কম্পিউটার ইফেক্টে মৃত তারকার পুনর্জন্ম
শ্যুটিং চলার মধ্যে যেসব তারকা মারা গেছেন, কম্পিউটার-জেনারেটেড ইফেক্টের কারসাজিতে সেসব চলচ্চিত্রে তাদের দেখানো গেছে৷ কিন্তু অনেক আগেই যারা মারা গিয়েছেন, তাদেরও ইফেক্টের মাধ্যমে জীবন্ত করে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷
'স্টার ওয়ার্স'-এ ক্যারি ফিশার
২০১৬ সালে ক্যারি ফিশার মারা গেলেও স্টার ওয়ার্স সিরিজের নবম পর্বে উপস্থিত করা হয় প্রিন্সেস লিয়া চরিত্রটিকে৷ এ কাজে ব্যবহার করা হয় আগেই প্রকাশিত ’দ্য ফোর্স অ্যাওয়েকেনস’ এবং ‘দ্য লাস্ট জেডাই’ পর্বগুলোতে অব্যবহৃত কিছু ভিডিও ফুটেজ৷ সিরিজের শুরু থেকেই যুক্ত থাকা অভিনেত্রীর প্রতি সম্মান জানাতে এ আয়োজন৷ এ মাসেই মুক্তি পাচ্ছে সিরিজের শেষ সিনেমা৷
'রোগ ওয়ান'-এ পিটার কুশিং
১৯৭৭ সালের প্রথম স্টার ওয়ার্স চলচ্চিত্রে ইমপেরিয়াল অফিসার গ্র্যান্ড মোফ টারকিনের চরিত্রে অভিনয় করেন কুশিং৷ ১৯৯৪ সালে মারা যান এই অভিনেতা৷ কেরি ফিশারের পাশাপাশি কুশিংকেও ২০১৬ সালের "রোগ ওয়ান: একটি স্টার ওয়ার স্টোরি"তে দেখানো হয়। অন্য অভিনেতাদের শরীরে সিজিআইয়ের মাধ্যমে এই দুই চরিত্রের অবয়ব বসানো হয়েছিল।
'মকিংজে' ছবিতে ফিলিপ সেমুর হফম্যান
দুই পর্বের ’দ্য হাঙ্গার গেমস: মকিংজে’ সিনমার বেশিরভাগ দৃশ্যের শ্যুটিং হয়ে গেছে৷ পুরো কাজ শেষ হওয়ার আগে ২০১৪ সালে অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে মারা যান ফিলিপ সিমর হফম্যান৷ তবে এ অভিনেতার বাকি সব কাজ কম্পিউটার ইফেক্ট দিয়ে করা সম্ভব হয়নি৷ সিজিআই-এর সূক্ষ্ম ব্যবহার করা হয়েছিল মাত্র কয়েকটি শটে৷
'গ্ল্যাডিয়েটার' এ অলিভার রিড
রিডলি স্কটের ’গ্লাডিয়েটর’ সিনেমার শ্যুটিং চলাকালে মদ্যপানের কারণে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান অভিনেতা অলিভার রিড৷ এরপর সিনেমার স্ক্রিপ্টে পরিবর্তন আনতে হয়৷ তবে কিছু শটের ক্ষেত্রে পুরনো ফুটেজে সিজিআই ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য তৈরি করা হয়েছিল৷ অ্যানটোনিয়াস প্রক্সিমো চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা ক্যাটাগরিতে বাফটা অ্যাওয়ার্ডের জন্য মরনোত্তর মনোনয়ন পেয়েছিলেন রিড৷
'আয়রন ক্রস' ছবিতে রয় শাইডার
’জস’ সিনেমায় পুলিশ প্রধান মার্টিন ব্রোডির চরিত্রে অভিনয় করে নাম কামিয়েছিলেন শাইডার৷ কিন্তু ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া ’আয়রন ক্রস’ সিনেমার শ্যুটিং শেষ হওয়ার আগেই মারা যান তিনি৷ এই সিনেমাতেও শাইডার এক অবসরপ্রাপ্ত নিউইয়র্ক পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় ছিলেন৷ বাকি দৃশ্যগুলো শ্যুট করা হয় সিজিআই ব্যবহার করে৷
চকলেট বিজ্ঞাপনে অড্রে হেপবার্ন
’রোমান হলিডে’ (১৯৫৩) এবং ’ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফানি’ (১৯৬১) এর মতো কালজয়ী রোমান্টিক কমেডি সিনেমায় অভিনয় করা আবেদনময়ী তারকা হেপবার্ন৷ ১৯৯৩ সালে মারা যাওয়া এই তারকাকে ২০১৪ সালে একটি চকলেটের বিজ্ঞাপনের জন্য সিজিআইয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়৷
হুইস্কির বিজ্ঞাপনে ব্রুস লি
মার্শাল আর্টের এই কিংবদন্তি, মারা যান ১৯৭৩ সালে৷ কিন্তু ২০১৩ সালে চীনে জনি ওয়াকার হুইস্কির এক বিজ্ঞাপনে তাকেও জীবিত দেখানো হয়৷ সিজিআই এবং ব্রুস লির মতো দেখতে এক অভিনেতার সহায়তায় আধুনিক হংকংয়ে দেখানো হয় লিকে৷ কিন্তু ব্রুস লি বেঁচে থাকতে কখনও মদ্যপান করেননি, ফলে তাকে এভাবে উপস্থাপন করায় ভক্তরা বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন৷
'দ্য ক্রো'-তে ব্র্যান্ডন লি
সিনেমাটির শুটিং শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগে ব্রুস লির ছেলে সেটে মারাত্মকভাবে আহত হন৷ কদিন পরে মারা যান তিনি৷ কিন্তু পরিচালক অ্যালেক্স প্রয়াস সিনেমার কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন৷ ব্র্যান্ডন লি এর স্টান্ট ডাবলকে দিয়ে বাকি শ্যুটিং করানো হয়, পরে সিজিআই এর সহায়তায় ব্র্যান্ডন লি এর মুখ বসানো হয়৷ ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়ার পর এ সিনেমা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়৷
'ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস ৭'-এ পল ওয়াকার
‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস ৭’ এর শ্যুটিং শেষ হওয়ার আগেই গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান পল ওয়াকার৷ বাকি দৃশ্যগুলো সিজিআইয়ের মাধ্যমে শেষ করা হয়৷ পলের ভাই কোডি তার হয়ে অভিনয় করেন, পরবর্তীতে পল ওয়াকারের মুখের বৈশিষ্ট্যগুলি কোডির মুখে বসিয়ে দেয়া হয়৷ মোট ২৬০টি দৃশ্য়ের শ্যুট করা হয় এভাবে৷
'স্কাই ক্যাপ্টেন'-এ লরেন্স অলিভিয়ার
২০০৪ সালে সায়েন্সফিকশন ’স্কাই ক্যাপ্টেন অ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড অব টুমরো’ সিনেমার শ্যুটিং হয়৷ এর ১৩ বছর আগেই মারা গেছেন ব্রিটিশ মঞ্চ অভিনেতা স্যার লরেন্স অলিভিয়ার৷ কিন্তু সিনেমাটিতে ড. টোটেনকপ্ফ চরিত্রে একটি কাটা মাথা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়৷ অলিভিয়ারের অভিনয় করা পুরনো সিনেমা থেকে ফুটেজ নিয়ে সিজিআই এ মাধ্যমে তাকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়৷