করোনায় অটোপাসেই বছর পার
করোনার কারণে এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করলেও পিছিয়ে গেছে জাতীয় পর্যায়ের অনেক পরীক্ষা। ফলে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী ক্ষতির শিকার।
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা
দেশে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ার পর ২০২০ সালের মার্চ মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুরো বছর জুড়ে স্কুল বন্ধ থাকায় অনুষ্ঠিত হয়নি ২০২০ সালের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা। অটোপাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের পরের শ্রেণিতে উঠার অনুমতি দেওয়া হয়। সে বছর দেশে ২৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থী প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল।
জুনিয়র স্কুল/দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষা
করোনার কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি ২০২০ সালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষাও। প্রাথমিক/ইবতেদায়ির মতো এই স্তরের শিক্ষার্থীদেরও অটোপাস বিবেচনায় নিয়ে পরের শ্রেণিতে উঠতে দেওয়া হয়। সারাদেশে প্রায় ২৬ লাখ শিক্ষার্থীর এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা
করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব শুরুর আগেই পরীক্ষা শেষ হয়েছিল বলে অসুবিধায় পড়তে হয়নি মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে হওয়া এ পরীক্ষা করোনার কারণে চলতি বছর এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে পরীক্ষা নিতে নিজেরা প্রস্তুত, দাবি মন্ত্রণালয়ের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে ৬০ কার্যদিবস সরাসরি পাঠদান করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছর ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেয়।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা
জেএসসির ২৫ শতাংশ আর এসএসসির ৭৫ শতাংশ নম্বর গড় করে ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আশাবাদী মন্ত্রণালয়। কলেজ খুলবে এমন প্রত্যাশায় ৮৪ দিন সরাসরি ক্লাস নিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে চায় মন্ত্রণালয়।
মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা
বেশ কয়েকমাস আটকে থাকার পর গত ২ এপ্রিল দেশব্যাপী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে পরীক্ষার আয়োজন করায় সমালোচিত হয় কর্তৃপক্ষ।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা
প্রায় এক বছর স্থগিত থাকার পর তোড়জোড় শুরু হয়েছে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার। ইতিমধ্যে পরীক্ষার দিনক্ষণও নির্ধারণ করেছে বেশ কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী জুন মাস থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হতে পারে।
সেশনজটে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
করোনার সময়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস চালানোর চেষ্টা করলেও বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা সময়মতো অনুষ্ঠিত হয়নি। এ কারণে সেশনজটের আশঙ্কা শিক্ষার্থীদের।
কিছুটা এগিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
এদিকে বেশকিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা ও টিউটরিয়াল চালু রেখেছে। এ কারণে করেনার এ সময়ে কিছুটা হলেও সচল ছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
কবে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান?
করোনা ভাইরাসের কারণে ১৪ মাস ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে বেশ কয়েকবার পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি থাকায় বারবারই এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছে।
আরআর/এসিবি (তথ্যসূত্র: যুগান্তর, প্রথম আলো, সারাবাংলা ডট নেট)