1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

একটি পরিবারের জন্য চলছে অবিরাম প্রার্থনা

২২ ডিসেম্বর ২০১৮

নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরের শান্ত নিরিবিলি এক রাস্তা৷ রাস্তার পাশেই দেখা মেলে শত বছরের পুরোনো বেথেল চার্চ৷ সেখানে একটি পরিবারের জন্য চলছে অবিরাম প্রার্থনা৷

https://p.dw.com/p/3ATWv
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Boersema

গির্জার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে মনে হবে কিছু একটা হচ্ছে সেখানে৷ভিতরে গেলে দেখা যাবে, কিছু লোক নিবিষ্ট মনে আরাধনা করছেন৷ গির্জাটিতে উপাসনা করতে আসেন অনেকেই৷ কিন্তু গত দুমাস ধরে গির্জার দৃশ্য একটু ভিন্ন৷ ভিন্নতা হলো, উপাসকরা সেখানে নিবিষ্ট মনে আরাধনা করে যাচ্ছেন– ঘণ্টা, দিন বা সপ্তাহের কোনো হিসেব নেই৷ গত দু'মাস ধরে বিরামহীন চলছে এই উপাসনা৷ আর এ উপাসনার উদ্দেশ্য হলো দেশটিতে আশ্রয় নেয়া এক আর্মেনিয়ান পরিবারের প্রত্যাবসন ঠেকানো৷ হ্যাঁ, পরিবারটিকে নেদারল্যান্ডসে রেখে দিতে সৃষ্টিকর্তার সহায়তা কামনা করছেন তাঁরা৷

‘‘জার্মানি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজারের মতো উপাসক আমাদের সাথে যোগ দিয়েছেন,'' জানালেন চার্চের একজন মুখপাত্র৷ তিনি যখন কথা বলছিলেন, তখনই আট সদস্যের একটি দল এসে হাজির৷ প্রায় তিন ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে নেদারল্যান্ডসের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল থেকে এসেছেন তাঁরা৷ শুধু ধার্মিকরাই না, ধর্ম চর্চা যাঁরা নিয়মিত করেন না, তাঁরাও হাজির হয়েছেন গির্জাটিতে৷ উদ্দেশ্য একটাই– আর্মেনিয়ান পরিবারটির প্রতি সমবেদনা প্রকাশ৷

গির্জার উপাসনাকারীদের একজন আন্টইয়ে৷ ব্যাক্তিজীবনে ততটা ধর্মানুরাগী নন তিনি৷ কিন্তু শামিল হয়েছেন উপসানকদের সঙ্গে৷ ‘‘তাঁরা খুব ভালো একটি কাজ করছে৷ আমি এসেছি এই ভালো কাজে অংশ নিতে৷ আর্মেনিয়ান এ পরিবারটির প্রতি আমি সমবেদনা জানাতে এসেছি৷ তাঁদের প্রতি আমার সমর্থন জানাতে এসেছি৷''

রোডিয়া রোজেনডাল নামের এক পাদরিকে দেখা গেল সমবেতদের উদ্দেশ্যে বাইবেলের কিছু স্তোত্র গাইতে৷ ধর্মসংগীত শেষে সমবেতদের নিয়ে তিনি আর্মেনিয়ার তামারযিয়ান পরিবারটির জন্য প্রার্থনা করতে বসলেন৷

পাঁচ সদস্যের আর্মেনিয়ান পরিবারটি ২০১০ সালে নেদারল্যান্ডসে আশ্রয়  নেয়৷ তারপর নেদারল্যান্ডসে বসবাসের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে তাঁরা৷ কিন্তু ব্যর্থ হয়৷ চুড়ান্ত রায়ে নেদারল্যান্ডসে বসবাসের জন্য করা আবেদন খারিজ হয়ে গেলে পরিবারটি কাটভিক শহরের একটি ছোট্ট গির্জায় আশ্রয় নেয়৷ পরে বেথেল চার্চ কর্তৃপক্ষ তাঁদের আশ্রয় দেয়৷ আর তখন থেকেই শুরু হয় স্রষ্টার কাছে বিরামহীন আকুল আবেদন৷

পরিবারটি জানায়, আর্মেনিয়ায় ফিরে গেলে তাঁদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷

আর্মেনিয়ান এ পরিবারের বিষয়ে সরকার এখনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেনি বলে জানালেন গির্জার একজন নারী মূখপাত্র৷ গত সেপ্টেম্বর মাসে আর্মেনিয়া থেকে আসা দুইজন শিশুর নেদারল্যান্ডসে আশ্রয়ের আবেদন খারিজ হয়ে যায়৷ পরে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর চাপের মুখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সরকার৷

এদিকে, দেশটির ন্যায় বিচার ও নিরাপত্তা বিষয়ক স্টেট সেক্রটারি মার্ক হারবারস ডাচ টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আর্মেনিয়ান এ পরিবারটির নেদারল্যান্ডসে থাকার কোনো সুযোগ নেই৷

‘‘কর্তৃপক্ষকে তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অনড় মনে হচ্ছে'', দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জানালেন গির্জার একজন পাদরি৷ পাশাপাশি তিনি জানান, আপাতত গির্জাটিতে আর্মেনিয়ান এ পরিবারটির জন্য যথেষ্ট খাবার ও পানীয় রয়েছে৷

আর্মেনিয়ান পরিবারটি খুব একটা জনসমক্ষে আসে না৷ তবে পরিবারটির ২১ বছর বয়সি সদস্য হায়ারপি'র একটি ব্লগ আছে৷ সেখানে তিনি ডাচ ও ইংরেজি ভাষায় কবিতা লিখেন৷

এলিজাবেথ শুমাখার/আরআর

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য