1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন বিজয় দিবস

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৬ ডিসেম্বর ২০১৩

এবারের বিজয় দিবস বাঙালির কাছে নতুন রূপে ধরা দিয়েছে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির ৩দিন পর এই বিজয় দিবস জাতিকে ভিন্ন মাত্রায় উজ্জীবিত করেছে৷ দিয়েছে নতুন সাহস৷

https://p.dw.com/p/1AaAs
ছবি: DW/M. Mamun

৪২ বছর ধরে জাতি যা চেয়েছে, তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে৷

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে বাঙালি নিধন শুরু করেছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী৷ কিন্তু তার জবাব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা আর মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে৷ ৯ মাসে চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ৷ ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে স্বাধীনতার জন্য৷ কিন্তু এই স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামসসহ স্বাধীনতা বিরোধীরা ব্যাপক গণহত্যা চালিয়েছে৷ হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজের মত মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে৷ আর তাদের বিচারের আওতায় আনতে কয়েক দশক সময় লেগেছে৷ এর মধ্যে তারা রাজনৈতিকভাকেও প্রভাবশালী হয়েছে৷

কিন্তু মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করে রেহাই পাওয়া যায়না৷ তাই ৪২ বছর অপেক্ষা করতে হলেও অন্তত একজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে৷ ফাঁসির দণ্ড নিয়ে কারাগারে আছে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীরা৷ তাই এবারের বিজয় দিবস নতুন আরেক বিজয় নিয়ে এসেছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানালেন বীরাঙ্গনা ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী৷ তিনি বলেন, এখন থেকে আরেক মুক্তিযুদ্ধ শুরু হল৷ আর তা হল যুদ্ধাপরাধীমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যুদ্ধ৷ সব যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ থামবেনা৷ আর এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম৷

তরুণ সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্না বলেন, ‘‘সব যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতি কলঙ্ক মুক্ত হবেনা৷ জানি তারা এখন রাজনৈতিক ভাবে শক্তিশালী৷ তাদের পৃষ্ঠপোষকদের শক্তি আরো বেশি৷ তবুও ভয় পেলে চলবেনা৷ ভয়কে জয় করেই এগিয়ে যেতে হবে৷ কারণ যতদিন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি থাকবে, ততদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ণতা পাবেনা৷'' তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে যারাই সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতি করবে, শেষ বিচারে তাদের করুণ পরিণতি বরণ করতে হবে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, কাদের মোল্লার ফাঁসির পর জামায়াত আবার একাত্তরের ভূমিকায় নেমেছে৷ তারা মানুষ হত্যা করছে৷ করছে সন্ত্রাস৷ তাই তাদের দমনে শুধু সরকার নয়, সামাজিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে৷ গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ৷ একাত্তরে তারা পরাজিত হয়েছে৷ এবার তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে৷

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ৪২ বছর ধরে দেশের মানুষ একটি যুদ্ধাপরাধীমুক্ত বিজয় দিবসের অপেক্ষা করেছে৷ সেই আশা কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে৷ তিনি আশা করেন, এর পরের বিজয় দিবসে সবার না হলেও প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি কার্যকর হবে৷ তিনি বলেন, জামায়াত যে একাত্তর সালের অবস্থান থেকে একটুও সরেনি, তার প্রমাণ তাদের এখনকার নির্মম সহিংসতা৷ তারা দেশে গৃহযুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে৷ তাই তাদের দমন করতে হবে কঠোর ভাবে৷ তাদের দমনে সামরিক বাহিনী নামাতে হবে৷ তিনি অবিলম্বে যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান৷

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের কোনো ভাবেই এই বাংলায় ঠাঁই হবেনা৷ তারা ভেবেছিলেন ভয় দেখিয়ে বিচার বন্ধ করে দেবেন৷ কিন্তু ভয়কে জয় করে অন্তত একজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে বাংলাদেশে৷ বাকিরাও রেহাই পাবেনা৷ তিনি বলেন এই যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় কাজ করছে একটি বড় রাজনৈতিক দল৷ তারা এ নিয়ে কুট রাজনীতি করছে৷ কিন্তু সেই রাজনীতি শেষ পর্যন্ত সফল হবেনা বলে মনে করেন মুনতাসির মামুন৷ এ দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কোনো শক্তি টিকতে পারবেনা৷ ভোটের রাজনীতির সঙ্গে জামায়াতকে রক্ষার অপকৌশল সফল হবেনা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য