1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

Motor Bike, Estonia, এস্তোনিয়া, মোটর সাইকেল

১১ জুলাই ২০১০

ভালো মোটর সাইকেল বানাতো এস্তোনিয়া৷ গত শতকের ৩০ এর দশকে সেখানে একটি নামি কারখানা গড়ে ওঠে৷ তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমায় উড়ে যায় তা৷ যুদ্ধ শেষ হয়, তবে রেনার্ড ব্র্যান্ডের ঐ কারখানা আর সচল হয়নি৷

https://p.dw.com/p/OGEi
Motor Bike, Estonia, এস্তোনিয়া, মোটর সাইকেল
ফাইল ছবিছবি: presse

এবার, অর্ধশতকের বেশি সময় পর আবার রেনার্ড আসছে৷ তবে হাইটেক মোটর সাইকেল হয়ে৷ তালিনান এয়ারপোর্ট থেকে প্রায় ১০ মাইল দক্ষিণে, ধূ ধূ মাঠ৷ ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু বাড়ির দেখা মেলে৷ হাইওয়ের পাশেই একটি ট্রাক স্ট্যান্ড৷ তার পাশেই একটি গ্যারেজ দেখা গেলো৷ বাইরে থেকে আহামরি কিছু নয়৷ ভেতরে উঁকি দিতেই চোখ পড়লো ব্যস্ত দুই যুবকের ওপর৷ খুটখাট করছেন তারা, তৈরি হচ্ছে হাইটেক মোটর সাইকেল৷ যা কিছুদিনের মধ্যেই লস এঞ্জেলেস কিংবা ইটালিতে যাবে৷ দুই যুবকের নাম জানা গেলো- আন্দ্রে ইউবোমাগি আর কারেল কিভিকাঙ্গুর৷

এই গল্পের শুরু আজ থেকে অনেক আগে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘণ্টাধ্বনি বাজবে বাজবে করছে৷ তখন লান নামে এক ব্যক্তি তালিনানে কারখানা বসিয়ে ছোট মোটর সাইকেল তৈরি শুরু করেন৷ ছয় বছর ব্যবসা চালাতে পেরেছিলেন লান৷ ১৯৪৪ সালে বিমান হামলায় গোটা কারখানা নেই হয়ে যায়৷ অল্প কদিন ব্যবসা চললেও রেনার্ড মোটর সাইকেলের বেশ সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিলো৷ আর মোটর রেসিং এস্তোনিয়ায় বেশ জনপ্রিয়৷ আন্দ্রে জানালেন, গত শতকের '৭০ কিংবা '৮০ দশকে বেশিরভাগ রেসিং সাইকেলই তৈরি হতো এস্তোনিয়ায়৷ ভিউর নামে একটি কোম্পানি ছিলো৷ তাদের বাইক চালিয়ে ২২ রেসিংয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন লেমবিত তিসালু৷

ছেলেবেলা থেকেই আন্দ্রের শখ মোটর সাইকেলের৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘কিশোর বেলার কথা৷ আমার বয়স তখন ১৪ কি ১৫৷ আমরা রেসিং দেখতে যেতাম৷ ফেরার পথে কালেভ নামে একটি ক্লাব পড়তো৷ তার বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা অনেক মোটর সাইকেল দেখতাম৷ তখনই স্বপ্ন ছিলো বড় হয়ে মোটর সাইকেল বানাবো৷''

আন্দ্রে আর কারেল যে মোটর সাইকেল তৈরি করছেন, তা অনেকটা ইতালির মোটো গুজ্জি'র মতো৷ এটি তৈরি হয়েছে কার্বন ফাইবার দিয়ে৷ এতে চড়তে পারবেন কেবল একজনই৷ আন্দ্রের যুক্তি, কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি হওয়ায় এটি স্টিলের চেয়ে যেমন মজবুত হবে৷ অন্যদিকে হবে অনেক হালকা৷ হাইটেক এই মোটর সাইকেল ছুটতে পারবে ২৫০ কিলোমিটার গতিতে৷ এর দাম পড়ছে ৭৫ হাজার ইউরো৷

২০০৬ সালে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগোনো শুরু করেন আন্দ্রে৷ ঠিক করেন ব্যবসার পরিকল্পনা৷ পুরো বিষয়টি খুলে বলেন বন্ধু কারেলকে৷ দুজনে মিলে অর্থকড়ি যোগাড় করতে শুরু করেন, তাতে দু‘বছর চলে যায়৷ শুরুটা জানাতে গিয়ে কারেল বলেন, ‘‘আমাদের বন্ধুত্ব ১০ বছরের৷ চার বছর আগে আন্দ্রে কাজ শুরু করে৷ দুই বছর একসঙ্গে কাজ করার পর দুজনে মিলে একটি কোম্পানি খোলার চিন্তা করি৷ এবং মোটর সাইকেলের নমুনা তৈরির কাজ শুরু করি৷''

আন্দ্রে আর কারেলের খুব অল্প দিয়ে শুরু করছে৷ বছরে তিন থেকে পাঁচটি মোটর সাইকেল বানানোর পরিকল্পনা তাদের৷ অর্ডার বাড়লে পরে অন্য কিছু ভাববেন তাঁরা৷ শুরুটা হয়ে গেছে৷ এখন এস্তোনিয়ার মোটর সাইকেলের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনতে চান দু'যুবক৷ তাঁরা মনে করছেন, সেটা সম্ভবও৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ