৃতের সংখ্যা ২১ লাখেরও বেশি৷ এখনো পর্যন্ত গড়ে প্রতি সেকেন্ডে সাত দশমিক সাত শতাংশ মানুষ এই ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হয়েছেন৷ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ব্রাজিল, রাশিয়া ও ব্রিটেন৷ নথিভুক্ত সংক্রমণের অর্ধেকেরও বেশি এই সব দেশে ঘটেছে৷ অর্থাৎ বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ২৮ শতাংশকে বাড়তি এই ধাক্কা সামলাতে হয়েছে৷ মোট আক্রান্তের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ৷ সে দেশে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৪২৫,০০০৷
করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতিও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এই ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হবার পর প্রথম ১১ মাসে গোটা বিশ্বে পাঁচ কোটি সংক্রমণ নথিভুক্ত হয়েছিল৷ কিন্তু তারপর মাত্র তিন মাসের মধ্যে সংখ্যাটি দ্বিগুণ হয়ে গেল৷ ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় মিউটেশনের মাধ্যমে পরিবর্তিত করোনা ভাইরাসের আরও ছোঁয়াচে সংস্করণ এমন পরিস্থিতির জন্য অন্তত আংশিকভাবে হলেও দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে৷
এমন বিপর্যয় সামলাতে অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে একাধিক টিকা একে একে অনুমোদন পেলেও সেই টিকা উৎপাদন, বণ্টন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নানা জটিলতা দেখা যাচ্ছে৷ প্রায় ৫৬টি দেশ এরই মধ্যে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে৷ একমাত্র ইসরায়েল দেশের জনসংখ্যার প্রায় ২৯ শতাংশকে কমপক্ষে টিকার প্রথম ডোজ দিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে৷
অঞ্চল হিসেবে ইউরোপ করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি নাজেহাল হয়ে পড়েছে৷ সেখানে প্রতি চার দিনে নতুন করে দশ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে৷ করোনা মহামারি শুরু হবার পর থেকে প্রায় তিন কোটি মানুষ সংক্রমণের শিকার হয়েছে৷ ধীর গতিতে সরবরাহের কারণে ইউরোপের মানুষকে টিকা দিতে বিলম্ব ঘটছে৷
আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ রেখে অথবা যাতায়াতের ক্ষেত্রে কড়া নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে অনেক দেশ পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেই সব বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে চলেছেন, যারা সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছেন৷ ব্রিটেনও কয়েকটি দেশ থেকে প্রবেশের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে৷ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড মহামারির শুরু থেকেই ভ্রমণের ক্ষেত্রে এমন নিষেধাজ্ঞা ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সুফল পেয়েছে৷
জার্মানিও সীমান্তে আরো নিয়ন্ত্রণ এবং বেসামরিক বিমান চলাচল প্রায় বন্ধ করে দেবার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার বর্তমান পরিস্থিতি সামলাতে আরও কড়া পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করছেন৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)