1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

একের পর এক মিডিয়া বন্ধ হলেও হংকং এর সাংবাদিকেরা প্রতিবাদী

১১ জানুয়ারি ২০২২

পাঁচ বছরের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের পরপরই আচমকা বন্ধ হয়ে গেল হংকংয়ের সিটিজেন নিউজ৷ গণতন্ত্রের কথা বলার জন্য এই ওয়েবসাইট বেশ জনপ্রিয় ছিল৷

https://p.dw.com/p/45O4v
ছবি: Vincent Yu/AP Photo/picture alliance

স্বাধীন এই সংবাদ পরিবেশকের কাজ যেদিন বন্ধ হল, তার পরদিন এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ছিল আবেগে পরিপূর্ণ৷ সাংবাদিকরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন৷ মানুষের কথা তুলে ধরার বদলে নিজেদের ক্যারিয়ারের মোড় বদলের কথা তুলে ধরছিলেন৷ তাদের ক্যারিয়ার কি শেষ হয়ে গেল, এমন ভাবনাও উঠে এসেছে তাদের লেখায়৷

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাংবাদিক বলেন, পাঠকের কাছে পৌঁছাতে দ্রুত রিপোর্ট লিখছিলেন তিনি৷ দীর্ঘ দিন ধরে সেই রিপোর্টের জন্য তিনি কাজ করেছেন ৷ অথচ হাতে সময় নেই৷ ভিডিও সম্পাদনা করার জন্য যে সার্ভার তারা ব্যবহার করছিলেন সেটিও ওয়েবসাইট বন্ধের আগের দিন কোনওমতে কাজ করছিল। পাঠক ও সহকর্মীদের বিদায় জানানোর সুযোগ অন্তত পেয়েছেন বলে জানান তিনি৷

কিন্তু আচমকা কেন বন্ধ হল এই ওয়েবসাইট? সিটিজেন নিউজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্ট্যান্ড নিউজ নামে অন্য একটি সংবাদ পরিবেশকের (অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য বিখ্যাত) অফিসে নিরাপত্তারক্ষীদের হানা, ওই সংস্থার সাবেক কর্মীদের একের পর এক গ্রেপ্তারসিটিজেন নিউজ বন্ধের অন্যতম কারণ৷ সোমবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে সিটিজেন নিউজের সাংবাদিক ক্রিস ইয়েয়ুং জানান, স্ট্যান্ড নিউজের অবস্থা দেখে খুব দ্রুত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ঝুঁকির বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন তিনি৷

হংকংয়ের নিরাপত্তা বিভাগের প্রায় ২০০ জন পুলিশ অফিসার স্ট্যান্ড নিউজের দপ্তরে অভিযান চালায়৷ সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে৷ ‘‘রাষ্ট্রদ্রোহ’’ বিষয়বস্তু প্রকাশ এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুজন সম্পাদককেও আটক করা হয়।

হংকং জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এবং স্ট্যান্ড নিউজের প্রাক্তন ডেপুটি অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রনসন চ্যান ডয়চে ভেলেকে জানান, চাকরি হারিয়ে, সহকর্মীদের হারিয়ে তিনি অত্যন্ত মর্মাহত৷ সাংবাদিক হিসেবে নিজের পরিচয় হারিয়েছেন বলে দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি৷ স্বাধীন সংবাদ পরিবেশকের কোনও স্থান হংকংয়ে নেই এটা জনগণের জন্য বিপজ্জনক, মন্তব্য করেন রনসন৷

হংকংয়ের পাবলিক ওপিনিয়ন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডেপুটি চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার কিম ওয়া চুং বলেন, ‘‘স্ট্যান্ড নিউজ এবং সিটিজেন নিউজ বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে হংকংয়ে মুক্তচিন্তার কোনও স্থান নেই৷ সংবাদপত্রের কোনও স্বাধীনতা নেই৷’’

ছোট বড় সবমিলিয়ে ছয়টি সংবাদ পরিবেশক কাজ বন্ধ করে দিল৷ এই প্রেক্ষিতে মিং পাও-এর মতো বহু পুরনো সংবাদ পরিবেশক তাদের মতামত সংক্রান্ত প্রবন্ধের সঙ্গে একটি বিবৃতি যোগ করেছে৷ তাতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, কোনও সমালোচনামূলক মতামত সরকারের বা শত্রুতাকে উসকানি দেওয়ার বদলে নীতিগত ভুলগুলি সংশোধনের জন্য৷

কিম ওয়া চুং ডয়চে ভেলেকে জানান, অনেক সাংবাদিক নিজের মতো করে কাজ করতে পারছেন না৷ ঝুঁকি বাড়ছে৷ এ ছাড়া আরও সমস্যা রয়েছে৷ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিটিজেন নিউজের এক সাংবাদিক বলেন, কাজ তারা থামাবেন না৷ সত্য তুলে ধরবেন তারা পাঠকের সামনে৷ এটা সাংবাদিকের ধর্ম৷ আগের চেয়ে আরও অনেক বেশি সাবধানে তিনি কাজ করবেন৷

উইলিয়াম ইয়াং/আরকেসি