1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উপনির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কম, কেন্দ্র দখলের অভিযোগ

১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ভোটারের কম উপস্থিতি, কেন্দ্র দখল এবং প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রার্থীর এজেন্টের অনুপস্থিতি ও সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে দিয়ে ছয় আসনের উপনির্বাচনে ভোটে গ্রহণ চলছে।

https://p.dw.com/p/4Mwqh
ফাইল ছবিছবি: bdnews24.com

এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘আশীর্বাদপুষ্ট' উকিল আবদুস সাত্তারের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। পাঁচ দিন আগে তিনি নিখোঁজ হন। ভোটের দিনেও তার হদিস মেলেনি।

এই আসনে সকাল সাড়ে আটটায় উপজেলার ১৩২টি কেন্দ্রের ৮২৬টি বুথে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হলেও সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি তেমন ছিল না। আশুগঞ্জে দুটি কেন্দ্রের দুটি বুথে প্রথম দেড় ঘণ্টায় একটি ভোটও পড়েনি।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ২০-২২টি ভোট পড়েছে।

অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের তিনটি ভোটকেন্দ্রের ১৪টি ভোটকক্ষের গোপন কক্ষে ভোটার ছাড়াও ‘অনাকাঙ্ক্ষিত' ব্যক্তিদের উপস্থিতি দেখা গেছে৷ এসব কক্ষের কোনোটিতেই সাত্তারের এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি।

আওয়ামী লীগ ভোটে অংশ না নিলেও নেতা-কর্মীরা সমর্থন দিচ্ছেন পাঁচবারের এমপি উকিল সাত্তারকে, যিনি এর আগে প্রতিবার ধানের শীষ, অর্থাৎ বিএনপির প্রতীক নিয়ে জিতেছেন।

আসিফের নিখোঁজ-রহস্য

ভোট গ্রহণ শুরু হলেও বিএনপির দলছুট নেতা ও আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট সাত্তারের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের খোঁজ আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেলেনি। আসিফ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

গত শুক্রবার থেকে তিনি নিখোঁজ। প্রায় ৯২ ঘণ্টা পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে আবু আসিফ আহমেদের সন্ধানের জন্য এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীরের কাছে লিখিত আবেদন পাঠান।

তবে নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমানের দাবি, "আসিফ আত্মগোপনে রয়েছেন৷” অন্য্যদিকে আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নেসা মেহেরিন গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আশুগঞ্জে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের বলেন, "আমাদের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ আমাদের বাড়িতে এসে অকারণে তল্লাশি চালাচ্ছে, হয়রানি করছে।"

বগুড়া

বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে নৌকার কর্মী–সমর্থকদের বিরুদ্ধে ১৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৫টি দখলের অভিযোগ এনেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল মান্নান আকন্দ।

তার অভিযোগ, ১৩৫টি কেন্দ্র দখল করে তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। নৌকার লোকজন গোপন বুথে ঢুকে নিজেরাই ইভিএম চেপে ভোট নিচ্ছেন। অনেক কেন্দ্রে নৌকার সমর্থক ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনেছেন আপেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদার রহমানও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, "কমপক্ষে ৩০টি কেন্দ্র থেকে আপেল প্রতীকের নির্বাচনি এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। নৌকার সমর্থক ছাড়া কোনো ভোটারকে কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।"

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম নিজের কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর সংবাদিকদের বলেন, "বগুড়া-৬ আসনে আগে থেকেই গোলযোগের আশঙ্কা করেছিলাম, সেটাই সত্যি হয়েছে। আমার নির্বাচনি এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে বগুড়া-৪ আসনে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। এভাবে সুষ্ঠু ভোট হলে এই আসনে আমিই বিজয়ী হবো।"

কোন কোন কেন্দ্র থেকে নির্বাচনি এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, "এখন পর্যন্ত লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের একটি কেন্দ্র থেকে নির্বাচনী এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। অন্য কেন্দ্রের নাম পরে জানাবো।" কারা এজেন্টদের বের করে দিয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের নাম-পরিচয় জানানো হবে।

চাপাইনবাবগঞ্জ

অন্যদিকে, চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ উপনির্বাচনে ভোট শুরুর আগে আওয়ামী লীগ ও তার প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দাওয়া-পাল্টা দাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ভোটকেন্দ্রের বাইরে থেকে একটি হাতবোমা উদ্ধার করেছে র‌্যাব। বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের নবাবগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে হাতবোমাটি উদ্ধার করা হয় জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থানার ওসি একে এম আলমগীর জাহান।

চাপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনেরও ভোট গ্রহন চলছে, তবে সেখানে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

ঠাকুরগাঁও

সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল, তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বেড়েছে। এখানে ভোট গ্রহণের গতি অনেক ধীর। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ইভিএম মেশিনে আঙুলের ছাপ মেলাতেই বেশি সময় চলে যাচ্ছে। গোপন কক্ষে ইভিএমে ভোট দিতে ভোটাররা সময় বেশি নিচ্ছেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ে আঙুলের ছাপ মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তারা। কাউকে কাউকে হাত ধুয়ে আসতে বলছেন। হাতের ছাপ না মেলায় তাঁদের অনেকেই গোমড়া মুখ নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

এই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ নম্বর বুথে ৩৬৫টি ভোট আছে। এই বুথের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, "বয়স্কদের অনেকেরই আঙুলের ছাপ মিলছে না। তাঁদের হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে দিচ্ছি। ঝাড়বাড়ি গোগর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের কিছুতেই ছাপ মিলছিল না। তাঁকে তিনবার হাত ধুতে পাঠিয়ে শেষে ছাপ মিলেছে।"

বিএনপির এমপিদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ছয়টি সংসদীয় আসনে নতুন জনপ্রতিনিধি বেছে ভোট গ্রহন হচ্ছে। সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হচ্ছে। তবে এবার সিসি ক্যামেরা রাখা হয়নি।

একেএ/এসিবি (প্রথম আলো, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, দ্য ডেইলি স্টার)