এশীয়দের ঘৃণা : শিশুর সংকট, মায়ের সংগ্রাম
গত ১৬ মার্চের পর থেকে একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে হয়রান সাত বছর বয়সি শিশু অলিভিয়া৷তাকে বোঝানো আর স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোই তার মায়ের জন্য এখন বড় সংগ্রাম৷ দেখুন ছবিঘরে...
সেই হামলা
গত ১৬ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা এলাকায় এক বন্দুকধারী পরপর তিনটি স্পা-তে হামলা চালায়৷ সবগুলো স্পা-র মালিক এশীয়৷ হামলায় আটজন মারা যান৷ নিহতদের মধ্যে ছয়জনই নারী৷ ধারণা করা হচ্ছে, এশীয়দের প্রতি ঘৃণার কারণেই বেছে বেছে এশীয় মালিকদের প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে৷
বুঝতে চায় অলিভিয়া
রবার্ট আরন লং নামের এক তরুণ কেন গুলি করে এভাবে মানুষগুলোকে মেরে ফেললো- অলিভিয়ার মনে বারবার ফিরে আসে এই প্রশ্ন৷ মানুষ কেন এভাবে মানুষকে মারে সে বুঝতেই পারে না৷ কোরীয় বংশোদ্ভুত অ্যামেরিকান মা স্টেফানি স্টুবার পড়েছেন মহাদুশ্চিন্তায়৷ মেয়েকে এমন ভাবনা থেকে বের করে আনতে না পারলে তো মুশকিল!
কথায় কথায়...
মেয়ের কিছু প্রশ্ন স্টেফানিকে খুব চিন্তায় ফেলে৷ কী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে তা নিয়ে চিন্তা৷ কিন্তু বসে বসে শুধু চিন্তা করলে তো হবে না৷ আগে আটলান্টার হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ধীরে ধীরে অলিভিয়ার মনে আনন্দ ফেরাতে হবে৷ তাই ফিলাডেলফিয়ার ফ্ল্যাটে মাঝে মাঝে মেয়ের পাশে বসে গল্প শুরু করেন স্টেফানি৷
শিশুর মনে আতঙ্ক
১৬ মার্চের পর থেকে একটা প্রশ্ন অনেকবার করেছে অলিভিয়া৷ মায়ের কাছে জানতে চেয়েছে, ‘‘ আমার চেহারা এমন বলে কি কেউ আমাকেও মারবে?’’
সত্যের দুই দিক
স্টেফানি স্টুবারের কাছে আটলান্টা হামলার বিপরীত দিকটাই বেশি বড়৷ তিনি জানেন ভালোবাসার মর্ম, বোঝেন ঘৃণার চেয়ে ভালোবাসা অনেক শক্তিশালী৷ স্টেফানিকে দত্তক নিয়েছিলেন শ্বেতাঙ্গ এক দম্পতি৷ সন্তানের স্নেহ দিয়ে তাকে তারা বড় করেছেন পেনসিলভানিয়ার ব্রুকস কাউন্টির আইভিল্যান্ড অঞ্চলে, যেখানে অশ্বেতাঙ্গ মানুষ নেই বললেই চলে৷
বিভেদ
তবে দত্তক নেয়া শ্বেতাঙ্গ বাবা-মা তাকে অকৃত্রিম ভালোবাসা দিলেও অন্য কাছের মানুষরা নানাভাবে তার ‘এশীয়’ পরিচয়টাকে মনে করিয়ে দিতেন৷ বাবা-মায়ের আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কেউ স্টেফানিকে যখন আদর করে ‘চিং অং’ বা ‘লিটল কনিচিয়া (জাপানি ভাষায় সম্ভাষণ)’ ডাকতেন, তখনও বোঝা যেতো ব্যাপারটা৷
কেটে যাবে মেঘ
স্টেফানি মনে করেন ঠিকভাবে বোঝাতে পারলে কয়েকদিনের মধ্যেই হয়ত অলিভিয়ার মন থেকে আতঙ্কটা কেটে যাবে৷ যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষের চেষ্টায় এশীয়বিরোধী ঘৃণাও ধীরে ধীরে দূর হবে বলে তার বিশ্বাস৷
খেলায় ব্যস্ত মা-মেয়ে
মেয়ের মন ভালো করতে অনেক সময় তার সঙ্গে নানা ধরনের খেলা খেলেন স্টেফানি৷খুব আনন্দে কাটে সেই সময়গুলো৷