1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিরছে পুরনো ফোন!

৩১ মে ২০১৪

পকেটের এক কোনায় ফেলে রাখা যায়৷ ব্যাটারি চলে পুরো সপ্তাহ৷ আছাড় মারলেও কিচ্ছু হয় না৷ নোকিয়া, এরিকসন অথবা মটোরোলার সেই পুরনো আমলের, মানে দু’দশক আগের মোবাইল ফোন সেটগুলোই আবারো ফিরে আসছে ফ্রান্সে৷

https://p.dw.com/p/1C9OX
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পুরনো মোবাইল ফোনসেট কেনাবেচা হচ্ছেছবি: picture-alliance/dpa

বিক্রেতারা বলছেন, হাজার রকম অ্যাপনির্ভর স্মার্টফোনের ঝামেলায় অনেক ব্যবহারকারীই ক্লান্ত৷ আর দ্রুত ব্যাটারি ফুরিয়ে যাওয়ার সমস্যা তো আছেই৷ অনেক ব্যবহারকারী এখন চাইছেন নোকিয়া ৩৩১০ ও মটোরোলা স্টারটেক ১৩০-এর মতো ফোনসেট, যেগুলোতে কেবল কথা বলা আর সাধারণ টেক্সট মেসেজ পাঠানোর ব্যবস্থা আছে৷

সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ফোন সেটের চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে, কোনো কোনো বিক্রেতা পুরনো বা ব্যবহৃত ফোনের দাম এক হাজার ইউরো পর্যন্ত হাঁকছেন৷

জাসেম হাদ্দাদ ২০০৯ সাল থেকে ভিনটেজমোবাইল.এফআর নামে একটি ওয়েবসাইট চালান, যেখানে ব্যবহৃত ও পুরনো মোবাইল ফোন বিক্রি করা হয়৷

তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে এ সব পুরনো মডেলের ফোন পাওয়া কিন্তু বেশ কঠিন৷ এ কারণে অনেকেই আর দাম নিয়ে ভাবেন না৷ আমাদের কাছে এক হাজার ইউরো দামের ফোনও আছে৷''

প্রথম দিকে ব্যবসা ভালো না গেলেও গত বছর থেকে হঠাৎ করেই বেচা-বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে হাদ্দাদের৷ গত তিন বছরে তিনি প্রায় দশ হাজার হ্যান্ডসেট বিক্রি করেছেন, যার অধিকাংশই গেছে ২০১৩ সালে৷

তিনি বলন, ‘‘বয়স্করা একটি সাধারণ ফোন চান, যেটা ব্যবহার করা সহজ৷ আর যাঁরা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন, তাঁরাও একটি সস্তা ও সাধারণ ফোন নিজের কাছে রাখতে চান৷''

হাদ্দাদের ওয়েবসাইটে বিক্রির তালিকায় এক রংয়ের স্ক্রিন আর প্লাস্টিকের বোতামওয়ালা একটি নোকিয়া ৮২১০ সেট রয়েছে, যার দাম চাওয়া হয়েছে ৫৯.৯৯ ইউরো৷

এমন এক সময়ে এসে ব্যবহারকারীরা আবার পুরনো ফোনে ফিরতে চাইছেন, যখন স্মার্ট ফোনের জয়ধ্বনি তুলে মোবাইল ফোন নির্মাতারা পুরনো মডেলের উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছেন৷

অ্যাপল-এর ‘আইফোন' আর স্যামসাং-এর ‘গ্যালাক্সি' স্মার্টফোন বাজার দখল করে নেয়ার আগে এ ব্যবসার সবচেয়ে বড় কোম্পানি ছিল ফিনল্যান্ডের নোকিয়া৷ কিন্তু স্মার্টফোনের জোয়ারে টিকতে না পেরে সেই নোকিয়াও তাদের হ্যান্ডসেট বিভাগ মাইক্রোসফটের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে৷

ফা ডা এজেন্সি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ দামিয়েন দুয়ানি বলেন, ‘‘পুরনো ধাঁচের ফোন ব্যবহারের নতুন একটা চল আমরা দেখতে পাচ্ছি৷ এটা অনেকটা এ রকম – ছোটবেলায় টাকা না থাকায় যে জিনিসটা আমরা কিনতে পারিনি, বড় হয়ে সেটা কেনার একটা আগ্রহ আমাদের থাকে, যদিও সেটা তখন বাজার থেকে উঠে গেছে৷''

এর পেছনে সাংস্কৃতিক একটি কারণও দেখতে পাচ্ছেন দুয়ানি৷ তাঁর মতে, আজকের সমাজে প্রযুক্তির মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে সারাক্ষণ যুক্ত থাকার যে সংস্কৃতি চলেছে, এটি তার উল্টো ধারা৷

‘‘একটি টেলিফোনে ন্যূনতম যা যা থাকলে তাকে মোবাইল ফোন বলা যা, তাঁরা ঠিক ততটুকুই চাইছেন৷''

ফরাসি অনলাইন শপ লেকি-র তালিকায় বেশ কিছু পুরনো মডেলের মোবাইল ফোন রয়েছে, যার মধ্যে ১৯৯৮ সালের একটি মটোরোলা স্টারটেক ১৩০ ফোনের দাম ধরা হয়েছে ১৮০ ইউরো৷ আর এরিকসন এ২৬২৮ মডেলের আরেকটি ফোন তারা বিক্রি করছে ৮০ ইউরো দরে৷

লেকি-র ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘‘বাজারের এত ধরনের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, গাদা গাদা ই-মেল আর নানা ধরনের অ্যাপ্লিকেশন মানুষকে প্রযুক্তির দাসে পরিণত করেছে৷ তার বদলে লেকি দিচ্ছে ‘বেসিক ফিচার'-এ ফিরে যাওয়ার সুযোগ৷''

জেকে/ডিজি (এএফপি, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য