এক বাবার ১৩টি শিশু
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮একজন-দু'জন নয়, ১৩ জন শিশু৷ বাবা একজনই৷ দেখে চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল থাইল্যান্ডের প্রশাসনের৷ তদন্ত করতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, এক থাইল্যান্ডে এসে সারোগেসির মাধ্যমে এই ১৩টি শিশুর পিতৃত্ব অর্জন করেছেন৷ শুধু থাইল্যান্ডেই নয়, কম্বোডিয়া এবং জাপানেও তাঁর এমন কিছু শিশু আছে৷
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিদেশিদের থাই মহিলাদের জরায়ু ভাড়া করার উপর বেশকিছু বিধিনিষেধ জারি করে থাই সরকার৷ তবে জাপানি ওই ভদ্রলোকের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়৷ কেন তিনি এতগুলি শিশুর দায়িত্ব নিলেন, তা নিয়ে শুরু হয় তদন্ত৷ এদিকে তদন্ত শুরু হওয়ার পর ওই ব্যক্তিও ফিরে যান জাপানে৷ শিশুদের রেখে যান ২৪ ঘণ্টার ন্যানি বা আয়ার কাছে৷ শোনা যায়, ওই ব্যক্তির মা মাঝে মাঝে এসে শিশুদের দেখে যেতেন৷ আর শিশুদের মায়েরাও তাদের বাচ্চাদের দেখার সুযোগ পেতেন৷ অবশেষে থাইল্যান্ডের একটি আদালত রায় দিয়েছে, ১৩টি শিশুকেই জাপানে নিয়ে যেতে পারেন ওই ব্যক্তি৷ আদালতের বক্তব্য, ওই জাপানি ভদ্রলোক অত্যন্ত বড়লোক৷ তাঁর পরিবার অগাধ অর্থের মালিক৷ সুতরাং ১৩টি শিশুকে দেখভাল করার উপায় তাঁর আছে৷ তদন্ত চলাকালীনও শিশুদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, তার ব্যবস্থা তিনি করেছেন৷ শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পৃথিবীর কোনো দেশে কোনো অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার রেকর্ড নেই৷ ফলে তাঁর উপর ভরসা করে শিশুদের তাঁর হাতে তুলে দেওয়াই যায়৷ তবে ভবিষ্যতে থাই মহিলাদের জরায়ু ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে প্রশাসনের আরো কঠোর হওয়া উচিত– এমন মন্তব্যও করা হয়েছে৷
জানা গেছে, ৯ হাজার ৩০০ থেকে ১২ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত তিনি খরচ করেছিলেন একজন একজন সারোগেট মাদারের পিছনে৷ কম্বোডিয়া এবং জাপানেও একইরকম টাকা খরচ করেছিলেন তিনি৷ তবে এত শিশু নেওয়ার ভাবনা তাঁর কেন হলো– এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ওই ব্যক্তি৷ থাইল্যান্ডের আদালত নিরাপত্তার জন্যই তাঁর নাম প্রকাশ্যে আনেনি৷ অন্যদিকে, থাই তদন্তকারীরা জাপানে গিয়ে শিশুদের থাকার জায়গার ব্যবস্থাপনা দেখে এসেছেন৷
এই ঘটনাটির ক্ষেত্রে সবকিছু এখনো পর্যন্ত ঠিকঠাক থাকলেও অতীতে থাইল্যান্ডে সারোগেসির সঙ্গে অপরাধ জগতের সংস্পর্শও ঘটেছিল৷ থাই আদালত এক মানসিক বিকারগ্রস্তকে কড়া শাস্তি দিয়েছিল৷ শিশুদের উপর যৌন অত্যাচার চালানোর জন্যই সেই ব্যক্তি থাইল্যান্ডে এসেছিলেন সারোগেসির খোঁজে৷
এসজি/এসিবি (এএফপি)