উদ্বাস্তুরা যখন ছবি আঁকেন
কেনিয়ার কাকুম্বা আর দাবাব রিফিউজি ক্যাম্পের শিল্পীরা রাজধানী নাইরোবিতে একটি প্রদর্শনী করেছেন৷ তিনদিনব্যাপী প্রদর্শনীর উপজীব্য হলো, উদ্বাস্তুদের স্মৃতি ও ব্যথা-বেদনা৷
পালানো ছাড়া পথ ছিল না
রাস্তার ধারে দুই নারী, সাথে বাড়ি থেকে আনা একটি ছোট্ট কুকুর৷ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে যুদ্ধ ও সংঘাতের মুখে পড়ে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন এঁরা৷ অন্যান্য উদ্বাস্তু শিল্পীদের মতো আলফা মকাঙ্গি মুকাঙ্গালা-র চিত্রকলার ভিত্তিও তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা৷
ধর্ষণ একটি অস্ত্র
শিল্পী স্টেফেনাল টাকিই দক্ষিণ সুদানের নুয়ের উপজাতির মানুষ৷ আফ্রিকার তরুণতম রাষ্ট্রটিতে যে সংঘাত চলেছে, তার নির্মমতা কল্পনাকে ছাড়িয়ে গেছে৷ টাকিই কাকুমা উদ্বাস্তু শিবিরে আছেন ১৯৯২ সাল যাবৎ৷ তাঁর ছবিতে যুদ্ধের বিভীষিকা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায় – সৈন্যরা কিভাবে ধর্ষণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে৷
উদ্বাস্তু শিবিরে যে সব শিল্পীর বাস
৩৩ বছর বয়সি খাদিজা হুসেন জমা ছয় সন্তানের জননী৷ কাকুমা রেফিউজি ক্যাম্পে আছেন গত ২৪ বছর ধরে৷ এই সোমালি তরুণীও অন্যান্য মহিলা উদ্বাস্তুদের মতো ছবি আঁকায় স্বান্তনা খুঁজে পেয়েছেন৷ নাইরোবির প্রদর্শনীতে নিজেদের আঁকা ছবি দেখাচ্ছেন সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, ইরিট্রিয়া, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি ও কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র থেকে আসা ৬০ জন শিল্পী, ইউএনএইচসিআর-এর আমন্ত্রণে৷
সংঘাতের মাঝখানে বেঁচে থাকা
কঙ্গোর আলফা মকাঙ্গি মুকাঙ্গালা গ্রামীণ জীবনের শান্তিপূর্ণ দিকগুলো নিয়েও ছবি আঁকেন – এখানে যেমন গ্রামবাসীরা সন্ধ্যায় ঢোলকের তালে তালে নাচছেন৷ কিন্তু মুকাঙ্গালার অধিকাংশ ছবিতে সেই আদিম ভীতির ছাপ, সারা দেশকে যা ছেয়ে রেখেছে: মানুষে মানুষ মারছে, একদিকে সরকারি সেনা, অন্যদিকে বিদ্রোহী ও বিরোধী দলগুলির সমর্থকদের মধ্যে যুদ্ধ চলেছে৷
গাঁ উজাড়
আলফা মকাঙ্গি মুকাঙ্গালা-র আরো একটি ছবি: কঙ্গোর কোনো একটি গ্রামের এক শান্তিপূর্ণ দৃশ্য৷ গ্রামটি যেন পরিত্যক্ত, জনশূন্য৷ সবাই যেন গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন৷ সত্যিই তো: ২০১৪ সাল যাবৎ কঙ্গো থেকে পলাতক মানুষদের সংখ্যা সাতাশ লাখ, বলছে ইউএনএইচসিআর৷
সুন্দর জীবনের স্বপ্ন
এক মহিলা বাচ্চাকে বুকে বেঁধে পানি নিয়ে যাচ্ছেন গাঁয়ের পথে৷ ইথিওপিয়ার শিল্পী ত্রিকু ফেকেলে বলেন, তিনি নাকি বহু সময় কাটান শান্তির জন্য প্রার্থনায়৷ ছবিতে যে গ্রামটিকে দেখা যাচ্ছে, তা ত্রিকু-র নিজের গ্রাম, দক্ষিণ ইথিওপিয়ায় অবস্থিত৷ ত্রিকু এই গ্রাম ছাড়েন এক দশকের বেশি আগে৷