1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তরপ্রদেশে কৃষক বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধুমার, মৃত আট

৪ অক্টোবর ২০২১

রোববার উত্তরপ্রদেশে লখিমপুর খেরিতে কৃষক বিক্ষোভকে ঘিরে সহিংসতা। চার কৃষক সহ মৃত আট।

https://p.dw.com/p/41DYy
প্রতীকী ছবি। ছবি: Sunil Ghosh/Hindustan Times/imago images

ভয়ংকর ঘটনা ঘটল উত্তরপ্রদেশে। লখিমপুর খেরিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র এবং রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে সমবেত হয়েছিলেন কৃষকরা। সেখানে সহিংসতায় আটজন মারা গেছেন।

ঘটনা ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য কৃষকনেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। কৃষক নেতা দর্শন পালের দাবি, ''কৃষকরা তাদের ঘেরাও কর্মসূচি শেষ করে যখন ফিরে যাচ্ছিলেন, তখন তিনটি গাড়ি আসে। কৃষকদের ধাক্কা মারে। একজনের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়। অন্য একজনের হাসপাতালে।'' তার দাবি, একটি গাড়ি চালাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে।

আর অজয় মিশ্রের দাবি, তার ছেলে ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। তিনি কেশব প্রসাদ মৌর্যের অনুষ্ঠানমঞ্চে ছিলেন। তার ছেলে ওখানে থাকলে বেঁচে ফিরতে পারতেন না। মন্ত্রী বলেছেন, ''কৃষকরাই লাঠি, তরোয়াল নিয়ে গাড়ি আক্রমণ করে। পাথর মারে। এর ফলে একটি গাড়ি উল্টে যায়। চালক ও তিনজন বিজেপি কর্মী মারা যান। গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় কৃষকরা।''

মন্ত্রীর বক্তব্য

সংবাদসংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র বলেছেন, ''কৃষকদের আক্রমণে একটি গাড়ি উল্টে যায়। দুই জন কৃষক তার তলায় চাপা পড়ে মারা যান। আর গাড়ির চালক ও তিন বিজেপি কর্মীকে কৃষকরা পিটিয়ে মেরেছে।''

তার দাবি, দলের কর্মীরা তাকে অস্থায়ী হেলিপ্যাডে স্বাগত জানাতে এসেছিলেন। পুরো ঘটনার ভিডিও তার কাছে আছে বলে তিনি দাবি করেছেন।

কৃষক ইউনিয়নের দাবি

কৃষক ইউনিয়নগুলির তরফে জানানো হয়েছে, একটি গাড়ি এসে ইচ্ছাকৃতভাবে কৃষকদের ধাক্কা মেরেছে। তাতেই চারজন কৃষক মারা গেছেন। সংযুক্ত কৃষক মোর্চার নেতা তেজিন্দর ভিরক সহ সাতজন আহত। তেজিন্দরের আঘাত গুরুতর।

কৃষক ইউনিয়নের দাবি, গত মাসে অজয় মিশ্র বলেছিলেন, ১০-১৫ জন কৃষক আন্দোলন করছেন। তাদের সোজা পথে আনতে দুই মিনিট সময় লাগবে। মন্ত্রীর এই কথায় কৃষকরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। তাই তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন।

রাতেই উত্তরপ্রদেশের আন্দোলনকারী কৃষক ইউনিয়নের নেতারা জরুরি বৈঠকে বসেন।

রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ

গোটা লখিমপুর খেরিতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়ছে। কাউকে ঘটনাস্থলে যেতে দেয়া হচ্ছে না। পুলিশ এখনো পর্যন্ত মন্ত্রীর ছেলে সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। বিস্তারিত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যেতে পারলেন না প্রিয়ঙ্কা

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী রোববার রাতেই লখিমপুর খিরিতে যেতে চান। কিন্তু ভোররাতে তাকে সীতাপুরে আটক করা হয়। তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার উত্তপ্ত বাদানুবাদ হয়। প্রিয়ঙ্কা তাদের বলেন, ''আমি অত গুরুত্বপূর্ণ নই। আপনারা যাদের মেরেছেন, তারা গুরুত্বপূর্ণ। আগে ওয়ারেন্ট দেখান। বলুন, কোন আইনে আমাকে আটকেছেন। আর আমার গায়ে হাত দেবেন না।''

তিনি বারবার বলতে থাকেন, ওয়ারেন্ট না থাকলে তিনি একচুলও নড়বেন না। তিনি বলেন, ''যদি জোর করে পুলিশের গাড়িতে ঢোকান, তাহলে আমি অপহরণের মামলা করব। আর নির্দিষ্ট পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে করব।''

এরপর ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। প্রিয়ঙ্কার পাশে দাঁড়ানো কংগ্রেস নেতা দীপিন্দর সিং হুডাকে ধাক্কা মারা হয় বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। তারপর প্রিয়ঙ্কাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

মমতার দল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পাঁচ সদস্যের তৃণমূল প্রতিনিধিদল লখিমপুর খেরিতে যাচ্ছেন।

সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও সোমবার সেখানে যাবেন বলেছেন। দলিত নেতা চন্দ্রশেখর আজদের ভীম আর্মির কর্মীরাও সেখানে যাবেন।

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এনডিটিভি)