করোনার গণটিকার প্রথম দিন
বাংলাদেশে ২৭ জানুয়ারি টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন হলেও রোববার থেকে শুরু হয়েছে দেশব্যাপী গণহারে টিকাদান৷ টিকা নিয়েছেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে অনেক সাধারণ মানুষ৷ দেখুন ছবিঘর৷
‘আনন্দের দিন’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোববার সকালে মহাখালী স্বাস্থ্য ভবনে ভার্চুয়ালি টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন৷ পরে শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে নিজে টিকা নেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আজ আমাদের আনন্দের দিন৷ এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম৷ এই টিকা নিয়ে যেন কোনো রিউমার না হয়৷’’ অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর টিকাদানকে কেন্দ্র করে শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখে ভিড় করতে দেয়ায় সমালোচনা করেছেন অনেকে৷
অন্য মন্ত্রী ও বিশিষ্টজনেরা
সোয়া ১১টার দিকে শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান সেখানে টিকা নেন৷
প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে কোভিড-১৯ টিকা নিয়েছেন৷ তিনি সস্ত্রীক এসে কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে টিকা নেন৷ প্রধান বিচারপতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি টিকা দিয়েছি, কোনো অসুবিধা হয়নি। আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি ও হাইকোর্ট বিভাগের ৪০ বিচারপতি টিকা নিয়েছেন। সুতরাং দেশবাসীকে বলব, সবাই যেন দ্রুত নিবন্ধন করেন৷’’
সাবেক প্রধান বিচারপতি
করোনাভাইরাসের গণ টিকাদান শুরুর দিন রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক৷
‘ভয় নেই’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) টিকাদান কেন্দ্রে টিকা নেন গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী৷ টিকা নেয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি বলব, টিকা নিন সবাই, কোনো ভয় নেই৷ এটা (টিকা) আপনার অধিকার৷ যার যেদিন সময় হবে, টিকা নিয়ে নেবেন৷’’
বিএসএমএমইউতে ঢাবি শিক্ষকরা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) রোববার করোনাভাইরাসের টিকা নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক৷ তাদের সঙ্গে ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান৷
বয়স্কদের প্রাধান্য
বিশ্বের সব দেশেই করোনার টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাচ্ছেন বয়স্করা৷ ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশেও৷ হুইল চেয়ারে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এই প্রবীণ নাগরিক টিকা নিতে যাচ্ছেন৷
পুলিশ সদস্যরা
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রায় আট হাজার সদস্য টিকা নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে নিবন্ধন করেছেন৷ প্রতিদিন ৪০০ জনকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে৷ রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারদের সঙ্গে নিয়ে করোনাভাইরাসের টিকা নেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার মুহা. শফিকুল ইসলাম৷ এই ছবিটি তোলা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে৷
সাধারণ মানুষ
একটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ দেড়শ’ জনকে টিকা দেওয়া যাবে৷ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোববার সকালে করোনা ভাইরাসের টিকা নিচ্ছেন এক ব্যক্তি৷
হাজার কেন্দ্র
প্রথম দিন ঢাকাসহ সারা দেশে এক হাজার পাঁচটি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে৷ এর মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ৫০টি কেন্দ্র৷ সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে৷
নিবন্ধন প্রক্রিয়া
টিকা নেয়ার আগে ওয়েবসাইটে বা ম্মার্টফোনে অ্যাপস ব্যবহার করে নিবন্ধন করতে হবে৷ যাদের সেই নেই তারা কেন্দ্রে গেলে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেবেন৷ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে থাকা মোবাইল ফোনে পরবর্তীতে নির্দেশনা যাবে, তিনি কবে টিকা নেবেন৷
১৯১০টি দল
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ঢাকায় ৫০টি স্থানে টিকাদান কার্যক্রম চলবে৷ সেখানে কাজ করবে স্বাস্থ্যকর্মীদের ৩০০ জন৷ ঢাকার বাইরে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলিয়ে ৯৫৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এসব জায়গায় এক হাজার ৯১০টি দল টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে৷