1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কণ্ঠস্বরে মানুষের চরিত্র বোঝা যায়!

২০ ডিসেম্বর ২০২১

কিছু মানুষের কণ্ঠ আমাদের মধ্যে আবেগ জাগিয়ে তোলে৷ কণ্ঠ বিশ্লেষণ করে আরো কত কিছু জানা যায়, এক জার্মান তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তা হাতেনাতে দেখিয়ে দিচ্ছেন৷ এমনকি রোগ-ব্যাধি ও স্বাস্থ্যের অবস্থাও বাতলে দিচ্ছেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/44Y7Q
Symbolbild - Hals
ছবি: Colourbox

সম্পূর্ণ অচেনা মানুষ সম্পর্কে কী বলা যেতে পারে? যেমন নির্দিষ্ট এক পুরুষ কি অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়? অথবা বিশেষ এক নারী কি অন্তর্মুখী? জার্মানির আউগসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বিয়র্ন শুলার সেই নারীকে চেনে না বটে, কিন্তু তার সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারেন৷ সেটা জানতে তাঁর শুধু কণ্ঠের নমুনার প্রয়োজন হয়৷ তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি এক বুদ্ধিমান কণ্ঠ বিশ্লেষণ প্রণালী সৃষ্টি করেছেন৷ প্রফেসর শুলারের কাছে সামান্য কয়েকটি শব্দই ব্যক্তিত্ব ও আবেগ সম্পর্কে পূর্বাভাস দেবার জন্য যথেষ্ট৷

সেই প্রণালী হাতেনাতে যাচাই করে দেখতে কাটারিনা, ডিয়র্ক ও রবিন নামের তিন ব্যক্তির কণ্ঠ ব্যবহার করা হয়েছে৷ কণ্ঠের ভিত্তিতে কম্পিউটার কোনো মানুষের ব্যক্তিত্বের ‘বিগ ফাইভ' বা প্রধান পাঁচটি বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করতে পারে৷ প্রো. বিয়র্ন শুলার বিষয়টি খোলসা করে বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতা, নতুনত্ব, পরীক্ষানিরীক্ষার স্পৃহার ক্ষেত্রে আমাদের মন খোলা থাকে৷ সেইসঙ্গে বিবেক বোধও কাজ করে৷ কেউ কেউ বহির্মুখী হন, মানুষের সঙ্গে মেলামেশা পছন্দ করেন৷ কেউ কতটা সহানুভূতিশীল হয়, টিমের সঙ্গে কাজ করতে পারে, সেটাও একটা জরুরি বিষয়৷ স্নায়বিক ক্ষমতাও গুরুত্বপূর্ণ৷ অর্থাৎ কেউ ধীরস্থির কিনা, নাকি আবেগে অস্থির হয়ে ওঠেন৷''

ডিয়র্ককে নিয়ে পরীক্ষা শুরু করে প্রো. শুলার বলেন, তিনি পরীক্ষানীরিক্ষা করতে খুবই পছন্দ করেন৷ খোলামনে নতুন কিছু করতে চান৷ ডিয়র্ক নিজেও সেই মূল্যায়নের সঙ্গে একমত৷ অর্থাৎ বিশ্লেষণ মিলে গেছে৷ ডিয়র্ক সব সময়ে নতুন কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকেন৷ যেমন অবসর সময়ে মধু সংগ্রহ করেন, তাঁর সাতটি মৌচাকও রয়েছে৷ তিনি নাটকে অভিনয় করেন, প্রায় সব বিষয়েই তার আগ্রহ রয়েছে৷

প্রশ্ন হলো, আমাদের কণ্ঠ কি সত্যি আমাদের চরিত্রের মোড়ক খুলে দেয়? বিয়র্ন শুলার সে বিষয়ে নিশ্চিত৷ শুধু তাই নয়, তিনি এমনকি কণ্ঠ শুনে রোগ-ব্যাধিও শনাক্ত করতে পারেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে কণ্ঠ আসলে আমাদের আত্মার আয়না৷ আমরা মনের অবস্থা সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারি৷ সেইসঙ্গে রোগব্যাধী ও স্বাস্থ্যের পরিবর্তন সম্পর্কেও অনেক কিছু টের পাই৷''

কারণ ধ্বনি সৃষ্টি করতে প্রায় গোটা শরীরের প্রয়োজন হয়৷ ফুসফুস, বায়ুনালী এবং অবশ্যই ল্যারিনক্স ও ভোকাল ফোল্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে৷ সেখানেই ধ্বনি সৃষ্টি হয়৷ জিব, ঠোঁট এবং মুখের পেশিগুলি কণ্ঠের তারতম্য নিশ্চিত করে৷

নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য বুক ও পেটের পেশির প্রয়োজন হয়, যেমন ডায়াফ্রাম৷ ধ্বনি সৃষ্টির কাজে সব মিলিয়ে একশরও বেশি পেশি কাজে লাগে৷ সেইসঙ্গে মস্তিষ্কের বেশ কয়েকটি অংশও সক্রিয় হয়ে ওঠে৷

টানটান উত্তেজনা বা ব্যথা হলে, মনে ভয় থাকলে অথবা অবসাদে ভুগলে জটিল এই ক্রিয়া বদলে যায়৷ সেইসঙ্গে কণ্ঠের ধ্বনিতেও পরিবর্তন আসে৷

আনিয়া গালোনস্কা/এসবি