ইয়োহানেস কেপলার: আধুনিক মহাকাশ গবেষণার পথপ্রদর্শক
গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইয়োহানেস কেপলারের জন্ম সাড়ে চারশো বছর আগে৷ বলা হয়ে থাকে, আধুনিক মহাকাশ গবেষণার ভিত রচিত হয়েছে তার হাত ধরে৷ কেপলার সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে ছবিঘরে....
ভুর্টেমব্যার্গ থেকে মহাকাশে
ইয়োহানেস কেপলার ১৫৭১ সালে জার্মানির ভুর্টেমব্যার্গের ভাইল ডেয়ার স্টাটে জন্মগ্রহণ করেন৷ দ্রারিদ্র্য আর অসুস্থতায় কেটেছে তার শৈশব৷ কিন্তু স্কুলজীবন থেকেই তিনি পড়াশোনায় মনযোগী ছিলেন৷ শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে জায়গা ভর্তি হন ইউনিভার্সিটি অব ট্যুবিঙেনে৷ সেখানেই জ্যোতির্বিজ্ঞানী কোপার্নিকাসের কাজ নিয়ে অধ্যয়ন করেন তিনি৷ কয়েকশো বছর পর কেপলারের নিজের নামেই হয়েছে গ্রহ আর মহাকাশযানের নামকরণ৷
পথপ্রদর্শক
তিনি একাধারে একজন গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জ্যোতিষি৷ ১৭ শতকে ইউরোপ বিজ্ঞান চর্চার বিপ্লবে তার ভূমিকা অসামান্য৷ গ্রহীয় গতিসূত্রের জন্য বিখ্যাত এই জ্যোতির্বিজ্ঞানী তার কাজ দিয়ে ভবিষ্যৎ জ্ঞান চর্চার পথ উন্মোচন করেন৷ তার আবিষ্কারের উপর দাঁড়িয়ে আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম পুরোধা নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রও৷
মায়ের গ্রেপ্তার
কেপলার এমন এক সময় জন্ম নেন যখন তার চারপাশের সমাজ নানা সংঘাত, রোগ আর জাদুবিশ্বাসে জর্জরিত ছিল৷ ১৬২০ সালের আগস্টে তার মা কাথেরিনা গুল্ডেনমানকে জাদুচর্চার অভিযোগে গেপ্তার করা হয়৷ পরে আইনজীবীদের সাথে কেপলার নিজেও যুক্তি উপস্থাপন করে তার মাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সমর্থ হন৷ ১৬২১ সালের অক্টোবরে তিনি মুক্ত হন৷
গ্রহের গতি
গ্রহের গতির তিনটি সূত্র দেন ইয়োহানেস কেপলার৷ মহাবিশ্ব ও মানুষের অস্তিত্ব নিয়ে নতুন চিন্তার খোরাক তুলে দেন তিনি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে৷ তার উপর ভিত্তি করেই ১৬৮৪-৮৫ সালে মহাকর্ষ তত্ত্ব দেন বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন৷
কেপলার মহাকাশযান
কেপলারের অন্যতম সৃষ্টি ‘অ্যাস্ট্রোনোমিয়া নোভা’ গ্রন্থের চারশো বছর পূর্তি হয় ২০০৯ সালে৷ সে বছর ইউরোপীয়ন স্পেইস এজেন্সি মহাকাশের একটি স্বয়ংক্রিয় স্থানান্তর যানের নামকরণ করেন তার নামে (এটিভি-২ ইয়োহানেস কেপলার)৷ আধুনিক যুগের মহাকাশ গবেষণার পথ প্রদর্শক হিসেবে কেপলারের প্রতি এই সম্মাননা জানান তারা৷
কেপলার-১৬৪৯৬
১৬৩০ সালে নভেম্বরে জ্বর আক্রান্ত হন এই বিজ্ঞানী৷ সে বছরের ১৫ নভেম্বর ৫৯ বছর বয়সে বর্তমান জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের রেগেন্সবুর্গে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন৷ রোমান শাসনামলে ৩০ বছরব্যাপী চলা যুদ্ধে তার সমাধিটিও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়৷ তবে মহাজাগতিক গবেষণা আর মহাবিশ্বে নতনু গ্রহের সন্ধানে তিনি আজো পথ প্রদর্শক হয়ে আছেন৷ পৃথিবী থেকে ৩০১ আলোকবর্ষ দূরে কেপলার-১৬৪৯৬ (ছবিতে) তেমনই একটি৷