1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘একজন মাহফুজ আনামকে টার্গেট করা ঠিক নয়’

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশের অন্যতম ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও অন্য আরো একটি পত্রিকার সম্পাদক কি গ্রেপ্তার হচ্ছেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোমবারের বক্তব্যের পর, এই প্রশ্নটিই এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে দেশে৷

https://p.dw.com/p/1I0T1
Bangladesh Zeitungen
ছবি: DW

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘‘ডিজিএফআই-এর সঙ্গে ওনার (মাহফুজ আনামের) কি সখ্য ছিল? তা না হলে ওনাকে তারা যা ধরিয়ে দিত, তাই হুবহু ছাপিয়ে দিতেন কেন? যুদ্ধাপরাধীদের যেমন বিচার হচ্ছে, ঠিক সেভাবে একদিন তাদেরও বিচার হবে৷''

হাসিনা একই সঙ্গে আরো একটি পত্রিকার নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘‘দু'টি পত্রিকা ডিজিএফআই-এর লিখে দেওয়া মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়ে সে সময় রাজনীতি থেকে আমাকে এবং খালেদা জিয়াকে চিরদিনের জন্য সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে৷ ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম সম্প্রতি তা স্বীকারও করেন৷''

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মঙ্গলবার বলেন, ‘‘১/১১-এর পুরো ঘটনা জানার জন্য একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা প্রয়োজন৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সত্য ও স্পষ্ট কথা বলেছেন৷ যারা সে সময় ভিলেন ছিল, তাদের অনেকে এখন হিরো হয়ে যাচ্ছে৷''

[No title]

তাঁর কথায়, ‘‘একজন মাহফুজ আনাম বললেন ভুল করেছেন৷ এই ভুলের জন্য শুধু ভুল স্বীকার করলে হবে না, তাঁর পদত্যাগ করা উচিত ছিল৷ ১/১১-এর সময় শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে চক্রান্ত করে রাজনীতি থেকে সরানোর চক্রান্ত করা হয়েছিল৷ কিছু অশুভ শক্তি ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল৷''

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো অনুষ্ঠানে ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বর্তমান প্রধনিমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর সরবারাহ করা তথ্য নিশ্চিত না হয়ে ছাপার ভুল স্বীকার করেন মাহফুজ আনাম৷ আনাম বলেছিলেন, ‘‘এটি ছিল আমার সম্পাদকীয় নীতিমালার ভুল৷'' এরপর থেকে প্রতিদিনই ডেইলি স্টার সম্পাদকের বিরুদ্ধে সারাদেশের আদালতেই মামলা হচ্ছে৷

সোমবার পর্যন্ত, অর্থাৎ ১৪ দিনে, মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ৭৭টি মামলা করা হয়েছে৷ এর মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা হয়েছে ২১টি মামলা৷ এছাড়া মানহানির মামলাগুলোর মধ্যে ৫১টিতে ১ লাখ ২২ হাজার ৪৭০ কোটি ৫৫ লাখ টাকার মানহানি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে৷ মামলাগুলির কয়েকটিতে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে সমন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে খবর৷

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের অতিরিক্ত বার্তা প্রধান প্রভাষ আমিন এই পরিস্থিতি সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কেউই আইনের ঊর্ধে নয়৷ মাহফুজ আনামও নন৷ তিনি যদি কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়াই যায়৷ কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন আইনগত ব্যবস্থা বা বিচারের কথা নিজমুখে বলেন, তখন বিষয়টি ভালো দেখায় না৷ তিনি যখন বিচারের আওতায় নেয়ার কথা বলেন, তখন বিষয়টি তো আমলে নেয়ার মতোই৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করি, তাহলে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ না করলেই ভালো হতো৷ আমার কাছে বিষয়টি ভালো লাগেনি৷''

প্রভাষ আমিনের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মনে করেন মাহফুজ আনামসহ দু'জন সম্পাদক ২০০৭ সালে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নেপথ্যে কাজ করেছেন৷ আমি মনি করি, এ জন্য শুধু মাহফুজ আনামকে দায়ী করা ঠিক না৷ আরো যারা এতে ‘রোল প্লে' করেছেন, যারা তখন জবানবন্দি দিয়েছেন, যারা জবানবন্দি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ছাপিয়েছেন, তাদের সকলকেই দরকার হলে তদন্তের আওয়তায় আনা যেতে পারে৷ এককভাবে শুধু মাহফুজ আনামকে নয়৷ তিনি তো তাঁর ভুল স্বীকার করেছেন৷''

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রভাষ আমিন বলেন, ‘‘মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে এতগুলো মামলা হয়রানিমূলক৷ যারা মামলা করেছেন বা করছেন, তারা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কীভাবে তাদের মানহানি হয়েছে? কিছু হয়ে থাকলে সেটা তো শেখ হাসিনার হয়েছে৷''

বন্ধু, আপনি কি প্রভাষ আমিনের সঙ্গে একমত? জানান মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য