1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনাকালে পশ্চিমবঙ্গে রক্তের সংকট

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১৫ মে ২০২০

সামাজিক দূরত্ব, লক ডাউন ইত্যাদির কারণে বিরাট ঘাটতি রক্তের সংগ্রহে, যা নিয়মিত প্রয়োজন হয় ডায়ালিসিস, ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের৷ সংকট মেটাতে নেওয়া হচ্ছে বিকল্প উদ্যোগ৷

https://p.dw.com/p/3cHcm
Pressebild Indien Organisation Bloodmates
ছবি: Bloodmates

‘‌‘‌প্রত্যেক বছরই গরমকালে রক্তের একটা সংকট হয়৷ সাধারণভাবে গরমকালে ভোটগুলো হয়৷ ভোটের কিছু বাধ্যবাধকতা, বিধিনিষেধের কারণে রাজনৈতিক দলগুলো ওই সময় রক্তদান শিবির করতে পারে না৷ ফলে গত বছর গরমকালেও একটা সংকট গেছে৷ কিন্তু এ বছর এই করোনা এবং লক ডাউন জনিত কারণে একটা ভয়ঙ্কর সংকট তৈরি হয়েছে৷'‌'‌

জানালেন শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত গৌতম সরকার৷ প্রতি বছরই এই মরশুমি সংকট দেখা দেয় বলে বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল, ব্লাড ব্যাঙ্ক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এমনকি রাজনৈতিক দলগুলিও৷ এবার লক ডাউনের কারণে সেই উদ্যোগ অনুপস্থিত৷ এছাড়া আরও কিছু বাস্তবিক অসুবিধার কথা ডয়চে ভেলেকে জানালেন গৌতমবাবু৷ বললেন, ‘‌‘আমরা ‌(‌এবার)‌শুরুই করতে পারছিলাম না লকডাউনের কারণে৷ পুলিশ থেকে অনুমতি দিচ্ছিল না৷ যদিও রক্তদান করার ক্ষেত্রে পুলিশের অনুমতির আগে কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না৷ কিন্তু যেহেতু লক ডাউন এবং সর্বত্রই ১৪৪ ধারা, সেহেতু পুলিশের একটা অনুমতির প্রশ্ন থাকে৷ পুলিশ অনুমতি পাচ্ছিলাম না রক্তদান শিবির করার ক্ষেত্রে৷ আরেকটা অসুবিধে, করোনা নিয়ে যে একটা আতঙ্ক রয়েছে মানুষের মধ্যে, যে রক্ত দিলে তার ইমিউনিটি পাওয়ার কমে যাবে, তা হলে সে অসুস্থ হয়ে পড়বে৷ আরেকটা দিক ছিল, রক্ত দিতে গেলে তার রক্তে যদি করোনা ভাইরাস থাকে, সেটা অন্যত্র ছড়িয়ে যাবে৷ এরকম কিছু কাজ করছিল মানুষের মধ্যে৷'‌'‌
ব্লাডমেটস, লাইটহাউস, লাইফ কোয়েস্ট— এরকম একাধিক স্বেচ্ছাসেবী, অলাভজনক সংগঠন আছে, যারা বছরের বিভিন্ন সময়ে নিজস্ব উদ্যোগে রক্ত সংগ্রহ করে থাকে৷ এদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত শবনম ব্যানার্জি, যিনি কলকাতা শহর এবং শহরতলীর যে রক্তের চাহিদা, তা মেটানোর এক সমবেত প্রয়াসে সামিল৷ তিনি জানাচ্ছেন, করোনা লক ডাউনের কারণে যেহেতু অন্যান্যবারের মতো রক্তদান শিবির করা যাচ্ছে না, মোবাইল ব্লাড কালেকশন ভ্যান নিয়ে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে পাড়ায় পাড়ায়৷ যাতে রক্ত দিতে উৎসাহী লোককে বাড়ি থেকে দূরে যেতে না হয়৷
বর্তমান পরিস্থিতিতে এই মোবাইল ইউনিটগুলো কীভাবে কার্যকর হচ্ছে বোঝাতে গিয়ে শবনম ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‌‘‌ছোট ভ্যানে তিনটে বেড থাকে, বড় ভ্যানে ছ'‌টা বেড থাকে৷ বড় ভ্যান একটা এসি বাস৷ একটা করে বেড বাদ দিয়ে যদি আমরা ডোনেশন করাই, তা হলে ছ'‌ফুট ডিস্ট্যান্স থাকে৷ এই ভ্যানগুলো, সরু গলি ছাড়া, যে কোনও মেইন রোডে যেতে পারে৷ এই ভ্যানগুলোকে ডিসইনফেক্ট করা যায়, স্যানিটাইজেশন করা যায়৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্মেন্টের ১০টা আছে, স্বাস্থ্য ভবন থেকে পারমিশন নিয়ে যেটা বের করতে হয়৷ এছাড়া প্রাইভেট আছে৷ বারাসত ব্লাড ব্যাঙ্কের আছে, লাইফ কেয়ার–এর আছে, মানিকতলা (‌ব্লাড ব্যাঙ্ক)‌–এর আছে৷ এরকম মোবাইল ভ্যান আছে৷ এতে সুবিধে দুটো৷ এতে সুবিধে দুটো, এই মুহূর্তে৷ এক, ব্লাড ব্যাঙ্কে গেলে, সেখানে যত ভিড়, ওখানে ঠিকঠাক স্যানিটাইজেশন হচ্ছে কি না আমরা জানি না৷ এক্ষেত্রে কন্ট্রোলটা টু সাম এক্সটেন্ট আমাদের হাতে থাকবে, বা আমরা সুপারভাইজ করতে পারব৷ দ্বিতীয় যেটা, সেটা হচ্ছে, লোককে এই সিচুয়েশনে (‌রক্ত দিতে)‌বাড়ি থেকে দূরে যেতে হবে না৷ এটা এই মুহূর্তে অত্যন্ত ইম্পর্ট্যান্ট একটা স্টেপ৷'‌'‌
শবনম জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি নিয়ে সরকারি গাড়ি পাওয়া একটু কঠিন, যেহেতু বড় রক্তদান শিবিরের উদ্যোক্তারা সেই বড় গাড়িগুলো পেতে চান৷ কিন্তু ছোট ব্লাড ব্যাঙ্কের গাড়ি চেষ্টা করলেই পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন সমাজসেবী সংস্থা এখন সেভাবেই রক্ত সংগ্রহের উদ্যোগ নিচ্ছে, যাতে সংকট কিছুটা হলেও মেটানো যায়৷

লোককে (রক্ত দিতে) দূরে যেতে হবে না: শবনম

অসম্ভব চাহিদা, জোগান অপ্রতুল: গৌতম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য