1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তরসূরি খুঁজতে গিয়ে মিলল পূর্বসূরি!‌

১৪ আগস্ট ২০১৯

প্রায় আড়াই মাস ডামাডোলের পর কংগ্রেসের শীর্ষপদে আবার বসেছেন সোনিয়া গান্ধী৷ ১৯ বছর সভানেত্রী থাকার পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন পুত্র রাহুল গান্ধী৷ ১৯ মাস পর ঘুরেফিরে ভরসা সেই সোনিয়া৷‌

https://p.dw.com/p/3NtLg
ছবি: picture-alliance/dpa/Raveendran

ছেলের উত্তরসূরি খুঁজতে গিয়ে নিরূপায় হয়ে মা-‌কেই দল পরিচালনার দায়িত্বে ফিরিয়ে এনেছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস৷ নির্বাচনি ভরাডুবির দায়ভার কাঁধে নিয়ে রাহুল গান্ধী কংগ্রেস সভাপতির পদ ছাড়বেন বলে ধনুক ভাঙা পণ করেছিলেন৷ তাঁর গোঁ-‌এর কাছে হার মেনেছে তাবড় নেতা-‌নেত্রীর আবদার৷ শেষমেশ পদ থেকে সরেও দাঁড়ালেন রাহুল৷ কিন্তু, গান্ধী পরিবারের বাইরে বেরোতে পারল না ৩৪ বছরের পুরোনো, ভারতের প্রাচীনতম দল কংগ্রেস৷

রাহুলের উত্তরসূরি খুঁজতে দিল্লিতে এআইসিসি দপ্তরের তুমুল ব্যস্ততা শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি৷ দিনভর বৈঠক করে ‘‌সব পথে এসে মিলে গেল শেষে.‌.‌.‌.‌'‌ ১০, জনপথে সোনিয়ার আবাসনে৷ তিনিই হলেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী৷

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন গান্ধী পরিবারের বাইরে পা-‌রাখতে পারে না কংগ্রেস?‌

সুজিত রায়

ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুজিত রায় বললেন,

‘‌‘কংগ্রেস ভারতের স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও নেহরু ও গান্ধী পরিবারের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি৷ দলে তেমন নেতা তৈরি হয়নি৷‌ অতীতে গান্ধী পরিবারের বাইরে সীতারাম কেশরী কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ কিন্তু তাঁকে চরম অপমান করে, জোরজবরদস্তি করে সোনিয়াকে সভানেত্রী পদে বসানো হয়েছিল৷'‌'‌

 তাঁর মতে, ‘‌‘‌ভারতীয় জনতা পার্টি যখন বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ‘‌লম্বা রেসের ঘোড়া' সাব্যস্ত হচ্ছে, এই রকম এক পরিস্থিতিতে‌ পরিবারতন্ত্রে আটকে থেকে আসলে দলেরই সর্বনাশ করছে কংগ্রেস৷ এর পেছনে রয়েছে গান্ধী পরিবারের তাঁবেদার গোষ্ঠী৷ তাঁরা জানেন, গান্ধী পরিবার ছাড়া গতি নেই৷'‌'‌

প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণকারী ‘‌কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি'‌র বৈঠকে নতুন সভাপতি নির্বাচনের লক্ষ্যে ৫৩জন বড় মাপের নেতাকে ৫টি অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল৷ পূর্ব, উত্তর, উত্তর-‌পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণের দলে ভাগ হয়ে দীর্ঘ বৈঠক চললেও নতুন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ অতএব বল সোনিয়ার কোর্টে গিয়ে ঠেকল৷

শুভঙ্কর সরকার

কংগ্রেস নেতারা অবশ্য মনে করছেন, অতীতে ইন্দিরা গান্ধী কংগ্রেসকে যেমন মা-‌এর মতো আগলে রেখেছিলেন, সেই গুন রয়েছে সোনিয়ার মধ্যেও৷ তিনিই ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ‘‌ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স'‌ বা ইউপিএ-‌এর মূল সূত্রধর ছিলেন৷ সরকারে অংশ না নিয়েও আড়াল থেকে দেশকে আলোর দিশা দেখাতে সফল হয়েছিলেন৷ তাই বর্তমান সংকটকালে সোনিয়াকেই বড্ড প্রয়োজন কংগ্রেসের৷

গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকারের মতে, ‘‌‘‌যতই সমালোচনা হোক, দেশের স্বার্থে গান্ধী পরিবারের ত্যাগের কারো সঙ্গে তুলনা চলে না৷ আততায়ীদের হাতে শাশুড়ি ইন্দিরা, স্বামী রাজীবের মৃত্যুর পর বাধ্য হয়ে তিনি রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন৷ কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী পদে বসেননি৷ ছেলে রাহুল, মেয়ে প্রিয়াঙ্কাকে তড়িঘড়ি রাজনীতিতে টেনে আনেননি৷ তাঁদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলেছেন৷ মনে রাখতে হবে, অতীতে সোনিয়া গভীর সংকটে কংগ্রেসের হাল ধরেছিলেন৷ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল দেশের বহু আঞ্চলিক দল৷ উনি সবার জন্য যোগাযোগের সেতু৷'‌'‌

এবার দেশের সাধারণ নির্বাচন হতাশ করেছে কংগ্রেসকে৷ ৫৪৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ৫২টি আসন পেয়েছে তারা, যার পর গত ২৫ মে সিডাব্লিউসি-‌র পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন রাহুল৷ তা মানতে চায়নি দল৷ এরপর গতমাসে ৪ পাতার পদত্যাগ পত্র জনসমক্ষে আনেন রাহুলই।৷ দায়িত্ব নিয়ে কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন সোনিয়া৷ প্রথমত, দলে ‘‌এক ব্যক্তি এক পদ'‌ নীতি চালু করা৷ এবং দলের নিয়মানুবর্তিতা পুনঃস্থাপন করা৷ এজন্য বৈঠকে নেতাদের মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে চলেছেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য