1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনার তৃতীয় ঢেউ: শিশুস্বাস্থ্যে মোদীর ১৫ হাজার কোটি

২৯ জুন ২০২১

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মথায় রেখে শিশুস্বাস্থ্যের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করলো নরেন্দ্র মোদী সরকার। 

https://p.dw.com/p/3vjf9
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। ছবি: Hemkunt Foundation

কোনোক্রমে করোনার দ্বিতীয় ঢেউকে আটকাতে পেরেছে ভারত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক-দেড় মাসের মধ্যে আসতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। আর তৃতীয় ঢেউয়ে সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে শিশু ও বাচ্চারা। তাই করোনা প্যাকেজে শিশুদের স্বাস্থ্যখাতে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করলো মোদী সরকার।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, শিশুদের স্বাস্থ্যখাতে চলতি বছরে ২৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। তার মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে অতিরিক্ত ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ করা হবে। অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হবে। শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থার ঘাটতি দূর করা হবে। শিশুদের জন্য হাসপাতাল, বেড, আইসিইউ বেড, পর্যাপ্ত ওষুধ, অক্সিজেন ও অন্য চিকিৎসা সুবিধা তৈরির জন্য এই অর্থ খরচ করা হবে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল। অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে বেড পাওয়া ছিল লটারি পাওয়ার মতো। ওষুধ উধাও হয়ে গিয়েছিল বাজার থেকে। শ্মশান, কবরস্থানে লম্বা লাইন। গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে প্রচুর শব। এমনকী করোনা রোগীর দেহ গঙ্গায় ফেলে দেয়ার ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছেন দেশের মানুষ। গঙ্গায় বালিতে দেহ পুতেও দেয়া হয়েছিল।

এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, করোনার তৃতীয় ঢেউ আরো মারাত্মক হতে পারে। মোদী সরকারের সিদ্ধান্ত, বড় শহরের বাইরে স্বাস্থ্য পরিষেবা ছড়িয়ে দিতে ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ গ্যারান্টি দেবে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর আশা, এর ফলে বেসরকারি সংস্থাগুলি বিনিয়োগ করবে। পরিকাঠামো বাড়বে।

শিল্পক্ষেত্রে প্যাকেজ

শিল্পক্ষেত্রের জন্যও আবার করোনা প্যাকেজের কথা ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারামন। মোট আট দফা প্যাকেজে ৬ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে আগের করোনা প্যাকেজের মতো এবারেও ঋণের মাধ্যমে, গ্যারান্টি দিয়ে শিল্পগুলিকে সাহায্য করতে চেয়েছেন নির্মলা। জিডিপি-র শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ খরচ করা হচ্ছে এই প্যাকেজে বলে সরকারের দাবি। বিরোধীদের অভিযোগ, অনেক পুরনো প্রকল্প গুঁজে দিয়ে প্যাকেজের বহর বাড়ানো হয়েছে।

ঋণ গ্যারান্টির বাইরে যে ঘোষণাগুলি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, গরিবদের জন্য নভেম্বর পর্যন্ত বিনা পয়সায় অতিরিক্ত রেশন দেয়া হবে। তবে এর ঘোষণা আগেই হয়েছিল। ফের ভিসা দেয়া চালু করার পর প্রথম পাঁচ লাখ পর্যটকের কাছ থেকে কোনো ভিসা ফি নেয়া হবে না। এক হাজারের কম কর্মী আছে এমন সংস্থায় ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রভিডেন্ড ফান্ড সরকার জমা করবে। তার বেশি কর্মী হলে শুধু কর্মীদের দেয় অংশ সরকার দেবে। সব গ্রামে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা দিতে ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

কেন্দ্রীয় অর্থ পরিষেবা সচিব দেবাশিস পাণ্ডা জানিয়েছেন, ঋণ গ্যারান্টি দেয়ার উদ্দেশ্য হলো শিল্পসংস্থাগুলিকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ককে উৎসাহী করা। এই ঋণ পেলে ছোট, মাঝারি ও বড় সংস্থার হাতে টাকা আসবে।

কিন্তু বিরোধী নেতারা মোদী সরকারের এই প্যাকেজের তীব্র সমালোচনা করেছেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর টুইট, ''অর্থমন্ত্রী যে প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন, তাতে কোনো পরিবারের থাকার, খাওয়ার, ওষুধ কেনার, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো সুবিধা হবে না।''

সিপিএমের সধারণ সম্পাদক সীতরাম ইয়েচুরি বলেছেন, আগে যে সব ঘোষণা করা হয়েছিল, তারই রি-প্যাকেজিং করা হলো। এর জন্য সরকরের কোনো বাড়তি খরচ হবে না। আসলে লোকের হাতে জিনিস কেনার ক্ষমতা থাকতে হবে। তাদের বেঁচে থাকার মতো অর্থ থাকতে হবে। তাহলেই চাহিদা বাড়বে। অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। ইয়েচুরির মতে, গরিব মানুষদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টকা দিতে হবে ও তাদের বিনা পয়সায় খাবার দিতে হবে। এটাই এখন একমাত্র পথ।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই)