উড়ন্ত বিমানের সংঘর্ষ!
সড়ক পথে চলন্ত গাড়ির সংঘর্ষের ঘটনা আমাদের কাছে নতুন কিছু নয়৷ কিন্তু উড়ন্ত বিমানের সংঘর্ষ এবং এর ফলে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঘটনাও যে ঘটে, সেটি হয়তো অনেকেরই জানা নেই৷
৬০০ কিলোমিটার বেগে ধাক্কা
১৯৮৮ সালের ঘটনা৷ ইটালির বিমানবাহিনীর একটি বিমান জার্মানির রামস্টাইন বিমানঘাঁটিতে আরো কয়েকটি বিমানের সাথে রণকৌশল প্রদর্শন করছিল৷ ঠিক সেই মুহূর্তে বিপরীত দিক থেকে ৬০০ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসা আরো পাঁচটি বিমানের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়৷ মুহূর্তের মধ্যেই চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে মাটিতে পড়ে তিনটি বিমান৷
ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বিমানগুলো
মুখোমুখি সংঘর্ষের পর দুর্ঘটনায় কবলিত বিমানগুলোর একটি রানওয়েতে আছড়ে পড়ে৷ এ সময় বিমানটি থেকে নির্গত অগ্নিকুন্ড প্রদর্শনী দেখতে আসা দর্শনার্থীদের দিকে ছুটতে থাকে৷ আরেকটি বিমান বিধ্বস্ত হয় রানওয়ের পাশেই৷ তৃতীয় বিমানটি একটি মেডিকেল হেলিকপ্টার এর উপর আছড়ে পড়ে৷
দর্শনার্থীও নিহত হয়
ভয়াবহ এ বিমান দুর্ঘটনায় তিনজন পাইলট সহ ৭০ জন নিহত হয়৷ আহতের সংখ্যা ছিল ১৫’শ৷ দুর্ঘটনার ফলে সৃষ্ট অগ্নিকুন্ড ও বিমানের ছিটকে আসা ধ্বংসাবশেষের আঘাতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে৷ নিহতদের স্বরণে রামস্টাইন এয়ার বেইজে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ৷ আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণও দেয়া হয়েছে৷
ইটালি দায়ী
দুর্ঘটনা পরবর্তী আইনি বিষয়াদি নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিল না আহত দর্শনার্থীরা৷ ন্যাটোর আইন অনুযায়ী, ইটালির বিমানবাহিনী এ ঘটনার জন্য দায়ী বলে জানানো হয়৷
তদন্তে বিভক্তি
দুর্ঘটনার তদন্তে গঠিত ‘রামস্টাইন তদন্ত কমিটি’ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়৷ ফলে দুটি আলাদা প্রতিবেদন জমা পড়েছিল৷ একটি প্রতিবেদনে বলা হয় দুর্ঘটনাটি এড়ানো সম্ভব ছিল৷ অন্য প্রতিবেদনটি বলেছে, ইটালীয় বৈমানিক অচেতন হয়ে পড়েছিলেন৷
এয়ার শো নিষিদ্ধ
দুর্ঘটনার পর জার্মান সরকার দেশটিতে সবধরণের এয়ার শো নিষিদ্ধ করেছিল৷ তবে জনগণ এয়ার শো দেখতে চায় এবং তাঁদের দেখার অধিকার আছে, দেশটির কিছু রাজনীতিবিদ এমন দাবি তুললে, ১৯৯০ সাল থেকে পুনরায় এয়ার শো চালু করা হয়৷