ঈশ্বর রাঙানো প্রদর্শনী
প্রাচীন ঐশ্বরিক মূর্তিকে এতদিন ধরে সাদা দেখা গেলেও এখন তাদের রঙিন করে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
ঈশ্বরের গায়ে রঙ আনলো যে প্রদর্শনী
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের লিবিগহাউস জাদুঘরে একটি নতুন প্রদর্শনী শুরু হয়েছে৷ ‘গডস ইন কালার - গোল্ডেন এডিশন’ নামের এই প্রদর্শনীতে রয়েছে একশরও বেশি মূর্তি, যা এতদিন পরিচিত ছিল সাদা রঙেই৷ পলিক্রমাটিক পরিবর্তন প্রযুক্তির সাহায্যে সেই মূর্তিগুলিকে তাদের আদি রঙে রাঙানো হয়েছে৷ এর মাধ্যমে দর্শকরা পরিচিত মূর্তিদের নতুনভাবে উপভোগ করতে পারবেন৷
কী কী আছে সেই প্রদর্শনীতে?
একশরও বেশি মূর্তির পাশাপাশি সেই প্রদর্শনীতে রয়েছে ৬০টি পুনর্গঠিত মূর্তি৷ ২০০৩ সালে প্রথম মিউনিখে প্রদর্মিত হবার পর এই একই প্রদর্শনী নিয়ে ব্রিংকমান ইতিমধ্যে ঘুরেছেন ৩০টি শহর৷ আগামীতে এই প্রদর্শনী যাবে নেপলস, নিউ ইয়র্ক, সিডনিসহ আরো বহু জায়গায়৷
রেনেসাঁ থেকেই সাদা মূর্তির চল
জাদুঘরের কর্মী ভিনসেনজ ব্রিংকমান জানান যে রঙহীন, সাদা মূর্তির চল রয়েছে রেনেসাঁর সময় থেকেই৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রাচীন রোমে যখন থেকে এই মূর্তি মানুষ খুঁজে পেতে শুরু করে, তখনই তারা তাদের রঙ হারিয়ে ফেলেছে৷ তখন কেউ বুঝতে পারেনি যে তাদের মূল রঙ আসলে সাদা নয়৷ রঙহীন, সাদা স্থাপত্যরীতিকে তখন ভাবা হয়েছিল আধুনিকতার প্রমাণ হিসাবে৷ কিন্তু তাতে করে এই মূর্তিগুলি তাদের মূল অর্থ ও মানবিক চরিত্র হারিয়েছে৷’’
৪০ বছরের গবেষণার ফল
গ্রিসের এথেন্সে ৪০ বছর আগে গ্রিক ও রোমান সভ্যতার মূর্তির রঙ বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন ব্রিংকমান৷ এই প্রদর্শনী সেই দীর্ঘ গবেষণারই ফলাফল৷
সাদা রঙের ভ্রান্ত ধারণা
অষ্টাদশ শতাব্দীতে পম্পেই শহরেই প্রথম ভুল প্রমাণিত হয় সাদা মূর্তির ধারণা৷ ৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের ফলে রঙিন মূর্তিগুলির রঙ অক্ষত থেকে যায়৷ পরে, অষ্টাদশ শতাব্দীতে শুরু হওয়া গবেষণা সেই মূর্তিগুলি উদ্ধার করে সাদা রঙের তত্ত্বকে ভুল প্রমাণিত করে৷ এরপর, উনিশ শতকে গ্রিসের মূর্তি বিষয়েও একই তথ্য জানা যায়৷ ফার্সিদের দখলে থাকাকালীন সময়ে সেখানের অনেক মূর্তির মূল রঙ নষ্ট করা হয়, জানান ব্রিংকমান৷
রঙের সাথে মূর্তি হারাচ্ছে যৌন আবেদনও
বিশ শতকে ইউরোপে প্রচলিত শিল্পচর্চার সাথেও খাপ খায়নি রঙিন মূর্তির ইতিহাস৷ তাই চাপা থেকেছে এই ধারা৷ ব্রিংকমান জানান, ‘‘রঙ সরিয়ে দিলে কোনো স্থাপত্য কম মানবিক হয়ে পড়ে৷ যোগ হয় ঐশ্বরিক উপাদান৷ এভাবেই এই মূর্তিগুলির মানবিকত্ব কেড়ে নিয়ে তার যৌন আবেদন ইচ্ছে করেই সরিয়ে রাখা হয়েছে৷’’